ভাবসম্প্রসারণ: জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো (২টি)

জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো ভাবসম্প্রসারণ – ১

মূলভাব : মানুষের প্রকৃত কৌলিণ্য তার বংশ মর্যাদার ওপর নির্ভর করে না, বরং এটি নির্ভর করে তার সৎকর্মের ওপর।

সম্প্রসারিত ভাব : মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব বিচার জন্মে নয়, কার্যে। উচ্চ বংশ বা সদ্বংশজাত বলে একটি তৃপ্তি থাকতে পারে, পাওয়া যেতে পারে বৃহত্তর সুযোগ; কিন্তু ঐ জন্মগত তৃপ্তি খ্যাতি বা সুযোগ-সুবিধা সবই হয় নিরর্থক, যদি স্বীয় কর্মবলে মানুষ প্রতিষ্ঠা অর্জন করতে না পারে । 

সংসারে এমন দৃষ্টান্তের অভাব নেই, যে উচ্চ বংশে জন্মগ্রহণ করেও বংশের হয়েছে কলঙ্ক । বিদ্বান ও বিদ্যোৎসাহী পিতার একটি সন্তান ও বিদ্যার্জনে মনোযোগী হয় নি; ত্যাগী ও দেশ হিব্রত জনকের নাম কলঙ্কিত করে উচ্ছৃঙ্খল উন্মার্গগামী হয়েছে পুত্র, এমন দৃষ্টান্ত কতই না পাওয়া যায় । 

পক্ষান্তরে এমন অনেক কৃতিপুরুষ ও মহাপুরুষ আছেন, যাঁদের জন্ম বৃত্তান্ত অন্বেষণে উল্লেখযোগ্য কিছুই পাওয়া যায় না। অথবা হয়তো কোন নীচতা, হীনতা বা অগৌরবের স্পর্শই পাওয়া যায় । ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হযরত বিলাল (রা) ছিলেন কালো কুৎসিত কৃতদাস। কিন্তু আপন কর্মের দ্বারা তিনি ইসলামের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন । এরূপ আরো অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে ।

মন্তব্য : জীবনের যথার্থ সার্থকতার পরিচয় প্রকাশ পায় তার কর্মের মধ্যে, আভিজাত্য বা বংশ গৌরবের মধ্যে নয় । যেমন, কবি বলেন—

নহে আশরাফ যার আছে শুধু বংশ পরিচয়,

সেই আশরাফ জীবন যাহার পুণ্য কর্মময় ।’

আরও পড়ুন :- বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে ভাব সম্প্রসারণ : ৩টি

জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো ভাবসম্প্রসারণ – ২

মূলভাব : জন্ম যে কোনো ভাবে হোক, যে কোনো স্থানে হোক সেটা বড় কথা নয়, আসল কথা হলো তার কর্ম।

সম্প্রসারিত ভাব : মানুষের প্রধান পরিচয় তার কর্মে। অনেক মানুষ বংশের গৌরব করে থাকে এবং বংশের দোহাই দিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চায়। কিন্তু বংশের জোরে সাময়িকভাবে কিছুটা সম্মান লাভ করলেও তাতে তার আজীবন চলে না। চিরস্থায়ী সম্মান পেতে হলে তাকে বিদ্বান ও সদাচারী হতে হয়। 

বড় বংশে জন্মগ্রহণ করেও কেউ যদি মূর্খ ও অসদাচারী হয়, তাহলে লোকে তাকে কখনো শ্রদ্ধা করে না বরং বংশের কুলাঙ্গার বলে তাকে ভর্ৎসনা করে। অপরদিকে, নিচু কুলে জন্মগ্রহণ করেও কেউ যদি চরিত্র বলে বলীয়ান হয় ও সৎকর্মে নিজেকে নিয়োজিত রাখে, তাহলে সবাই তাকে শ্রদ্ধা করে এবং সমাজ তাকে গৌরবজনক আসন প্রদান করে। তাই বংশ গৌরবের চেয়ে কর্মগৌরবই বড়। জন্ম মানুষের ইচ্ছাধীন নয়, কিন্তু কর্ম মানুষের ইচ্ছাধীন। 

বংশ মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের মাপমাঠি নয়। সৎ, মহৎ ও প্রসিদ্ধ এমন অনেক লোক আছেন যাঁদের জন্ম বড় বংশে হয়নি। কিন্তু তাঁরা তাঁদের সৎ ও মহৎকর্ম দিয়ে গৌরবজনক পদে অধিষ্ঠিত হয়ে পৃথিবীতে সুখ্যাতি লাভ করেছেন। প্রকৃতপক্ষে মানুষ তার কর্মের মাধ্যমে তার যোগ্যতার প্রকাশ ঘটায়। কর্মের গুণেই মানুষ পৃথিবীতে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে থাকে।

আমার মূল লক্ষ্য একটাই (Sikkhagar-শিক্ষাগার) ওয়েবসাইটের হাত ধরে “শিক্ষা হবে উন্মুক্ত ও বাণিজ্যমুক্ত”। এই প্লাটফর্মে থাকবে একাডেমিক প্রস্তুতি, ভর্তি প্রস্তুতি, চাকরি প্রস্তুতি, স্পেশাল স্কিল এবং ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানাবিধ বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ।

Leave a Comment

Advertisement Advertisement
error: Content is protected !!