মহীয়সী বেগম রোকেয়া – রচনা Class 3, 4, 5

সূচনা : 

বেগম রোকেয়া ছিলেন মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত। তৎকালীন সমাজে মেয়েদের অবরোধ প্রথার বিরুদ্ধে তিনিই প্রথম লেখনী ধারণ করেন। তিনিই প্রথম মেয়েদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছিলেন। এজন্যই তাকে নারী জাগরণের অগ্রদূত বলা হয়। 

জন্ম : 

বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

শৈশব : 

বেগম রোকেয়ার শৈশব কেটেছে চার দেয়ালের মধ্যে। ঘরের বাইরে তো দূরের কথা, কোনো আত্মীয়-স্বজনের সামনেও যাওয়া নিষেধ ছিল। তাই বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন এলে কখনো চিলেকোঠায়, কখনো সিঁড়ির নিচে, কখনো দরজার আড়ালে, তক্তপোষের নিচে এমনকি রান্নাঘরের ঝাঁপের আড়ালেও লুকিয়ে থাকতে হতো তাকে।  

শিক্ষা : 

তখনকার দিনে অভিভাবকরা মুসলমান মেয়েদের স্কুলে যেতে দিতেন না। তাই অন্য মুসলমান মেয়েদের মতো তাঁরও স্কুলে যাবার অনুমতি ছিল না। কিন্তু বেগম রোকেয়া দমবার পাত্রী ছিলেন না। পড়াশোনার প্রতি ছিল তার অদম্য আগ্রহ। বাড়িতে তিনি কোরান পড়া ও উর্দু শিখেছিলেন। বাড়িতে সবার অলক্ষ্যে বড় বোন করিমুন্নেসার কাছে বাংলা শিখতেন। গভীর রাতে বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়লে বড় ভাই ইব্রাহীম সাবের তাঁকে ইংরেজি এবং অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষা দিতেন।

আরও পড়ুন :- রচনা : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান – ২০০ শব্দের

বিবাহ : 

বেগম রোকেয়ার বিয়ে হয়েছিল ষোল বছর বয়সে। বিয়ের পর স্বামীর নামানুসারে তার নাম হয়েছিল বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ।

নারী জাগরণে বেগম রোকেয়ার অবদান : 

বেগম রোকেয়া ছিলেন নারী জাগরণের পথিকৃৎ। তিনিই প্রথম মেয়েদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছিলেন। তিনি বুঝেছিলেন, লেখাপড়া ছাড়া নারীদের উন্নতি সম্ভব নয়। তাই স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর রেখে যাওয়া অর্থ দিয়ে তিনি ১৯১১ সালে কলকাতায় স্বামীর নামে মেয়েদের জন্য একটা প্রাথমিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুর দিকে এই স্কুলের ছাত্রী ছিল মাত্র পাঁচ জন। 

ধীরে ধীরে ছাত্রীসংখ্যা বাড়তে থাকে। বর্তমানে এই স্কুলটি ‘সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ’ নামে পরিচিত। তিনি নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিষ্ঠা করেন ‘আঞ্জুমান খাওয়াতিনে ইসলাম’ বা মুসলিম মহিলা সমিতি। লেখনীর মাধ্যমে তিনি তৎকালীন সমাজে নারীদের দুর্দশাগ্রস্ত বন্দি জীবনের চিত্র তুলে ধরেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো মতিচুর, অবরোধবাসিনী, সুলতানার স্বপ্ন (Sultana’s Dream) ইত্যাদি ।

উপসংহার : 

বেগম রোকেয়া ১৯৩২ সালের ডিসেম্বরে মৃত্যুবরণ করেন। নারী জাগরণের অগ্রদূত হিসেবে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন ।

Advertisement Advertisement

আমার মূল লক্ষ্য একটাই (Sikkhagar-শিক্ষাগার) ওয়েবসাইটের হাত ধরে “শিক্ষা হবে উন্মুক্ত ও বাণিজ্যমুক্ত”। এই প্লাটফর্মে থাকবে একাডেমিক প্রস্তুতি, ভর্তি প্রস্তুতি, চাকরি প্রস্তুতি, স্পেশাল স্কিল এবং ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানাবিধ বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ।

Leave a Comment

Advertisement Advertisement
error: Content is protected !!