আমাদের মুক্তিযুদ্ধ / বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা - ১
ভূমিকা :
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়েই বাঙালি জাতি অর্জন করে প্রাণপ্রিয় স্বাধীনতা
পটভূমি :
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের মধ্য দিয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হয়। এর প্রতিবাদে একে একে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলন ও ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান হয় ।
স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা :
১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের আওয়ামী লীগ জয়ী হলেও পাকিস্তানিরা তাদের হাতে ক্ষমতা দিতে অস্বীকার করে। তখন ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ের ডাক দেন। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালির ওপর নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায়।
মধ্যরাতের পর পাকিস্তানি সেনাদের হাতে গ্রেফতার হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তবে গ্রেফতারের আগেই ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন । শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।
আরও পড়ুন :- একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা - ২০০ শব্দ [ক্লাস ৩, ৪ এবং ৫]
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ :
২৫ মার্চ থেকে পাকিস্তানি হানাদাররা সারা বাংলাদেশে হত্যা, নারী নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ চালাতে থাকে। তাদের রুখে দাঁড়াতে গঠিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার ও মুক্তিবাহিনী। এ সরকারের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করতে থাকে।
প্রতিবেশী ভারত তাদের সহায়তা দেয় । মুক্তিবাহিনী ও ভারতের মিত্রবাহিনীর আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনী ক্রমে কোণঠাসা হয়ে পড়ে। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তারা আত্মসমর্পণ করে।
বিজয় লাভ :
১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় অর্জন করি। বাঙালি পায় নিজের স্বাধীন দেশ। তবে এজন্য ত্রিশ লক্ষ মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে।
উপসংহার:
মুক্তিযুদ্ধের ফলে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। নিজেকে নিজের মতো করে বিকশিত করার সুযোগ পাচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধের কারণেই তা সম্ভব হয়েছে। তাই আমরা আমাদের স্বাধীনতার মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখব।
আরও পড়ুন :- বইমেলা - বাংলা রচনা : 200 শব্দ
আমাদের মুক্তিযুদ্ধ / বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা - ২
ভূমিকা :
বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। কিন্তু বাংলাদেশের এ স্বাধীনতার রয়েছে সুদীর্ঘ রক্তঝরা ইতিহাস। এক সাগর রক্ত ও লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এ স্বাধীনতা ।
মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট :
১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর পাকিস্তানের একটি অংশ হিসেবে বাঙালিরা পূর্ব পাকিস্তান লাভ করে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানিরা তাদের দুঃশাসন, শোষণ ও বঞ্চনার মাধ্যমে এদেশকে পাকিস্তানের একটি উপনিবেশে পরিণত করে। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন, তারপর অনুষ্ঠিত হয় ৬২-র শিক্ষা আন্দোলন ও ৬৬'র ছয়দফা আন্দোলন ।
পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণ :
পাকিস্তানি বাহিনী মারণাস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় ঢাকার বুকে ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা নির্মম হত্যাকাণ্ড ।
স্বাধীনতার ঘোষণা :
২৫শে মার্চ মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম পাকিস্তানে। গ্রেপ্তারের পূর্বে অর্থাৎ ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন :- বিজয় দিবস - রচনা ২০০ শব্দ [ class 3, 4, 5 ]
গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার গঠন :
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিব নগরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়। রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন শেখ মুজিবুর রহমান। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ :
৪ ডিসেম্বর থেকে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী যৌথভাবে হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়তে শুরু করে। ৬ ডিসেম্বর ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে স্বাধীনতার স্বীকৃতি দান করে। ৪ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর মধ্য বাংলায় পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যৌথ আক্রমণে ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে বিভিন্ন এলাকা শত্রুমুক্ত হয়।
পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও চূড়ান্ত বিজয় :
১৬ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনীর অধিনায়ক লেঃ জেনারেল নিয়াজী যৌথ বাহিনীর প্রধান লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আত্মসমর্পণ করেন। ফলে বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয় সূচিত হয়।
উপসংহার :
নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আর লক্ষ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জন করেছি আমাদের স্বাধীনতাকে । এই স্বাধীনতাকে আমরা রক্ষা করব। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা