ভূমিকা :
পৃথিবীর সবাই বই ভালোবাসে। কোনো বই পড়ার পর বইটি ভালো লেগেছে একথাটি বলা অত্যন্ত সহজ, কিন্তু বইটি ভালোলাগার কারণ নির্দেশ করা অনেকটা কঠিন। কারণ ভালোলাগা ব্যাপারটি একান্তভাবেই ব্যক্তিগত রুচির ওপর নির্ভর করে।
কোনো একটি বই একজনের ভালো লাগলেও অন্য একজনের নিকট পুরোপুরি ভালো নাও লাগতে পারে। তবে ভালো বইয়ের মধ্যে এমন একটি গুণ থাকে যা সহৃদয় পাঠকচিত্তের ওপর প্রভাব বিস্তার করবেই ।
বইয়ের নাম :
আমি যে বইটিকে ভালোবাসি তা একটা ক্ষুদ্র বই । এমন একটা বই আমার প্রিয় বললে অনেকে হয়তো আমাকে সমর্থন করবে না। তবু আমি আমার প্রিয় বইটির নাম সগর্বে প্রকাশ করছি। আমার প্রিয় বই অপরাজেয় কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘রামের সুমতি'।
ভালো লাগার কারণ :
পৃথিবীতে বহু বিখ্যাত বই থাকতে ‘রামের সুমতি' আমার কেন ভালো লাগল তা ঠিকমতো বলতে পারব না। আমার মনে হয় আমি রামকে ভালোবেসেছি। কমবয়সি রামের দুষ্ট বুদ্ধির নানারকম চিত্র শরৎচন্দ্রের ‘রামের সুমতি'র মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়। রামের মা-বাবা ছিল না। বৌদি নারায়ণীর স্নেহ ও শাসনের ছায়াতলে সে বেড়ে উঠেছিল।
আরও পড়ুন :- আমার দেখা একটি মেলা - রচনা : class 6, 7, 8
রাম পৃথিবীর একজন লোককে ভয় করত। সে লোকটি এই নারায়ণী। রাম নারায়ণীকে ভয় করে কিন্তু তার চেয়েও বেশি ভালোবাসে । তাই গ্রামের নীলমণি ডাক্তার যখন নারায়ণীর অসুখের সময় আসতে চাইল না তখন রাম তার দুষ্ট বুদ্ধির ক্ষমতা এবং ঐশ্বর্য নিয়ে ডাক্তারের কাছে হাজির হলো ।
ডাক্তার পচা ময়দার গুঁড়াকে ঔষধ বলে চালিয়ে দেয়। নারায়ণীর মাথার দিব্যি না দিলে রাম ডাক্তারের মুখে ঘুষি দিয়ে দাঁত ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেয়। কিংবা তার কথা না শুনলে ডাক্তারের কলমের আমবাগান উপড়িয়ে দেবে ইত্যাদি ধমক দিয়ে রাম ডাক্তারকে আসতে বাধ্য করে।
এ ঘটনা হতে রামকে গোঁয়ার বা ডানপিটে বলে মনে হয়। কিন্তু আসলে রাম গোঁয়ার বা ডানপিটে কোনোটিই নয়। রাম নিপীড়িতের সেবা এবং অত্যাচারীকে শায়েস্তা করা কর্তব্য বলে মনে করেছে। গ্রামের কিপটে, অত্যাচারী ও ফাঁকিবাজ ডাক্তার রামকে যমের মতো ভয় করত।
আরও পড়ুন :- আমাদের বিদ্যালয় - রচনা : ষষ্ঠ, ৭ম এবং ৮ম শ্রেণি
রামের শুভচেতনার জন্যেই আমি রামকে ভালোবেসেছি। রামের মতো সহজ বুদ্ধিতে কাজ করার ইচ্ছে আমার সবসময় হয়। কিন্তু রামের মতো কাজ করার শক্তি আমার নেই। আমি মনে মনে রাম হওয়ার ইচ্ছে পোষণ করি, বাস্তব জীবনে রামের মতো হয়তো হতে পারিনি। এজন্যেই রাম চরিত্রটির প্রতি আমার এত আকর্ষণ। তাই এ বইটি আমার কাছে এত প্রিয় ।
উপসংহার :
'রামের সুমতি' পড়তে বসলে একেবারে শেষ না করে ওঠা যায় না। আমি আনন্দ পাওয়ার জন্যে বই পড়ি। 'রামের সুমতি' পড়ে আমি অপরিসীম আনন্দ পেয়েছি। সেজন্যে 'রামের সুমতি' আমার সবচেয়ে প্রিয় বই।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা