চরিত্র - বাংলা রচনা [ class 3, 4, 5 ]

চরিত্র রচনা - ১

সূচনা : 

চরিত্র মানব জীবনের অমূল্য সম্পদ। এটা বিদ্যা, বুদ্ধি, মর্যাদা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সচ্চরিত্র ব্যক্তি পরিশ্রমী, অধ্যবসায়ী ও কর্তব্যনিষ্ঠ।

চরিত্র গঠনের উপায় :

বাল্যকাল হতে মহৎ লোকদের সহবাস, সচ্চরিত্র ব্যক্তির কার্যাদির অনুকরণ চরিত্র গঠনের প্রধান উপায়, আত্মবিশ্বাস চরিত্র লাভের মূল। দৃঢ় সংকল্প নিয়ে স্থায়ী চরিত্রের দোষগুলোর প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রেখে সর্বদা আত্মশাসন পূর্বক কর্তব্য পথে অগ্রসর হলে ক্রমশ চরিত্রের উন্নতি করা যায়। মন্দ পুস্তক পাঠ, কুসঙ্গে বাস, ভোগ-লিপ্সা ইত্যাদি চরিত্র গঠনের অন্তরায়। নিষ্ঠা, সংযম, ত্যাগ ও সত্যানুরাগ চরিত্রের বিশিষ্ট লক্ষণ।

সচ্চরিত্রের ফলাফল :

সচ্চরিত্রতা সুখ-শান্তির মূল। চরিত্রবান ব্যক্তি সম্মান ও ভক্তির পাত্র। অসচ্চরিত্র লক্ষপতি অপেক্ষা চরিত্রবান দরিদ্র ব্যক্তি মহান এবং লোক সমাজে অধিকতর আদরণীয়। সচ্চরিত্র ব্যক্তি দ্বারা দেশের সার্বিক উন্নতি সাধিত হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন :-  রচনা : ছাত্র জীবন - Class 3, 4, 5

উপসংহার :

এ সংসারে অসচ্চরিত্র ব্যক্তি কখনোই উন্নতি করতে পারে না। চরিত্রবান ব্যতিরেকে কেহই প্রকৃত মনুষ্যত্ব লাভে সমর্থ হয় না। যে সকল মহাত্মন চরিত্র বলে মানব সমাজে চিরস্মরণীয় রয়েছেন, তাঁদের উদাহরণ সম্মুখে রেখে প্রত্যেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রিত করা উচিত।

চরিত্র রচনা - ২

সূচনা : 

চরিত্র বিদ্যাবুদ্ধি, বংশ, ধন-সম্পদ সবকিছু থেকেও শ্রেষ্ঠ। মানুষের মনের বিকাশ সাধন হয় চরিত্রের মাধ্যমে। প্রবাদ আছে যে, টাকা-পয়সা হারালে যেন কিছুই হারায় না, স্বাস্থ্য হারালে কিছুটা হারায় আর চরিত্র হারালে সবকিছুই হারিয়ে যায় ।

চরিত্র কী : 

বিভিন্ন গুণের সমাবেশেই গড়ে ওঠে চরিত্র। চরিত্র মানুষের ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ। যিনি আচার-আচরণে, চিন্তায়-কর্মে ও বাক্যে ন্যায়নিষ্ঠ ও নীতিবান, যিনি বড়োদের ও জ্ঞানীদের শ্রদ্ধা এবং ছোটোদের স্নেহ করেন, যিনি মানুষকে ভদ্র ও নম্র ব্যবহারে আকৃষ্ট করেন, তিনিই চরিত্রবান।

সচ্চরিত্রের লক্ষণ : 

সত্যবাদিতা, সত্যনিষ্ঠতা, ন্যায়পরায়ণতা, নিয়মানুবর্তিতা, সময়ানুবর্তিতা, ভক্তি, সংযম, দয়া, নির্লোভ, নিরহংকার, প্রেম, ভালোবাসা, বিনয় প্রভৃতি মহৎ গুণাবলি সচ্চরিত্রের লক্ষণ।

চরিত্র গঠনের উপায়: 

মাতাপিতা, আত্মীয়-স্বজন হতে শুরু করে সমস্ত পারিপার্শ্বিক অবস্থার ভেতর দিয়েই শিশুর চরিত্র গঠিত হয়ে থাকে। ভালো বইপত্র ও আদর্শ মহাপুরুষের জীবনী পাঠ করলেও ভালো চরিত্র গড়ে উঠতে পারে। চরিত্রবান হতে হলে মিথ্যা ও অসৎপথ পরিত্যাগ করতে হবে। হিংসা, দ্বেষ, ক্রোধ, মোহ ইত্যাদি খারাপ অভ্যাস কঠোরভাবে দমন করতে হবে। চরিত্র গঠনে ধর্মের প্রভাব ব্যাপক ।

আরও পড়ুন :- আমাদের বিদ্যালয় - রচনা : ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণি । ২টি 

সচ্চরিত্রের সুফল : 

চরিত্রবান ব্যক্তি সমাজের আদর্শ। সচ্চরিত্র সুখ- শান্তির মূল উৎস। একজন ধনহীন মানুষ কেবল চরিত্রের গুণে পায় শ্রদ্ধা এবং জীবনযাপনে সুখ-শান্তি । চরিত্রবান ব্যক্তির ওপর দেশ ও জাতির উন্নতি নির্ভর করে। সকল কালে ও সকল স্থানে চরিত্রবান ব্যক্তিকে সবাই ভালোবাসে ও শ্রদ্ধা করে।

চরিত্রহীনতার কুফল : 

চরিত্রহীন লোক পশুর চেয়েও অধম । চরিত্রহীন লোকের বিদ্যাবুদ্ধি, ধনসম্পদ যা-ই থাকুক না কেন মানুষ তাকে ঘৃণা করে। চরিত্রহীন ব্যক্তি মানুষের অপবাদ ও অভিশাপ কুড়ায় । সারাজীবন অশান্তির আগুনে জ্বলেপুড়ে নিঃশেষ হয় ।

চরিত্রের গুরুত্ব : 

চরিত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। ক্ষমতা, ধন-দৌলত ইত্যাদি দ্বারা যেসব কাজ করা সম্ভব নয়, চরিত্রের গুণে তা অতি সহজেই সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। চরিত্রবান ব্যক্তির মনোবল অসীম । চরিত্রবান ব্যক্তি সৃষ্টিকর্তার প্রিয় পাত্র।

উপসংহার : 

রাজার মাথার মুকুট দেখে যেমন রাজাকে চেনা যায়, তেমনি চরিত্রের মাধ্যমে মানুষকে চেনা যায়। চরিত্র মানুষকে সম্মানের গৌরবমুকুট পরিয়ে দেয়। চরিত্রই মানুষকে অমরত্ব দেয় । তাই মহাপুরুষদের জীবনাদর্শ অনুসরণ করে আমাদের চরিত্র গঠন করা উচিত।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad