কুফর কাকে বলে? কুফর শব্দের অর্থ কি।কুফর কত প্রকার ও কি কি

উপস্থাপনা : কুফর হচ্ছে ঈমানের বিপরীত। এটা মানুষকে তার মনুষ্যত্বের সীমারেখা থেকে হিংস্রতা, অকৃতজ্ঞতা ও জাহেলিয়াতের অন্ধকারে নিক্ষেপ করে। কুফর মানে সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করা। আর সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করার মনোভাব সত্যিই ভ্রান্ত। মানুষ যেহেতু বিবেকসম্পন্ন প্রাণী, তাই তার মধ্যে এ গুণের সঞ্চার কাম্য নয়।

কুফর শব্দের আভিধানিক অর্থ : 

الكفر  শব্দটি বাবেنصر -এর মাসদার । যা ك -ف - ر এ মাদ্দাহ থেকে গৃহীত। জিনসে صحيح; এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে -

  • ১. جحود الاحسان তথা অনুগ্রহের অস্বীকার করা। 
  • ২. جحود النعمه তথা নেয়ামতের অস্বীকার করা ।
  • ৩. الستر তথা আবৃত করা ।
  • ৪. التغطيه তথা ঢেকে ফেলা ।
  • ৫.  ستر الحق তথা সত্যকে গোপন করা ।
  • ৬. الاختفاء তথা লুকিয়ে ফেলা।
  • ৭. الظلمه তথা অন্ধকার।
  • ৮. نقيض ألإيمان তথা ঈমানের বিপরীত।
  • ৯. نقيض الشكر তথা কৃতজ্ঞতার বিপরীত।
  • ১০. البغض তথা হিংসা।
  • ১১. الانكار অস্বীকার করা।
  • ১২. الاقتناع  তথা বিরত থাকা ।
  • ১৩. العصيان তথা অবাধ্যতা ইত্যাদি ।

সংজ্ঞা :- ইসলামি পরিভাষায় আল্লাহ পাকের অস্তিত্বকে অবিশ্বাস করা ও অস্বীকার করাকে কুফর বলে। 

অনুরূপভাবে ইসলামের যেসব মূল বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস করা একান্ত জরুরি সেগুলোকে অবিশ্বাস করাও কুফর।

আরও পড়ুন :- ঈমান কাকে বলে? ঈমান অর্থ কি? ঈমানের মূল বিষয় কয়টি ও কি কি

কুফর - এর প্রকারভেদ : 

কুফর প্রথমত পাঁচ প্রকার। যথা-

১. كفر إنكار (কুফর উল ইনকার ) :

অন্তর ও মৌখিক স্বীকৃতি উভয় দিক থেকে আল্লাহর একত্ববাদ ও রাসূলের রিসালাতের অস্বীকার করাকে كفر إنكار  বলা হয়।

২. كفر جحود (কুফর উল জুহুদ) :

অন্তরে দৃঢ়বিশ্বাস থাকার পরও মৌখিকভাবে তাওহীদ ও রিসালাতের অস্বীকৃতি জ্ঞাপনকে كفر جحود বলা হয় ।

৩. كفر عناد (কুফর উল ইনাদ) :

অন্তরের বিশ্বাস ও মৌখিক স্বীকৃতির পরও ব্যক্তিস্বার্থে বা অন্য কোনো কারণে তাওহীদ ও রিসালাতের অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করাকে كفر عناد  বলা হয়।

8. كفر نفاق  (কুফর উল নিফাক) :

মৌখিকভাবে স্বীকৃতি দিয়ে অন্তরে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করাকে এ كفر نفاق  বলা হয়।

৫. كفر الاعراض : (কুফর উল ই’রাধ) :

ইসলামের মর্মার্থ সঠিকভাবে উপলব্ধি করা থেকে নিজেকে বিরত রাখা।

স্বীকৃতি ও বাস্তবতার নিরিখে কুফর আবার দু'প্রকার। যথা-

6. كفر في الاعتقاد . তথা আকিদাগত কুফরী। 

যেমন তাওহীদ ও রিসালাতকে অস্বীকার করা। ধর্মত্যাগী এবং মিথ্যা নবুয়তের দাবিদারগণ এ প্রকারের অন্তর্ভুক্ত।

2. كفر في العمل তথা আমলের ক্ষেত্রে কুফরী করা। 

যেমন নামায না পড়া, যাকাত না দেয়া, রোযা না রাখা ইত্যাদি। আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মতে, এ জাতীয় কুফরী বিদ্রোহের শামিল। তবে এরা কাফের নয়; কিন্তু ইসলামের কোনো অকাট্য বিধান পালন না করার পাশাপাশি অস্বীকার করলে তারা কাফের হিসেবে সাব্যস্ত হবে।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad