ভূমিকা :
দখলদার পাকিস্তানিদের হাত থেকে প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমিকে মুক্ত করার জন্য ১৯৭১ সালে এ দেশের ত্রিশ লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছিল। এর মধ্যে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী সাত জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সরকার ‘বীরশ্রেষ্ঠ' খেতাবে ভূষিত করে। নূর মোহাম্মদ শেখ তাঁদের মধ্যে একজন।
জীবনবৃত্তান্ত :
নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মস্থান নড়াইলের মহিষখোলা গ্রাম । তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। ছোটবেলা থেকেই নাটক, থিয়েটার আর গানের প্রতি ছিল তাঁর প্রবল অনুরাগ। কিশোর বয়সেই বাবা-মা হারা হন তিনি। বড় হয়ে তিনি তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসে যোগ দেন ।
মুক্তিযুদ্ধে অবদান :
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে গ্রামের বাড়িতে ছুটি কাটাতে এসে নূর মোহাম্মদ মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি (যশোর) ৮ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধরত ছিলেন। ৫ সেপ্টেম্বর ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ ও তাঁর সাথি মুক্তিযোদ্ধাদের পাকিস্তানি সৈন্যরা তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে।
আরও পড়ুন :- একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বা বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ - রচনা
নূর মোহাম্মদের দলটি পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণ প্রতিহত করে। তবে একপর্যায়ে তিনি শত্রুর মর্টারের গোলায় আহত হন। এরপরও সহযোদ্ধাদের নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে একাই শত্রুদের প্রতিরোধ করতে থাকেন ।
মৃত্যু :
অবিরাম গুলি চালাতে চালাতে একসময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নূর মোহাম্মদ । যশোরের শার্শা উপজেলার সীমান্তবর্তী কাশীপুর গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন এই অকুতোভয় বীর। মুক্তিযুদ্ধে এই অসীম সাহসিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার নূর মোহাম্মদ শেখকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ' উপাধিতে ভূষিত করে।
উপসংহার :
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ আমাদের অহংকার, আমাদের অনুপ্রেরণা। মুক্তিযুদ্ধে অবদান ও অসামান্য আত্মত্যাগের জন্য দেশ তাঁকে চিরকাল মনে রাখবে।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা