শহীদ তিতুমীর - বাংলা রচনা

ভূমিকা : 

দেশকে স্বাধীন করার জন্য ইংরেজদের বিরুদ্ধে যে সকল সাহসী মানুষ সংগ্রাম করেছিলেন, শহিদ তিতুমীর তাঁদের অন্যতম 

তিতুমীরের পরিচয় : 

তিতুমীর ১৭৮২ সালে চব্বিশ পরগনা জেলার বশিরহাট মহকুমার চাঁদপুর গ্রামে মীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম সৈয়দ মীর নিসার আলী ।

শিক্ষা : 

তিতুমীর গ্রামের মাদ্রাসায় কোরআন, হাদিস, আরবি, ফারসি ভাষা ও সাহিত্যে শিক্ষালাভ করেন। পরে কুস্তি, লাঠিখেলা, তির ছোড়া আর অসি চালনায়ও দক্ষতা অর্জন করেন তিনি।

সংগ্রামী আন্দোলন : 

সমাজসচেতন তিতুমীরের লক্ষ্য ছিল জমিদার ও ব্রিটিশ নীলকরদের অত্যাচার থেকে কৃষকসহ দরিদ্র শ্রেণিকে রক্ষা করা। সব সম্প্রদায়ের অত্যাচারিত মানুষ তাঁর আন্দোলনে যোগ দেয়।

ধর্মসংস্কার আন্দোলন : 

১৮২২ সালে তিতুমীর হজ করতে মক্কা যান। সেখানে তিনি ভারতে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা সৈয়দ আহমদ বেরলভীর শিষ্য হন এবং ওহাবি মতবাদ গ্রহণ করেন। হজ থেকে ফিরে তিতুমীর বাংলার মুসলিম সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করার জন্য প্রচার চালাতে থাকেন ।

আরও পড়ুন :- মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী - বাংলা রচনা 

সামাজিক ও রাজনৈতিক সংস্কার: 

তিতুমীর হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের কৃষকদের জমিদার ও নীলকরদের বিরুদ্ধে সংগঠিত করেন। তাঁর বাহিনীর সদস্য সংখ্যা এক সময় বেশ কয়েক হাজারে ওঠে। তিতুমীর পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনার কিছু অংশ ও নদীয়া এবং ফরিদপুর জেলার একাংশে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

নারিকেলবাড়িয়ার বাঁশের কেল্লা : 

তিতুমীর বারাসাতে বিদ্রোহ করার পর ইংরেজ সরকার তাঁর ব্যাপারে সতর্ক হয়ে ওঠে। এরপর বড় লড়াইয়ের প্রস্তুতি হিসেবে তিতুমীর নারিকেলবাড়িয়ায় একটি সুরক্ষিত বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন।

নারিকেলবাড়িয়ার লড়াই : 

১৮৩০ সালে ইংরেজ সরকার তিতুমীরকে দমন করতে এক অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়। ১৮৩১ সালে কর্নেল স্টুয়ার্ডের নেতৃত্বে এক বিশাল বাহিনী তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা আক্রমণ করে। ইংরেজ বাহিনীর কামানের গোলায় কেল্লাটি গুঁড়িয়ে যায়। বীরের মতো যুদ্ধ করে তিতুমীর ও তাঁর ৪০ জন সহচর শহিদ হন।

উপসংহার : 

সাহসী তিতুমীরের প্রতিরোধ বাঙালি তথা ভারতীয়দের ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামে প্রেরণা জুগিয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামেও তিনি ছিলেন অন্যতম অনুপ্রেরণা ।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad