শীতের সকাল – রচনা [ Class – 6, 7, 8, 9 ,10 ] – PDF

উপস্থাপনা : 

ঋতুচক্রের আবর্তে এ দেশে আসে শীতকাল। হেমন্তের ফসলভরা মাঠ যখন শূন্য ও রিক্ত হয়ে পড়ে, তখনই ঘনকুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে আসে শীত। উত্তরে হিমেল হাওয়া হাড়ে কাঁপন লাগিয়ে আসে তার নিজস্ব রূপ নিয়ে । তখন প্রকৃতি জগতে সৃষ্টি হয় এক ভিন্ন সৌন্দর্য। এ সৌন্দর্য দেখা যায় শীতের সকালে।

শীতের সকালের আগমন :

বাংলার বুকে শীতের রয়েছে স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য। শীতের রাতে মানুষ লেপ কাঁথা মুড়ি দিয়ে নিশ্চুপ হয়ে থাকে। তারপর এক সময় পাখি ডাকে, কুয়াশার বুক ভেদ করে ফুটে ওঠে আলোর রেখা । প্রভাত হয়, ভেসে আসে মোয়াজ্জিনের আযানের ধ্বনি। তীব্র শীতের কাঁপন উপেক্ষা করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ ছুটে চলেন মসজিদে। লাঙ্গল ও গরু নিয়ে কৃষকরা মাঠে যায় কাঁপতে কাঁপতে ।

শীত সকালের দৃশ্য : 

শীতের সকাল থাকে কুঁয়াশায় ঢাকা। দিগন্ত বিস্তৃত সাদা শাড়ী দিয়ে যেন প্রকৃতিকে ঢেকে রাখে কুয়াশার আড়ালে। ঘড়ির দিকে তাকালে বুঝা যায় বেলা হয়েছে। সমস্ত প্রকৃতি শিশির সিক্ত। বাইরে কনকনে শীত। কাঁথা ছেড়ে ওঠতে কিছুতেই মন চায় না। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা সূর্যের মুখ দেখার জন্য বার বার জানালার ফাঁকে উঁকি মারে। কোথাও বা চোখে পড়ে আগুন পোহাবার দৃশ্য ।

শীত সকালে গ্রাম-গঞ্জ : 

শীতের সকাল গ্রাম-গঞ্জের মানুষের জন্য খুব কষ্টদায়ক । শীত নিবারণের মত প্রয়োজনীয় কাপড় তাদের থাকে না। শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে খুব সকালে তাদেরকে মাঠে ময়দানে কাজে যেতে হয়। কিষাণ বধূরাও তখন ধান মাড়াই, ধান সিদ্ধ ইত্যাদি নানা কাজে ব্যস্ত থাকে। সূর্যালোকিত শিশির কণাগুলো চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। এ দৃশ্য বড়ই মনোরম।

আরও পড়ুন :- শীতের সকাল – রচনা : ২০ পয়েন্ট

শীত সকালে শহর : 

শীত সকালে শহরের অবস্থা ভিন্নতর। নিত্যদিনের কর্মচঞ্চলতা নিয়ে জেগে ওঠে শহর। রিক্সাওয়ালা ঘন কুয়াশা কাটিয়ে ধীরে ধীরে রিক্সা চালায় । রাস্তার মোড়ের চায়ের দোকানগুলোতে জমে ওঠে ভিড়। শহরের বস্তিতে শীত আসে নির্মমতা নিয়ে। শীত নিবারণের জন্য কোন ব্যবস্থা তাদের থাকে না।

শীত সকালের উপভোগ :

শীত সকালে চিড়া-মুড়ি খেতে খুব ভাল লাগে। কোচর ভরা চিড়া-মুড়ি নিয়ে শীতের সকালে রোদকে উপভোগ করার দৃশ্য গ্রাম বাংলায় প্রায়ই দেখা যায় । এ সময় ঘরে ঘরে হরেক রকম পিঠা তৈরি হয়। শীতে গরম পিঠা খেতে ভারী মজা, খেজুর রসের আমদানী খুব বেশি। খেজুর রসের গরম পায়েস মজাদার খাদ্য ।

ত্যাগের মূর্তি : 

শীতের সকালের হাতে যেন রয়েছে বৈরাগিনীর একতারা। সে তার একতারার নিঃসঙ্গ তারে আঘাত হানে নির্মমভাবে। তার সুরে বনের শুষ্ক বিবর্ণ পাতাগুলো একে একে ঝরে পড়ে ।

রূপ-বদল : 

ধীরে ধীরে বেলা বাড়তে থাকে। শীতের সূর্য পূর্ব দিগন্তের কুয়াশার জাল ছিন্ন-ভিন্ন করে আলস্য কাটিয়ে ওপরে উঠতে থাকে। সোনালি রোদে চারদিক ভেসে যায়।

উপসংহার : 

শীতের সকালে একদিকে যেমন প্রকৃতির রূপ, অন্যদিকে তেমনি প্রকৃতি লালিত প্রাণীর নির্যাতিত রূপ বর্ণনায় এক বিশেষ দাবিদার।

Advertisement Advertisement

আমার মূল লক্ষ্য একটাই (Sikkhagar-শিক্ষাগার) ওয়েবসাইটের হাত ধরে “শিক্ষা হবে উন্মুক্ত ও বাণিজ্যমুক্ত”। এই প্লাটফর্মে থাকবে একাডেমিক প্রস্তুতি, ভর্তি প্রস্তুতি, চাকরি প্রস্তুতি, স্পেশাল স্কিল এবং ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানাবিধ বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ।

Leave a Comment

Advertisement Advertisement
error: Content is protected !!