পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি: ভাবসম্প্রসারন (৪বই থেকে ৪টি)

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুগণ, তোমাদের শেখার সুবিধার্থে "পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি" ভাবসম্প্রসারণ টি  ৪টি বই থেকে সংগ্রহ করে দেয়া হলো। তোমাদের কাছে যেটা সবচেয়ে সহজ মনে হয় সেটাই শিখে নিতে পার । 

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি ভাবসম্প্রসারণ - ১

মূলভাব : যে-কোনো উন্নতির মূলে রয়েছে পরিশ্রম। পরিশ্রম করতে পারলে সফলতা অনিবার্য ।

সম্প্রসারিত ভাব : পরিশ্রম সকল প্রকার উন্নতির মূল।পৃথিবীতে পরিশ্রম ছাড়া কিছুই হয় না। তাই এখানে অলস হয়ে বসে থাকার উপায় নেই। শুধু যে মানুষই কাজ করে তা নয়, সব জীবকেই বেঁচে থাকার জন্য কাজ করতে হয়। ছোট পিঁপড়ে পর্যন্ত বসে থাকে না, অনবরত কাজ করে থাকে এবং পিঁপড়েকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে পরিশ্রমী প্রাণী। মানুষ শুধু বেঁচে থাকার জন্যই কাজ করে না, মনের পুষ্টিসাধনের জন্যও তাকে কাজ করতে হয়। 

আজ যে সভ্যতার জন্য মানুষ গর্ববোধ করে, সে তো তাদের অবিরাম পরিশ্রমেরই ফল। মানুষ যে ঘরে বাস করে, সেটা তৈরি করতে পরিশ্রমের প্রয়োজন হয়েছে। সে যে পাথর ঘসে ঘসে আগুন জ্বালিয়েছে তাতেও পরিশ্রম দরকার হয়েছে। মানুষের সভ্যতাকে আধুনিক উন্নত অবস্থায় পৌঁছে দিতেও বহু লোকের প্রাণপণ পরিশ্রমের দরকার হয়েছে। মানুষের পরিশ্রম ছাড়া কোনোকিছু সম্পন্ন হওয়ার কথা চিন্তা করা যায় না। মানুষকে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে। পরিশ্রম করে সে উন্নতির চরম শিখরে উঠতে পারে এবং সুখী ও সমৃদ্ধি জীবনযাপন করতে পারে ।

মন্তব্য : জীবনকে উন্নত এবং সমৃদ্ধি করতে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। তাই বলা হয়— 'Industry is the key to success' অর্থাৎ, পরিশ্রম সৌভাগ্যের চাবিকাঠি। পরিশ্রম ছাড়া যেমন ব্যক্তিগত উন্নতি সম্ভব নয়, তেমনি জাতিগত উন্নতিও অসম্ভব।

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি ভাবসম্প্রসারণ - ২

মূলভাব : পরিশ্রম একজন ব্যক্তির সৌভাগ্যের মূলমন্ত্র। নিরলস পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমেই জীবনে সাফল্য আসে ।

সম্প্রসারিত ভাব : সৌভাগ্য আপনা-আপনি কাউকে ধরা দেয় না। সৌভাগ্য অর্জন করতে হলে প্রয়োজন অপরিসীম পরিশ্রম। পৃথিবীতে যাঁরা বরণীয় হয়ে আছেন তাঁরা পরিশ্রমী ছিলেন। পরিশ্রমে তাঁদের আলস্য ছিল না। কেননা শ্রমবিমুখতা ও অলসতা জীবনে বয়ে আনে নিদারুণ অভিশাপ। নিরন্তর ও নিরলস শ্রমসাধনায় জীবন থেকে দারিদ্র্য হয় অপসারিত। 

বর্তমান বিশ্বের প্রত্যেক উন্নত জাতির উন্নয়নের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তারা প্রত্যেকেই নিরন্তর প্রচেষ্টা ও শ্রমসাধনার বিনিময়ে উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করতে সক্ষম হয়েছেন। একমাত্র শ্রমশক্তির মাধ্যমেই জীবনে অর্জিত হয় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। নিরলস শ্রমসাধনায় সাফল্য অর্জনের ফলেই মানুষ আজ শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছে। মহৎ কর্ম কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে মানুষ সৌভাগ্যের শিখরে আরোহণ করেছে।

মন্তব্য : জাতীয় ও ব্যক্তিগত জীবনকে সুন্দর, সুখী এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে হলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই।

আরও পড়ুন :- ভাবসম্প্রসারণ : স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল (৩টি)

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি ভাবসম্প্রসারণ - ৩

মূলভাব : পরিশ্রম ছাড়া মানুষ উন্নতি সাধন করতে পারে না। শ্রমের মাধ্যমেই সৌভাগ্যের সূচনা হয়।

সম্প্রসারিত ভাব : বিধাতা মানুষকে শক্তি ও বুদ্ধিমত্তা প্রদান করেছেন জীবনে পরিশ্রম করার জন্য। পরিশ্রম বিনা কারও মনোবাসনা পূর্ণ হয় না। এজন্যই বলা “Industry is the key to success.” বর্তমানের উন্নত জীবন ব্যবস্থা এবং নানাবিধ বৈজ্ঞানিক অবদান সবই পরিশ্রমের ফসল। মানুষকে সর্বক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করতে হলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই।

যুগে যুগে যাঁরা জ্ঞান ও কর্মের দ্বারা স্মরণীয়, বরণীয় হয়ে আছেন তাঁরা সকলেই ছিলেন পরিশ্রমী। পরিশ্রমই মানুষকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দেয়। পরিশ্রমের উদাহরণ আমরা প্রকৃতি থেকেও দিতে পারি। মৌমাছি এবং পিপীলিকা তাদের আগাম খাদ্য আহরণ করে রাখে কঠোর পরিশ্রম দ্বারা। পরে তা তাদের দুর্দিনে কাজে আসে।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন খুবই সাধারণ পরিবারের ছেলে ছিলেন। তাঁর বাবা ছিলেন কাঠুরিয়া। অথচ তিনি জীবনে নিরলস পরিশ্রম করে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। জীবনের সাফল্য, গৌরবময় সমৃদ্ধি ও স্বাচ্ছন্দ্য শ্রম ছাড়া সম্ভব নয়। শ্রম ব্যক্তিকে দেয় প্রতিষ্ঠা আর জাতিকে দেয় আত্মমর্যাদা। এই বিশ্বে যে জাতি যতবেশি পরিশ্রমী সে জাতি ততবেশি উন্নত। জাতিকে উন্নত করতে হলে প্রত্যেকেরই কঠোর পরিশ্রম করা উচিত। অর্থাৎ শ্রম যেখানে সাফল্য সেখানে।

মন্তব্য : শ্রমবিমুখ ব্যক্তির জীবনাকাশে সর্বদা দুঃখদুর্দশার ঘনঘটা দেখা দেয়। অতএব, সুখ-সমৃদ্ধি, মান- সম্মান, প্রভাব-প্রতিপত্তি, জ্ঞান অর্থাৎ জীবনের সার্বিক উন্নতির জন্য শ্রম আবশ্যক।

আরও পড়ুন :- ভাবসম্প্রসারণ : লোভে পাপ পাপে মৃত্যু (৩টি )

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি ভাবসম্প্রসারণ - ৪

মূলভাব : পরিশ্রমই সার্বিক সাফল্যের উপায় । পরিশ্রম ব্যতীত কোনো জাতি উন্নতির মুখ দেখে না ।

সম্প্রসারিত ভাব : পরিশ্রম দ্বারা মানুষ সৌভাগ্যের স্বর্ণ শিখরে ওঠে। পরিশ্রম ছাড়া জীবনে সার্থকতা লাভ করা যায় না। একমাত্র পরিশ্রমী ব্যক্তিই স্বাবলম্বী হয়। পৃথিবীতে মান-সম্মান, প্রতিপত্তি, বিদ্যা-বুদ্ধি, যশ-খ্যাতি সব কিছুর মূলে আছে পরিশ্রম । মানুষের অগাধ ধন-সম্পদের মালিক হয় পরিশ্রমের মাধ্যমে। ভাগ্যের দ্বার খোলার একমাত্র চাবি পরিশ্রম। 

পৃথিবীতে যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী সে জাতি তত বেশি উন্নত । পরিশ্রমের নির্যাসে গড়া বর্তমান জাপান ।নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে জাপান পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হতে পেরেছে। পিঁপড়া, মৌমাছি পরিশ্রম করে তাদের খাদ্য সঞ্চয় করে। যে কৃষক কঠোর পরিশ্রম করতে পারে সেই কেবল মৌসুমে সোনার ফসলে উঠোন ভরতে পারে। পক্ষান্তরে পরিশ্রম বিমুখ মানুষ শুধু ভাগ্যের দোহাই দিয়ে কপাল থাপড়িয়ে মরে। 

মন্তব্য : পৃথিবীর যাবতীয় উন্নয়নের মূল এবং সৌভাগ্যের মূলে আছে পরিশ্রম । তাই জাতির উন্নতির জন্য সবাইকে পরিশ্রমী হতে হবে।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad