মূলভাব : ভবিষ্যতের ভালোমন্দ, সুযোগ-সুবিধা, চিন্তা-ভাবনা করে কাজ করা বুদ্ধিমানের লক্ষণ।
সম্প্রসারিত ভাব : মানুষের জীবন তিনটি কালচক্রে বাঁধা – অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। এ তিনটি কালের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কাল ভবিষ্যৎ। কারণ, অতীত ও বর্তমান এ দুই কালের ওপর মানুষের নিয়ন্ত্রণ নেই অর্থাৎ মানুষ অতীত ও বর্তমান কালকে তার নিজের মতো করে গড়তে পারে না। অতীত সে অনেক আগেই গত হয়েছে; বর্তমান কালটিও ধাবমান, তাকে বেশিদূর নিজের অনুকূলে আনা যায় না। তাই অতীত ও বর্তমানের ভাবনা ভেবে কালক্ষেপণ না করে ভবিষ্যৎ কালকে নিয়ে ভাবা উচিত।
মানুষ যদি ভবিষ্যতের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, ভালোমন্দ, কল্যাণ —অকল্যাণ বিবেচনা করে কাজ করে তবে তার ভবিষ্যৎ আলোকিত ও সম্ভাবনাময় হয়ে ধরা দেয়। প্রত্যেক জ্ঞানী —গুণী, বুদ্ধিমান ও মহৎ মানুষরা ভবিষ্যতের ভাবনা ভেবেই কাজ করেছেন। নিউটন, আইনস্টাইন প্রমুখ বরেণ্য ব্যক্তি ভবিষ্যৎ কালের ভালোমন্দ, সুখসমৃদ্ধির কথা বিবেচনা করে কাজ করেছেন। ভবিষ্যতের ভাবনা শুধু জ্ঞানী লোকেরা বা মানুষই ভাবেন তা নয়। ক্ষুদ্র-প্রাণীদের মধ্যেও ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবতে দেখা যায়।
মৌমাছি ফুলহীন খাদ্য সংকটকালীন ভবিষ্যৎ সময়ের কথা বিবেচনা করে মৌচাকে মধু সঞ্চয় করে রাখে। ক্ষুদ্র পিপীলিকার মাঝে ভবিষ্যতের জন্য খাদ্য সঞ্চয়ের প্রবণতা লক্ষ করা যায়। তাই প্রত্যেক মানুষের উচিত বর্তমানের আরাম- আয়েশ, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের স্রোতে গা না ভাসিয়ে সোনালি ভবিষ্যতের আশায় কাজ করা এবং অনাগত কালের দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা।
বর্তমানকে তুচ্ছ জ্ঞান করে সুখী-সমৃদ্ধ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ভবিষ্যতের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করলে যে শুধু আত্মসুখ বিধান হয় বা বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়— তা নয়, বরং এ পরিশ্রমের ফল ভবিষ্যৎ প্রজন্মও ভোগ করে, সর্বোপরি বিশ্বমানবের কল্যাণ সাধিত হয়। সুতরাং, ছাত্র, কৃষক, ব্যবসায়ী প্রত্যেকেরই ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ রেখে কাজ করা উচিত।
মন্তব্য : বর্তমানের কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যৎ নির্মিত হয়। তাই ভবিষ্যতের ব্যাপারে উদাসীনতা সম্পূর্ণ বোকামি।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা