পেশী কলা ও স্নায়ু কলার সংজ্ঞা, গঠন, কাজ। পেশী কলার প্রকারভেদ

সংজ্ঞা : ভ্রুণীয় মেসোডার্ম থেকে উৎপন্ন সংকোচন প্রসারশীল বিশেষ ধরনের টিস্যুকে পেশী টিস্যু বলে।

পেশী কলার গঠন বৈশিষ্ট্য : 

এদের মাতৃকা প্রায় অনুপস্থিত। পেশীকোষগুলো সরু, লম্বা ও তন্তুময়। তন্তুগুলো মাকু আকৃতির এ তন্তুগুলোকে মায়োফাইব্রিল বলে। পেশীকোষের সাইটোপ্লাজমে এক বা একাধিক নিউক্লিয়াস থাকে। পেশীকোষে কোষপর্দাকে সারকোলেমা বলে । যে সকল মায়োফাইব্রিলে আড়াআড়ি ডোরা থাকে তাদের ডোরাকাটা পেশী এবং ডোরাবিহীন মায়োফাইব্রিলকে মসৃণপেশী বলে।

পেশী কলার কাজ :

i. ঐচ্ছিক পেশি অঙ্গ সঞ্চালন ও চলনে সাহায্য করে । 

ii. অনৈচ্ছিক পেশি দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গাদির সঞ্চালনে অংশ নেয়।

iii. হৃদপেশি বিরামহীনভাবে হৃৎপিণ্ডের সঞ্চালন করে থাকে।

পেশী কলার প্রকারভেদ : 

অবস্থান, গঠন এবং কাজের ভিত্তিতে পেশী কলা তিন প্রকার । যথা-

(ক) ঐচ্ছিক বা ডোরাকাটা পেশী। 

(খ) অনৈচ্ছিক পেশী। 

(গ) হৃৎপেশী বা কার্ডিয়াক পেশী। 

স্নায়ুকলা 

সংজ্ঞা : স্নায়ুকোষের দ্বারা গঠিত যে কলা প্রাণীদের বিভিন্ন উদ্দীপনা গ্রহণ, প্রেরণ এবং উদ্দীপনায় সাড়া দেয়া ইত্যাদি কাজগুলো সম্পন্ন করে তাকে স্নায়ুকলা বলে। 

অবস্থান : এই কলা প্রাণীদের স্নায়ুতন্ত্রে, বিশেষত মস্তিষ্কে, সুষুম্নাকান্ড এবং স্নায়ুসমূহের মধ্যে অবস্থিত। 

স্নায়ু কলার গঠন :

স্নায়ুকলা অসংখ্য নিউরন দ্বারা গঠিত। নিউরনের তিনটি অংশ থাকে। যথা: অ্যাক্সন, ডেনড্রাইট ও কোষদেহ। নিউরন কোষদেহ বহুভুজাকৃতি এবং নিউক্লিয়াসযুক্ত। নিউক্লিয়াসযুক্ত । কোষের সাইটোপ্লাজমে মাইটোকন্ড্রিয়া, গলজি বড়ি, রাইবোজোম, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম ইত্যাদি থাকে, তবে নিউরনের সাইটোপ্লাজমে সক্রিয় সেন্ট্রিওল থাকে না। অ্যাক্সন একটি লম্বা স্নায়ুতন্তু যা কোষদেহ ও ডেনড্রাইটের মাঝে যুক্ত থাকে। পরপর দুটি নিউরনে প্রথমটির অ্যাক্সন এবং পরেরটি ডেনড্রাইটের মধ্যে সিন্যাপস নামক স্নায়ুসন্ধি থাকে ।

স্নায়ুকলার কাজ : 

স্নায়ুকলা উদ্দীপনা গ্রহণ করে মস্তিস্কে পরিবাহিত হয় এবং তাতে সাড়া দেয়। উচ্চতর প্রাণিতে স্নায়ুকলা মস্তিষ্কে স্মৃতি সংরক্ষণ করা সহ দেহের বিভিন্ন অঙ্গের কাজ নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad