উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই ,কিন্তু অর্থদ্যোতকতা আছে-উক্তিটির তাৎপর্য

উপসর্গ হলো অব্যয়বাচক শব্দাংশ। এরা শব্দ বা ধাতুর পূর্বে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে। এদের নিজস্ব কোনো অর্থ নেই। এরা ধাতু বা শব্দের পূর্বে বসে শব্দের গঠন ও বৈচিত্র্য সম্পাদন করে মাত্র। এদের অর্থবাচকতা নেই কিন্তু অর্থদ্যোতকতা আছে । নিচে বিস্তারিত আলোচনা উপস্থাপন করা হলো :

“উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই কিন্তু অর্থদ্যোতকতা আছে' উক্তিটির তাৎপর্য :

উপসর্গের নিজস্ব কোন অর্থবাচকতা নেই, কিন্তু অন্য শব্দের পূর্বে যুক্ত হলে এদের অর্থদ্যোতকতা বা নতুন শব্দ গঠনের ক্ষমতা আছে। যেমন- ‘হার' একটি শব্দ যার অর্থ 'মালা'। 'বি', ‘উৎ, ‘পরি’, ‘আ’, 'প্র', 'উপ', 'সম' এগুলো উপসর্গ । এদের স্বতন্ত্রভাবে নিজের কোন অর্থ নাই । কিন্তু এই উপসর্গগুলো- 'হার' শব্দের পূর্বে যুক্ত হলে কতকগুলো নতুন শব্দ গঠিত হয়। যেমন-

বি + হার = বিহার - অর্থ ভ্রমণ ।

উৎ + হার = উদ্ধার - অর্থ রক্ষা করা।

পরি + হার = পরিহার - অর্থ ত্যাগ করা ।

আ + হার = আহার - অর্থ খাওয়া ।

প্র + হার = প্রহার - অর্থ মারা।

উপ + হার = উপহার - অর্থ পুরস্কার ।

সম + হার = সংহার - অর্থ হত্যা ইত্যাদি।

প্রকাশ থাকে যে, নাম বা কৃদন্ত শব্দের সাথে যুক্ত না হয়ে স্বাধীনভাবে থাকলে উপসর্গের কোনো অর্থ নেই। কিন্তু কৃদন্ত বা নাম শব্দের সাথে যুক্ত হলেই আশ্রিত শব্দকে অবলম্বন করে বিশেষ অর্থদ্যোতকতা সৃষ্টি করে। তাই বলা হয়, উপসর্গের অর্থবাচকতা নাই, কিন্তু অর্থদ্যোতকতা আছে।

ব্যতিক্রম : বাংলা ভাষায় 'অতি' ও 'প্রতি' এ দুটি উপসর্গের কখনো কখনো স্বাধীন প্রয়োগ হতে পারে। যেমন- মাথাপ্রতি পাঁচ টাকা খরচ। অতি বাড়া ভালো নয়

উপসংহার : উপসর্গের নিজস্ব কোন অর্থবাচকতা না থাকলেও অন্য শব্দের পূর্বে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠনের ক্ষমতা আছে। তাই বলা হয়, উপসর্গের অর্থবাচকতা না থাকলেও অর্থদ্যোতকতা বা সংশ্লিষ্ট শব্দের নতুন অর্থ সৃষ্টির ক্ষমতা আছে ।

Post a Comment

0 Comments