তাকবীরে তাশরীক মহান আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণার এক অনন্য উপকরণ। তাকবীরে তাশরীক যিলহজ্জ মাসে পড়া হয়। নিম্নে তাকবীরে তাশরীক সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
তাকবীরে তাশরীকের সংজ্ঞা :
যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ ফজর নামায হতে ১৩ তারিখ আসর নামায পর্যন্ত এই ৫দিন প্রতি ওয়াক্ত ফরয নামাযের পরে যে নির্দিষ্ট তাকবীর বলা ওয়াজিব তাকে তাকবীরে তাশরীক বলা হয় ।
তাকবীরে তাশরীক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ :
اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، لَا إِلٰهَ إِلَّا اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، وَلِلَّهِ الْحَمْدُ
উচ্চারণ : আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ ।
অর্থ : আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, এবং আল্লাহই মহান, আল্লাহ মহান, প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
তাকবীরে তাশরীক পড়ার নিয়ম :
যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখের ফজরের পর হতে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরয নামাযের পর জোরে জোরে তাকবীরে তাশরীক পাঠ করা ওয়াজিব। এটি বালেগ পুরুষ, মহিলা, মুসাফির, গ্রামবাসী ও এলাকাবাসীদের ওপর ওয়াজিব। এ কথার ওপরই ফতোয়া হয়েছে। ইমাম তাকবীর বলতে ভুলে গেলে মুক্তাদি জোরে তাকবীর বলবে। ঈদের নামাযের পর তাকবীর বলা কতিপয় আলেমের মতে ওয়াজিব।
আরো পড়ুন : ঈদুল ফিতরের ও ঈদুল আজহার সুন্নত সমূহ। সালাত আদায় করার সময়
তাকবীরে তাশরীক কার উপর ওয়াজিব :
যাদের ওপর নামায রোযা ফরয তাদের ওপর তাকবীরে তাশরীক ওয়াজিব। এক কথায় রি-এর ওপর তাকবীরে তাশরীক ওয়াজিব।
তাকবীরে তাশরীক কতদিন পড়তে হয়:
তাকবীরে তাশরীকের সময়সীমা সম্পর্কে ইমামগণের মাঝে সামান্য মতবিরোধ রয়েছে। যেমন-
১. আবু হানীফার অভিমত : ইমাম আবু হানীফা (র)-এর মতে, ৯ যিলহজ্জের ফজর থেকে ১৩ যিলহজ্জের আসর নামাযের পর পর্যন্ত পড়তে হয়।
সাহেবাইনের অভিমত : তাঁদের মতে, ৯ যিলহজ্জ হতে ১৩ যিলহজ্জ আসর নামায পর্যন্ত তাকবীর পড়তে হয়।
তাকবীরে তাশরীক মাসআলা সমূহ :
মাসআলা- ১ : ঈদুল ফিতরের খুতবায় সদকায়ে ফিতর এবং ঈদুল আযহার খুতবায় কোরবানী ও তাকবীরে তাশরীক সম্বন্ধে বর্ণনা করতে হবে। তাকবীরে তাশরীক এই
মাসআলা- ২ : ৯ই যিলহজ্জ ফজর হতে ১৩ই যিলহজ্জ আছর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পর যারা জামায়াতে নামায পড়ে তাদের জন্য এ তাকবীর বলা ওয়াজিব ।
মাসআলা- ৩ : স্ত্রীলোক বা মুসাফির হলে কিংবা একাকী নামায পড়লে তাদের উপর তাকবীর ওয়াজিব নয়। তবে তারা পড়লে ভাল । অবশ্য মহিলা বা মুসাফির কোন মুকীম ইমামের মুক্তাদী হলে তাদেরও তাকবীর বলা ওয়াজিব ।
মাসআলা- ৪ : এ তাকবীর উচ্চৈঃস্বরে পড়া ওয়াজিব। অবশ্য মহিলারা নিম্ন স্বরে পড়বে।
মাসআলা- ৫: ফরয নামাযের পর বিলম্ব না করেই তা পড়তে হবে।
মাসআলা- ৬ : ইমাম ভুলে গেলে মুক্তাদীগণ উচ্চৈঃস্বরে পড়তে শুরু করবে। ইমামের জন্য বসে থাকবে না ।
মাসআলা- ৭ : ঈদুল আযহার নামাযের পর এবং জুমুআর নামাযের পরও তাকবীর বলা মতান্তরে ওয়াজিব ।
মাসআলা- ৮: ঈদের নামায একটি বড় এলাকার সব লোক এক জায়গায় একত্রিত হয়ে পড়া উত্তম। কিন্তু কয়েক জায়গায় পড়লে বা সকলের ঐকমত্যে বিভিন্ন মসজিদে পড়লেও জায়েয হবে ।