হোম পদার্থ রসায়ন জীব ইসলামিক

দ্বিপদ নামকরণ: সংজ্ঞা,পদ্ধতি,নিয়ম,উদাহরণ ও প্রবর্তক

যখন কোন বিশেষ প্রাণী বা প্রাণীগুষ্টির নিদিষ্ট নাম শনাক্ত করা হয় তখন সেটিকে বলা হয় নামকরণ। অনেক অনুসন্ধানের পর যদি কোনো প্রাণী নতুন প্রমাণিত হয় তখন ICZN এর নিয়ম অনুযায়ী নামকরণ করতে হবে। এই পদ্ধতি সর্ব প্রথম প্রবর্তন করতে সুইডিশ বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস। আর এটি দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি নামে পরিচিত।

দ্বিপদ নামকরণ কাকে বলে?

নামকরণের আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী গণ ও প্রজাতি নামের দুটি পদ ব্যবহার করে জীবের যে নামকরণ করা হয় তাকে দ্বিপদ নামকরণ বলে। যেমন- মানুষের দ্বিপদ বৈজ্ঞানিক নাম Homo sapiens যেখানে Homo গণ ও sapiens প্রজাতি নামের নির্দেশক।

দ্বিপদ নামকরণ লেখার নিয়মাবলি :

দ্বিপদ নামকরণের প্রধান কয়েকটি নিয়ম নিম্নে উল্লেখ করা হলো :

  • প্রতিটি জীবের একটি করে সর্বজন স্বীকৃত বৈজ্ঞানিক নাম থাকবে এবং নামটির দুটি অংশ থাকেব ।
  • দ্বিপদ নামের প্রথম অংশটি উক্ত জীবের গণ এবং দ্বিতীয় অংশটি প্রজাতি নাম নির্দেশ করবে।
  • এ নাম ল্যাটিন বা রূপান্তরিত ল্যাটিন বা গ্রিক শব্দ হবে।
  • দ্বিপদ নামকরণ ছাপা অক্ষরে হলে সর্বদা ইটালিক(ডান দিকে বাঁকা করে)হরফে লিখতে হবে।
  • দ্বিপদ নামকরণ হাতে লিখলে কেবল ইংরেজি অক্ষর ব্যবহার করতে হবে এবং এর প্রতিটি অংশের নিচে আলাদা আলাদাভাবে দাগটানতে হবে।

আরও জানুন : শ্রেণীবিন্যাস: সংজ্ঞা,ধাপ,নীতি,উদ্দেশ্য,প্রয়োজনীয়তা,নিয়ম

পাঁচটি পরিচিত প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম :

প্রাণীর নাম বৈজ্ঞানিক নাম
ম্যালেরিয়া জীবাণু Plasmodium vivax
কুনোব্যাঙ Bufo melanostictus
আরশোলা Periplaneta americana
দোয়েল Copsychus saularis
মানুষ Homo sapiens

দ্বিপদ নামকরণের গুরুত্ব ব্যাখ্যা :

পৃথিবীব্যাপী বিস্তৃত অসংখ্য জীবকে জানতে জীবের দ্বিপদ নামকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বৈচিত্র্যময় জীবজগতের প্রতিটি সদস্যকে আলাদা আলাদা ভাবে জানতে দ্বিপদ নামকরণ অত্যাবশ্যক। দ্বিপদ নামকরণ ল্যাটিন শব্দে হওয়ায় কোনো জীবের বৈজ্ঞানিক নাম সারা বিশ্বে একই নামে পরিচিত হয়, ফলে বিশ্বের সকল ভাষার লোকের কাছে যেকোনো জীবের শনাক্তকরণ সহজতর হয়।

দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি কি?

দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি হলো— একটি জীবের বৈজ্ঞানিক নাম বা দ্বিপদ নাম দুটি অংশ বা পদ নিয়ে গঠিত হয়। প্রথম অংশটি তার গণের নাম ও দ্বিতীয় অংশটি তার প্রজাতির নাম। যেমন ধানের বৈজ্ঞানিক নাম Oryza sativa. এখানে oryza গণ নাম ও sativa প্রজাতির নাম, এরূপ দুটি পদ নিয়ে গঠিত নামকে দ্বিপদ নাম এবং এই নামকরণের প্রক্রিয়াকে দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি বলে ।

দ্বিপদ নামকরণের লক্ষ্য হচ্ছে এই বৈচিত্র্যময় জীবজগতের প্রতিটি জীবকে আলাদা নামে সঠিকভাবে জানা। আন্তর্জাতিকভাবে কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতি মেনে জীবের বৈজ্ঞানিক নাম নির্ধারণ করা হয় এবং এই নামকরণে ল্যাটিন শব্দ ব্যবহার করা হয়। নামকরণ ল্যাটিন শব্দের হওয়ায় কোনো জীবের বৈজ্ঞানিক নাম সারা বিশ্বে একই নামে পরিচিত হয়।

আরও জানুন : প্রাণী জগতের শ্রেণীবিন্যাস, পর্ব ও প্রয়োজনীয়তা

ক্যারোলাস লিনিয়াসকে দ্বিপদ নামকরণের প্রবর্তক বলা হয় কেন ?

সুইডিস বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস তার Systema Naturae নামক গ্রন্থে সর্বপ্রথম দ্বিপদ নামকরণনীতি প্রবর্তন করেন এবং গণ ও প্রজাতির সংজ্ঞা দেন। তিনিই প্রথম এই গ্রন্থে জীবের শ্রেণি, বর্গ, গণ এবং প্রজাতির ধাপগুলো ব্যবহার করেন। তাই ক্যারোলাস লিনিয়াসকে দ্বিপদ নামকরণের প্রবর্তক বলা হয় ।

দ্বিপদ নামকরণের প্রবর্তক সম্বন্ধে সংক্ষেপে লেখ।

বিখ্যাত সুইডিস বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস (১৭০৭–১৭৭৮ সাল) ১৭৫৮ সালে তাঁর “সেস্টেমী নেচারী” নামক গ্রন্থের দশম সংস্করণে এ নামকরণ পদ্ধতি প্রচলন করেন। তাঁকে শ্রেণীকরণ বিদ্যার জনক বলা হয় । পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন ডাক্তার এবং আপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীর তত্ত্বের অধ্যাপক ।

তিনি বহু প্রাণী ও উদ্ভিদ সংগ্রহ করে তাদের শ্রেণীবিন্যাস ও নামকরণ করেন। জীবজগতে শ্রেণীবিন্যাসের ওপর রচিত “Systema Nature’ তাঁর বহুল প্রচলিত গবেষণা গ্রন্থ । এছাড়া Species Plantarum এবং Genera Plantarum নামে তাঁর দুটি বিখ্যাত গবেষণামূলক উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বই রয়েছে।

আরও জানুন : প্রাণী বৈচিত্র্য কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি-উদাহরণ সহ

শিক্ষাগার

প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে

মাহমুদুল হাসান

শিক্ষাগত যোগ্যতা
গণিতে অনার্স ও মাস্টার্স

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

ফাজিল সম্পন্ন

গোপালপুর দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা

বিশেষ দক্ষতা

বাংলা সাহিত্য • গণিত • ইসলামিক শিক্ষা

অভিজ্ঞতা

শিক্ষকতা ও ৫+ বছর কন্টেন্ট রাইটিং

আমাদের লক্ষ্য

শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করা। ২০২৩ সাল থেকে লাখো শিক্ষার্থী শিক্ষাগার থেকে উপকৃত হচ্ছে।

Leave a Comment