সংজ্ঞা : সাধারণত কোনো পদে নিয়োগ প্রাপ্তির জন্য বা ছুটি, বদলি, সাহায্য চেয়ে অথবা কোনো সমস্যা নিরসনে যথার্থ কর্তৃপক্ষের কাছে যে আনুষ্ঠানিক পত্র লেখা হয় তাকে আবেদন পত্র বা দরখাস্ত বলা হয়।
আবেদন পত্র বা দরখাস্ত লেখার নিয়ম
এ ধরনের পত্রে কেবল মূল প্রসঙ্গ ও প্রয়োজনীয় বক্তব্য বিষয় প্রাধান্য পায় । যেকোনো সমস্যা বা বক্তব্য উপস্থাপনের সময় লক্ষ রাখতে হবে, যেন ধারাবাহিকতা ও পারম্পর্য রক্ষা পায় । ভাষার সরলতা, স্পষ্টতা ও প্রায়োগিক শুদ্ধতার ওপর বিশেষ নজর রাখতে হয় । আবেদন পত্রের অংশ বা ভাগগুলো নিম্নরূপ :
সাধারণত একটি আবেদনপত্র বা দরখাস্তের নিম্নলিখিত ৭টি অংশ থাকে। যথা—
ক. তারিখ,
খ. পত্র প্রাপকের ঠিকানা,
গ. বিষয়,
ঘ. সম্ভাষণ,
ঙ. মূল পত্রাংশ,
চ. বিদায় সম্ভাষণ ও
ছ. নাম স্বাক্ষর।
আরও জানুন : পত্র অর্থ কি?চিঠি বা পত্র লেখার নিয়ম বাংলা, লিখন পদ্ধতি-pdf
ক. তারিখ : তারিখ আবেদনপত্রের শুরুতে একেবারে ওপরে বামপাশে দিতে হয়।
খ. পত্র প্রাপকের ঠিকানা : তারিখের পর বাম দিকে প্রাপকের প্রাতিষ্ঠানিক ঠিকানা লিখতে হয়। এর আগে বরাবর, মাননীয় ইত্যাদি শব্দ লেখা যেতে পারে।
গ. বিষয় : আবেদনপত্রে প্রাপকের ঠিকানার নিচে সামান্য ফাঁকা রেখে ‘বিষয়’ : কথাটি লিখে তার পাশে পত্রের মূল বক্তব্য-বিষয় খুব সংক্ষেপে উল্লেখ করতে হয়, যেন শিরোনাম দেখেই প্রাপক আবেদনের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা পেতে পারে।
ঘ. সম্ভাষণ : আবেদন পত্রে সাধারণত মহাত্মন, জনাব, মহোদয় ইত্যাদি সম্ভাষণের যে কোনো একটি প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে হয়।
ঙ. মূল পত্রাংশ : আবেদন পত্রের মূল বক্তব্য এ অংশে থাকে। সাধারণত দুটি অনুচ্ছেদে এই বক্তব্য উপস্থাপিত হয়। প্রথম অনুচ্ছেদে বক্তব্য বিষয় বা সমস্যার প্রকৃতি তুলে ধরা হয়। দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে প্রাপকের কাছে যে জন্য আবেদন করা হচ্ছে সে বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়ে থাকে ৷
চ. বিদায় সম্ভাষণ : মূল বক্তব্যের পরে বিদায় সম্ভাষণে সাধারণত একান্ত অনুগত, একান্ত বিশ্বস্ত, বিনীত, নিবেদক, বিনয়াবনত ইত্যাদি লিখতে হয়।
ছ. নাম স্বাক্ষর : বিদায় সম্ভাষণের নিচে বাম দিকে আবেদনকারীর নাম স্বাক্ষর করতে হয়। আবেদনকারী কোনো প্রতিষ্ঠান বা এলাকার প্রতিনিধিত্ব করলে তা নাম-স্বাক্ষরের নিচে ঠিকানাসহ উল্লেখ করতে হয়।
আরও জানুন : ব্যক্তিগত পত্রের কয়টি অংশ? ব্যক্তিগত পত্র লেখার নিয়ম- pdf
আবেদন পত্র বা দরখাস্তের নমুনা
১. তারিখ | ১৫ এপ্রিল, ২০২– ইং |
২. প্রাপকের ঠিকানা | বরাবর, প্রধান শিক্ষক, কুমিল্লা জেলা স্কুল, কুমিল্লা ৷ |
৩. বিষয় | বিষয় : বিনা বেতনে অধ্যয়নের জন্য আবেদন । |
৪. সম্ভাষণ | জনাব, |
৫. মূল পত্রাংশ | বিনীত নিবেদন এই যে, আমি আপনার বিদ্যালয়ের…..শ্রেণির একজন নিয়মিত ছাত্র। আমি গত চার বছর যাবত আপনার বিদ্যালয়ে বেতন দিয়ে পড়ে এসেছি। কিন্তু গত দুমাস পূর্বে আমার পিতা মৃত্যুবরণ করায় আমাদের পরিবারে দুর্যোগ নেমে এসেছে এবং আমি একজন এতিম ও দরিদ্র বালকে পরিণত হয়েছি। …………..বিনা বেতনে অধ্যয়ন করার প্রার্থনা জানাচ্ছি। অতএব, আমার আকুল আবেদন এই যে, অনুগ্রহপূর্বক আমাকে বিনা বেতনে পড়ার অনুমতি দানে বাধিত করতে আপনার আজ্ঞা হয়। |
৬. বিদায় সম্ভাষণ | আপনার একান্ত অনুগত |
৭. নাম স্বাক্ষর | মোঃ মাহিনুল ইসলাম …..শ্রেণি, রোল নং-২ |
আরও জানুন : চাকরির আবেদন পত্র লেখার নিয়ম ও চাকরির আবেদন পত্র নমুনা