চিঠি বা পত্র যোগাযোগের সবচেয়ে সহজ মাধ্যম। পাশাপাশি অবস্থান কালে আমরা কথাবার্তার মাধ্যমেই একজন আরেক জনের নিকট মনের ভাব ও আবেগ প্রকাশ করে থাকি। কিন্তু আমাদের কেউ যখন বিদেশে বা দূরে থাকে, তখন তাদের সাথে কথাবার্তা বলে মনের ভাব ও আবেগ প্রকাশ করতে হলে পত্রের মাধ্যমে তা করতে হয়।
(toc) Table Of Contens
চিঠি বা পত্র অর্থ কি ?
'পত্র' একটি সংস্কৃত শব্দ। যার অর্থ 'পাতা'। কিন্তু বাংলা ব্যাকরণে 'পত্র' শব্দটি এক বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়। বাংলা ব্যাকরণে এর অর্থ 'চিহ্ন' বা 'স্মারক'। পত্র শব্দটির আভিধানিক অর্থ চিঠি।
সংজ্ঞা : কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে কোনো সংবাদ, ঘটনার বিবরণ পাঠানো বা কারো উদ্দেশ্যে কোনো বিষয় লিখিতভাবে প্রকাশ করাকে পত্রলিখন বলে ।
পত্রের প্রকারভেদ :-
পত্ৰ প্ৰধানত দুই প্রকার। যথা-
ক. ব্যক্তিগত পত্র ও
খ. ব্যবহারিক পত্র।
ক. ব্যক্তিগত পত্র : ব্যক্তিগত প্রয়োজনে মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, আপনজন ও পরিচিতজনদের কাছে যেসব পত্র লেখা হয় সেগুলোকে ব্যক্তিগত পত্র বলে।
ব্যক্তিগত পত্র বিদেশে পাঠাতে হলে খামের ওপর BY AIR MAIL কথাটি লেখতে হয়।
আরও পড়ুন : ব্যক্তিগত পত্রের কয়টি অংশ?ব্যক্তিগত পত্র বা চিঠি লেখার নিয়ম-pdf
খ. ব্যবহারিক পত্র : মানুষ তার ব্যবহারিক জীবনে যেসব অনুষ্ঠানিক পত্র লিখে থাকে সেগুলোকে ব্যবহারিক পত্র বলে।
👉বিষয়বস্তু ও পত্রের কাঠামো অনুসারে পত্রকে কয়েক শ্রেণিতে ভাগ করা হয় -
১. ব্যক্তিগত পত্র।
২. আবেদনপত্র।
৩. নিমন্ত্রণপত্র।
৪. অভিনন্দনপত্র বা মানপত্র।
৫. বাণিজ্যিক পত্র।
৬. সংবাদপত্রে প্রকাশিত পত্র।
৭. স্মারকলিপি বা অভিযোগ পত্র।
চিঠি বা পত্র লেখার নিয়ম :
পত্র লেখার কতিপয় নিয়ম-কানুন রয়েছে। যেমন-
১। পত্রে কঠিন শব্দের ব্যবহার বর্জন করে সহজ ও রুচিশীল শব্দ ব্যবহার করা উচিত।
২। পত্রের ভাষা সহজ, সরল ও সাবলীল হওয়া বাঞ্ছনীয়।
৩। পত্রে সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণ পরিহার করতে হবে ।
৪। পত্র সুন্দর ও স্পষ্ট হস্তাক্ষরে লিখতে হবে, যাতে প্রাপক অতি সহজে পত্রের ভাষা বুঝতে পারে।
৫। যথাস্থানে যতি বা বিরাম চিহ্ন বসাতে হবে।
৬। পত্রে একই কথা বারবার লেখা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৭। এলোমেলো শব্দ চয়ন ও অমার্জিত ভাষার ব্যবহার পরিহার করতে হবে।
৮। পত্র লেখার সময় পত্রের বিভিন্ন অংশের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে, যাতে অংশগুলো যথাস্থানে প্রয়োগ করা হয়।
আরও পড়ুন : দিনলিপি অর্থ, দিনলিপি লেখার নিয়ম HSC ও ৩৪টি দিনলিপি(PDF)
পত্র লিখন পদ্ধতি :
কাকে পত্র লিখবে | |
পিতা, মাতা, চাচা বা কাকা, গুরুজনকে এবং বয়োজ্যেষ্ঠ পুরুষ আত্মীয়স্বজনকে। | |
মুসলিমরীতি | হিন্দুরীতি |
---|---|
পাক জনাবেষু, পরম শ্রদ্ধাস্পদেষু, জনাবেষু, খেদমতেষু | শ্রী চরণেষু, সুজনেষু, শ্রীচরণকমলেষু, পরম শ্রদ্ধাস্পদেষু |
বয়োজ্যেষ্ঠ মহিলা আত্মীয়াকে | |
পাক জনাবেষু, শ্রদ্ধাস্পষু | শ্রীচরণেষু, পরম পূজনায়ষু |
কনিষ্ঠ পুরুষকে | |
দোয়াবরেষু, স্নেহাস্পদেষু দোয়াবর, দোয়াবরেষু, স্নেহের | কল্যাণরেষু, কল্যাণীরেষু, কল্যাণীয়বরেষু |
বন্ধুবান্ধব এবং বান্ধবীকে | |
সুহৃদবরেষু, প্রিয়বরেষু, প্রিয়বন্ধুবরেষু | সুহৃদবরেষু, প্রিয়বরেষু, প্রিয় বন্ধুবরেষু |
অপরিচিত ভদ্রলোককে | |
প্রিয় জনাব, মাননীয় জনাব, সালামবাদ | প্রিয় মহাশয়, আদাব, মাননীয় মহাশয়, মান্যবরেষু |
অপরিচিতা ভদ্রমহিলাকে | |
মাননীয়া, শ্রদ্ধাস্পদেষু | মাননীয়াষু, শ্রদ্ধাস্পদষু |
কোনো প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার অথবা কর্মচারীকে | |
প্রিয় মহোদয়, প্রিয় জনাব | প্রিয় মহোদয়, প্রিয় মহাশয় |
আরও পড়ুন : ণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধান কাকে বলে?ণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধানের নিয়ম