সংজ্ঞা : ব্যক্তিগত প্রয়োজনে মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, আপনজন ও পরিচিতজনদের কাছে যেসব পত্র লেখা হয় সেগুলোকে ব্যক্তিগত পত্র বলে।
ব্যক্তিগত পত্র বিদেশে পাঠাতে হলে খামের ওপর BY AIR MAIL কথাটি লেখতে হয়।
ব্যক্তিগত চিঠি/পত্র লেখার নিয়ম বা ব্যক্তিগত পত্রের অংশ :
সাধারণত একটি আদর্শ ব্যক্তিগত পত্রের ৬টি অংশ থাকে। যথা-
ক. শিরোনাম বা পত্র লেখকের ঠিকানা ও তারিখ ।
খ. সম্ভাষণ।
গ. পত্রের বিষয় বা মূল বক্তব্য ।
ঘ. বিদায় সম্ভাষণ ৷
ঙ. পত্র প্রেরকের স্বাক্ষর।
চ. পত্র প্রাপকের ঠিকানা।
আরও পড়ুন : পত্র অর্থ কি?চিঠি বা পত্র লেখার নিয়ম বাংলা, লিখন পদ্ধতি-pdf
ক. শিরোনাম বা পত্র লেখকের ঠিকানা ও তারিখ : পত্র লেখকের ঠিকানা ও তারিখ পত্রের ওপরে বাম বা ডান দিক ঘেঁষে লিখতে হয়। প্রথমে ঠিকানা ও পরে তারিখ লেখতে হয়।
গ. সম্ভাষণ : পত্র প্রাপককে সম্মোধন বা সম্ভাষণ করতে হয় পত্রের ওপরিভাগে বাম দিকে। পত্র প্রাপকের সঙ্গে পত্র প্রেরকের সম্পর্ক অনুসারে এবং পত্র প্রাপকের মান, মর্যাদা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠা অনুযায়ী সম্ভাষণের পরিবর্তন হয় ।
সম্ভাষণের নমুনা
প্ৰাপক | মুসলিম রীতি | হিন্দু রীতি |
---|---|---|
গুরুজন ও বয়োজ্যেষ্ঠ | পাকজনাবেষু, খেদমতেষু, শ্রদ্ধাস্পদেষু মহিলা হলে-শ্রদ্ধেয়া, কল্যাণবর | শ্রীচরণেষু, শ্রীচরণ কমলেষু, পূজনীয়েষু মহিলা হলে-পূজনীয়, পূজনীয়াষু |
কনিষ্ঠ ভাই-বোন | স্নেহের, দোয়াবরেষু মহিলা হলে- কল্যাণীয়া, স্নেহের | কল্যাণ বরেষু মহিলা হলে–কল্যাণীয়ায়ু, কল্যাণীয়া |
বন্ধু-বান্ধব | প্রিয়, প্রিয়া বরেষু, বন্ধুবরেষু | প্রিয় বন্ধুবর, সুহৃদয়েষু, প্রিয়বরেষু |
পরিচিত লোক | প্রিয় মহোদয়, প্রিয় জনাব | প্রিয় মহাশয় |
গ. পত্রের বিষয় বা মূল বক্তব্য : এ অংশে পত্রের বিষয়বস্তু সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে হয়। একে গর্ভাংশ বা গর্ভপত্রও বলা হয়। পত্রগর্ভ ব্যতিরেকে পত্র লেখার উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়। এটি পত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
বিদায় সম্ভাষণের নমুনা
প্ৰাপক | মুসলিম রীতি | হিন্দু রীতি |
---|---|---|
গুরুজন ও বয়োজ্যেষ্ঠ | আপনার স্নেহধন্য, স্নেহাস্পদ, স্নেহের | আপনার স্নেহের, সেবক, প্রণত |
কনিষ্ঠ ভাই-বোন | শুভাকাঙ্ক্ষী, আশীর্বাদক, তোমার | আশীর্বাদক, তোমার শুভানুধ্যায়ী |
বন্ধু-বান্ধব | প্রীতিমুগ্ধ, গুণমুগ্ধ, তোমারই | প্রীতিমুগ্ধ, গুণমুগ্ধ, তোমারই |
পরিচিত লোক | আপনার বিশ্বস্থ, বিনয়াবনত | বিশ্বস্ত, বিনয়াবনত |
ঙ. পত্র প্রেরকের স্বাক্ষর : বিদায় সম্ভাষণের শেষে নিচে বাম বা ডান দিকে লেখকের স্বাক্ষর করতে হয়।
চ. পত্র প্রাপকের ঠিকানা : এটা খামের ওপরে থাকে। খামের ডান পাশে প্রাপকের পূর্ণ নাম ও ঠিকানা লিখতে হয়। এটি না লিখলে ঠিকানার অভাবে পত্র ‘ডেড লেটার’ বলে চিহ্নিত হয়।
ব্যক্তিগত চিঠি বা পত্র লেখার নমুনা
১। স্থান ও তারিখ | গুলশান, ঢাকা-১২১৪ ১২ জানুয়ারি, ২০২-- | |
২। সম্ভাষণ | প্রিয় বাবা, | |
৩। মূল বক্তব্য | গতকাল আপনার চিঠি পেয়েছি। আপনি শুনে আনন্দিত হবেন যে, আমি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছি। এখন নতুন বই ও স্কুল ড্রেস কেনার জন্য যত শীঘ্র সম্ভব ৫০০০ টাকা পাঠাবেন। আপনার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইল। ইতি- | |
৪। বিদায় সম্ভাষণ | আপনার স্নেহের | |
৫। পত্র প্রেরকের স্বাক্ষর | এনামুল | |
৬। পত্র প্রাপকের ঠিকানা | প্রেরক এনামুল কবির গুলশান, ঢাকা-১২১৪ |
প্ৰাপক মোঃ শামসুল হক চৌধুরী পাড়া, কুমিল্লা |
ব্যক্তিগত পত্রের উদাহরণ :
১। বাবার কাছে টাকা চেয়ে অথবা বই কেনার টাকা চেয়ে পত্র লিখন [২টি ]
২। জন্মদিনের নিমন্ত্রণ জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি (খাম সহ )
৩। (খাম সহ) ঐতিহাসিক স্থানের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে পত্র
৪। বনভোজনের আমন্ত্রণ জানিয়ে বন্ধুর কাছে পত্র - খাম আঁকা সহ
৫। বার্ষিক পরীক্ষার প্রস্তুতি জানিয়ে বাবা, মা এবং বন্ধুকে পত্র লিখন