কোষ (cell) প্রাচীর উদ্ভিদ কোষের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এটি মৃত বা জড়বস্তু দ্বারা গঠিত। এর রাসায়নিক গঠন বেশ জটিল। এতে সেলুলোজ, হেমিসেলুলোজ, লিগনিন, পেকটিন, সুবেরিন নামক রাসায়নিক পদার্থ থাকে। তবে ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীর প্রোটিন ও লিপিড দ্বারা গঠিত।
সংজ্ঞা :- জড় ও শক্ত যে প্রাচীর দিয়ে উদ্ভিদ কোষ পরিবেষ্টিত থাকে তাকে কোষ প্রাচীর বলে।
কোষ প্রাচীর চিত্র:-
কোষ প্রাচীরের গঠন :-
কোষ প্রাচীরের স্তর | রাসায়নিক উপাদান |
---|---|
মধ্য পর্দা | পেকটিক এসিড (অধিক পরিমাণে থাকে), ক্যালসিয়াম পেকটেট, ম্যাগনেসিয়াম পেকটেট (এদের একত্রে প্রাচীর পেকটিন বলে) এবং প্রোটোপেকটিন (অল্প পরিমাণে থাকে)। |
প্রাথমিক প্রাচীর | প্রাথমিক সেলুলোজ, গ্লাইকোপ্রোটিন, হেমিসেলুলোজ (এতে Xylans, Arabans ও Galactans থাকে)। |
গৌণ প্রাচীর | সেলুলোজ, লিগনিন, কিউটিন, সুবেরিন, মোম, ক্যালসিয়াম অক্সালেট, অজৈব লবণ ইত্যাদি । |
কোষ প্রাচীর এর কাজ -:
- কোষের সুনির্দিষ্ট আকৃতি প্রধান করা।
- বাহিরের আঘাত হতে ভিতরের সজীব বস্তুটিকে রক্ষা করা।
- প্রয়োজনীয় শক্তি এবং দৃঢ়তা প্রদান করা।
- খনিজ লবণ ও পানি শোষণ ও পরিবহনে সহায়তা করা।
- একটি কোষকে অন্য একটি কোষ হতে পৃথক করা।
আরও পড়ুন :- কোষ ঝিল্লি কাকে বলে? কোষ ঝিল্লির গঠন, কাজ, চিত্র বিস্তারিত
কোষ প্রাচীর ও কোষ ঝিল্লির মধ্যে পার্থক্য :-
কোষপ্রাচীর | কোষঝিল্লি / প্লাজমামেমব্রেন |
---|---|
১. কোষপ্রাচীর নির্জীব তথা জড় । | ১. কোষঝিল্লি সজীব। |
২.কোষপ্রাচীর উদ্ভিদ বৈশিষ্ট্য, প্রাণিকোষে থাকে না । | ২.কোষঝিল্লি উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয় প্রকার কোষে থাকে । |
৩. উদ্ভিদকোষের বহিঃস্থ আবরণ । | ৩.প্রাণিকোষের বহিঃস্থ আবরণ, কিন্তু উদ্ভিদ কোষে কোষ প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত । |
৪. প্রধানত সেলুলোজ নির্মিত। | ৪. প্রধানত প্রোটিন ও লিপিড নির্মিত। |
৫. শক্ত, ভেদ্য, কখনও কখনও অভেদ্য। | ৫.স্থিতিস্থাপক, বৈষম্যভেদ্য । |
৬. প্রধান কাজ হল কোষের আকার- আকৃতি নিয়ন্ত্রণ এবং কোষকে দৃঢ়তা প্রদান । | ৬. প্রধান কাজ হল কোষের ভেতর-বাইরে প্রয়োজনীয় বস্তুর চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং কোষস্থ প্রোটোপ্লাজমীয় অংশ সংরক্ষণ। |
কোষ প্রাচীর এর বৈশিষ্ট্য
প্রাথমিক কোষপ্রাচীরটি একস্তর বিশিষ্ট। মধ্য পর্দার উপর প্রোটোপ্লাজম নিঃসৃত কয়েক প্রকারের রাসায়নিক দ্রব্য জমে ক্রমশ গৌণ প্রাচীর সৃষ্টি হয়। এ প্রাচীর গঠনকালে মাঝে মাঝে ছিদ্র তৈরি হয়, যাকে কূপ বলে। কোষ (cell) প্রাচীর কোষকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করে । কোষকে দৃঢ়তা প্রদান করে।
কোষের আকার ও আকৃতি বজায় রাখে। পার্শ্ববর্তী কোষের সাথে প্লাজমোডেজমাটা সৃষ্টির মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে। পানি ও খনিজ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রাণীকোষে কোষপ্রাচীর থাকে না।
FAQs