সংজ্ঞা:- উদ্ভিদ কোষের সাইটোপ্লাজমে বিক্ষিপ্তাকারে ছড়িয়ে থাকা পর্দাবিশিষ্ট গোলাকার, ডিম্বাকার অনন্য আকার বিশিষ্ট যেসব অঙ্গাণু উদ্ভিদের খাদ্য প্রস্তুত, বর্ণ গঠনে এবং খাদ্য সঞ্চয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করে তাদেরকে প্লাস্টিড(plastid) বলে।
যেসব কোষে প্লাস্টিড নেই:- ছত্রাক,ব্যাকটেরিয়া, নীলাভ - সবুজ শৈবাল।
প্লাস্টিড এর প্রকারভেদ:-
প্লাস্টিড প্রধানত ৩ প্রকারঃ যথা -
(ক) লিউকোপ্লাস্ট।
(খ) ক্রোমোপ্লাস্ট।
(গ) ক্লোরোপ্লাস্ট।
প্লাস্টিডের মধ্যে ক্লোরোপ্লাস্ট সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
প্লাস্টিডের গঠন :-
প্লাস্টিড দ্বিএকক পর্দাবেষ্টিত কোশীয় অঙ্গাণু। রঞ্জক পদার্থের উপর ভিত্তি করে প্লাস্টিডকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। ১. লিউকোপ্লাস্ট। ২. ক্রোমোপ্লাস্ট । ৩. ক্লোরোপ্লাস্ট।
লিউকোপ্লাস্ট
এরা হচ্ছে বর্ণহীন প্লাস্টিড; অর্থাৎ এদের দেহ থেকে কোনো ধরনের রঞ্জক তৈরি হয় না। তবে আলোকের সংস্পর্শে এলে লিউকোপ্লাস্ট ও ক্রোমোপ্লাস্ট বিশেষ করে ক্লোরোপ্লাস্ট-এ রূপান্তরিত হতে পারে। আবার আলোর অনুপস্থিতিতে এর বিপরীত অবস্থা ঘটতে পারে। এরা অর্ধবৃত্তাকৃতি, নলাকৃতি বা মূলাকৃতি হতে পারে এবং উদ্ভিদের যে অংশে সূর্যালোক পৌঁছে না, যেমন- ভূ-নিম্নস্থ কান্ড প্রভৃতি স্থানে থাকে ।
ক্রোমোপ্লাস্ট
এরা বিশেষ করে হলুদ ও লাল বর্ণের হয়ে থাকে এবং দেহাকৃতিও ভিন্নতর। উদ্ভিদের বর্ণময় অঞ্চলে ক্রোমোপ্লাস্ট থাকে। যেমন - ফুলের পাপড়ি, রঙিন ফল ও বীজ, গাজরের মূল ইত্যাদি।
ক্লোরোপ্লাস্ট
এরা সবুজ বর্ণের প্লাস্টিড। ক্লোরোফিল নামক বর্ণকণিকা ধারণের কারণেই এরা সবুজ হয়ে থাকে। তবে এদের সাথে অন্যান্য রঙের বর্ণকণিকাও কিছু পরিমাণে থাকে। উদ্ভিদের বিভিন্ন অঙ্গ সবুজ হওয়ার জন্য এটিই দায়ী। ক্লোরোপ্লাস্ট উচ্চ শ্রেণীর উদ্ভিদকোষে লেন্স আকৃতির হয়ে থাকে, তবে নিম্নশ্রেণীর উদ্ভিদকোষের আকৃতি বিভিন্ন রকম হয়। যেমন - তারকাকার, পেয়ালা আকৃতির, জালিকাকার, সর্পিলাকার ও আংটি আকৃতির ইত্যাদি ।
প্লাস্টিডের কাজ
- কোষে শ্বেতসার, চর্বি ও প্রোটিন জাতীয় খাবার সংগ্রহ করতে সাহায্য করে।
- পাতা রঙিন ও ফুলকে সৌন্দর্য বর্ধিত করে থাকে।
- কোষে ফটোফসফোরাইলেশন ও ফটোরেসপিরেশনে অংশগ্রহণ করে।
- সূর্যের আলোর উপস্থিতে সালোকসংশ্লেষন প্রক্রিয়ায় খাদ্য প্রস্তুত করে থাকে।
আরও পড়ুন