উপস্থাপনা :
সুজলা-সুফলা, শস্য শ্যামলা বলে বাংলাদেশের সুনাম অতি প্রাচীনকাল থেকেই। এর ভৌগোলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য, পাহাড় বেষ্টিত সবুজ মেঘলা, অরণ্যময় প্রকৃতি নানা ফুল উৎপাদনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। উত্তরের উচ্চভূমি মধ্যস্থলের সমভূমি এবং দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদী পরিবেষ্টিত ও নিম্ন সমতল ভূমি এখানে কত বিচিত্র রকম ফুলের সৃষ্টি করে চলেছে।
সহজলভ্যতা :
বাংলাদেশের বনে জঙ্গলে হাজারো নাম না জানা ফুলের প্রাচুর্য যেমন রয়েছে, তেমনি এখানে জনসাধারণের সযত্ন প্রচেষ্টায় জন্মে নানা প্রকার ফুল। তাছাড়া সরকারের উদ্যান উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে উন্নত জাতের ফুলের বীজ ও চারা সরবরাহ করার ব্যবস্থা রয়েছে। জনসাধারণ ঘরের আশে-পাশে, গোয়াল ঘরের কাছে, পুকুর পাড়ে যথেষ্ট ফুল উৎপাদন করতে পারে ।
প্রয়োজনীয়তা :
ফুল মানুষকে আনন্দ দেয়, সুখ শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করে। ফুলের হাসিকে শিশুর হাসির সাথে তুলনা করা চলে । পুষ্প মনোলোভা ও সৌন্দর্যের প্রতীক, বিনোদন, প্রয়োজনীয় উৎসব অনুষ্ঠানের সাথী, পূজা-পার্বণে অপরিহার্য, ঔষধ প্রস্তুতে সাহায্যকারী ভূমিকা পালন করে থাকে।
আরও পড়ুন :- বাংলাদেশের ফল - বাংলা রচনা | Sikkhagar
ফুলের রকম :
ষঢ়ঋতুর বৈচিত্র্যময় এ সোনার বাংলা। বিভিন্ন ঋতুতে এখানে নানারকম ফুল অপরূপ সৌন্দর্য ও সৃষ্টির প্রয়োজন মিটাতে এগিয়ে আসে। ফুলের মধ্যে গোলাপ, গন্ধরাজ, বেলী, হাসনাহেনা, বকুল, জুঁই, কেতকী, কামিনী, পদ্ম, পারুল, শাপলা, চাঁপা, গাঁদা, জবা, কুন্দ, সর্ষে, শিমুল, কাঞ্চন, রঞ্জন, চামেলী, কৃষ্ণচূড়া, কনকচাপা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য ।
এ ছাড়া কতকগুলো নাম না জানা ফুল বনে বনে ফুটে, বনেই ঝরে যায়। এদের রূপ-রস-গন্ধ বন্য কীট-পতঙ্গ ও পশুপাখিকে মুগ্ধ করে- তাদের মঙ্গল বিধান করে। যত্নসহকারে যে সকল ফুল উৎপাদন কম হয়, সেগুলোর সৌন্দর্যে মানুষ ও কীটপতঙ্গ মুগ্ধ, রূপ-রস- গন্ধে আমোদিত। মানুষের সুখে-দুঃখে, হর্ষ-বিষাদে, প্রেমে ভক্তিতে, রোগশোকে বন্ধুর মত কাজ করে বাংলাদেশের অতিযত্নে লালিত এসব ফুল।
উপসংহার :
বাংলাদেশ যেমন কৃষিপ্রধান দেশ তেমনি ফুলেরও দেশ। বাংলার ফুল যুগে যুগে বিদেশিদের আকৃষ্ট করেছে। বাংলাদেশের জলবায়ু, আবহাওয়া ও মাটি নানারকম ফুল উৎপাদনের উপযোগী। বস্তুত বাংলাদেশে এখন প্রচুর পরিমাণে ফুলের চাষ হচ্ছে। সারা বছরই ফুল পাওয়া যায়-বিশেষ করে রজনীগন্ধা ও নানাজাতের গোলাপ ।