উপস্থাপনা : আল্লাহর একত্ববাদ এবং তার নির্দেশিত বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বিশ্বাস স্থাপন এবং বিধানাবলি মান্য করার নাম ইসলামী আকিদা। নির্ভেজাল ইসলামী আকিদা অর্জন এবং তদনুযায়ী আমল করার মাধ্যমেই রয়েছে ইহ ও পরকালীন সাফল্য। নিম্নে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো ।
ইসলামী আকিদার উৎসসমূহ :
ইসলামী আকিদার তথা আকাইদের মৌলিক বিষয় বা উৎসসমূহ হলো সর্বমোট ছয়টি। যথা-
১. الإِيمَانُ بِاللَّهِ وَحْدَهُ তথা আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস।
২. الإِيمَانُ بِالْمَلَائِكَةِ তথা ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস ।
৩. الإِيمَانُ بِالْكُتُبِ তথা আসমানী কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাস ।
৪. الإِيمَانُ بِالرُّسُلِ তথা নবী রাসূলগণের ওপর বিশ্বাস ।
৫. الإِيمَانُ بِالْيَوْمِ الْآخِرِ তথা আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস ।
৬. الإِيمَانُ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ তথা তাকদীরের ভালো মন্দের প্রতি বিশ্বাস।
পবিত্র কুরআনুল কারীম ও হাদীসে এসব উৎস সম্পর্কে স্পষ্ট বিবরণ এসেছে। যেমন আল্লাহ তায়ালার বাণী-
لَيْسَ البِرَّ أَنْ تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلكِنَّ الْبِرَّ مَنْ أمَنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ .
রাসূল (স) ইরশাদ করেন-
الْإِيمَانُ أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ
অর্থাৎ, ঈমান হলো-
১. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, ২. তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি বিশ্বাস, ৩. তাঁর নাযিলকৃত কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাস, ৪. তার রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস, ৫. আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস এবং ৬. তাকদীরের ভালো-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।
আরও পড়ুন : আকাইদের মৌলিক বিষয়, মূলনীতি বা উৎস কয়টি ও কি কি ব্যাখ্যা সহ
ইসলামী আকিদার গুরুত্ব :-
১. নিরঙ্কুশভাবে আল্লাহর ইবাদত
ইসলামী আকিদা প্রতিটি মুসলিম কে নিরঙ্কুশভাবে এবং শিরকমুক্তভাবে আল্লাহর ইবাদত করতে শেখায়। মানুষ সৃষ্টির ব্যাপারে মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যও তাই।
২. দৃঢ় ঈমান অর্জন
ইসলামী আকীদার অধ্যায়ন মুসলমানদেরকে দৃঢ় ও নির্ভেজাল ঈমানের অধিকারী হতে সহায়তা করে। এর ফলে মানুষ পার্থিব ও পরকালীন জীবনে সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে।
৩. মুসলিম উম্মাহর অখন্ড ঐক্য অর্জন
নির্ভেজাল ইসলামী আকিদার ফলে মুসলিম উম্মাহের অখণ্ড ঐক্য সৃষ্টি হতে পারে। মুসলিম উম্মাহর চিন্তার বৈসাদৃশ্য দ্বন্ধ ও দর্শনগত পার্থক্য থেকে মুক্ত থাকতে সক্ষম হয়। এর ফলে মুসলমানদের অভ্যন্তরীণ সংঘাত, বিতর্ক ও হানাহানি দূর হতে পারে। মুসলমানদের জীবন ও সম্পদ পরস্পরের নিকট মর্যাদাবান হতে পারে।
৪.পরকালীন শাস্তি থেকে পরিত্রাণ
বিশুদ্ধ ইসলামী আকীদা মানুষকে কেয়ামতের ভয়াবহ শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পথ নির্দেশনা প্রদান করে।
৫. একত্ববাদের যথার্থ শিক্ষা :-
আকাঈদশাস্ত্র একত্ববাদের যথার্থ শিক্ষা প্রদান করতে সাহায্য করে। এর দ্বারা মানুষ মহান আল্লাহর সত্তা, গুণাবলীর ব্যাপ্তি ও তার প্রতি বিশ্বাসের দাবি ইত্যাদি সবিস্তরে জানতে পারে। ফলে মানুষ পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ সম্ভাব্য সকল শিরক থেকে মুক্ত থেকে নিরঙ্কুশ ভাবে মহান আল্লাহর ইবাদত করতে সক্ষম হয়।