ভূমিকা :
বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ১৯৭১ সালে এ দেশের ত্রিশ লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছিল। তাদের মধ্যে ৭ জন শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সরকার অনন্য বীরত্বের জন্য 'বীরশ্রেষ্ঠ' খেতাবে ভূষিত করেছে। এটি মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য দেওয়া সর্বোচ্চ সম্মান।
এই ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠের একজন হলেন মুন্সী আব্দুর রউফ। দেশকে শত্রুমুক্ত করার জন্য মুন্সী আব্দুর রউফের আত্মত্যাগ স্বাধীনতার ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল হয়ে আছে।
জীবনবৃত্তান্ত :
১৯৪৩ সালে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারীর সালামতপুর গ্রামে মুন্সী আব্দুর রউফের জন্ম। পিতার সাংসারিক সমস্যার কারণে তিনি বেশি পড়ালেখা করতে পারেননি। জীবিকার তাগিদে তিনি তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস্ (বর্তমানে বিজিবি)-এ সৈনিক হিসেবে যোগ দেন ।
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব :
মুক্তিযুদ্ধের সময় এপ্রিল মাসের ঘটনা। হানাদার বাহিনীকে ঠেকাতে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কয়েকশ সৈনিক রাঙামাটি-মহালছড়ি নৌপথে অবস্থান নেন। এদের মধ্যে ছিলেন ল্যান্সনায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ। তাদের হটিয়ে দিতে হানাদার বাহিনী সাতটি স্পিডবোট ও দুটি লঞ্চ নিয়ে হামলা চালায়।
আরও পড়ুন :- একজন বীরশ্রেষ্ঠ - রচনা ৩য়,৪র্থ ও ৫ম শ্রেণি
অনেক শক্তিশালী অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানিরা মুক্তিবাহিনীর অবস্থান বুঝতে পেরে প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। আব্দুর রউফ তখন সহযোদ্ধাদের সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে একাই মেশিনগান চালাতে থাকেন। তাঁর নির্ভুল নিশানায় হানাদার বাহিনীর স্পিডবোটগুলো ডুবে যায় এবং দুটি লঞ্চ পালিয়ে যায়।
শহিদ হওয়ার ঘটনা;
নিশানার বাইরে গিয়ে পাকিস্তানি সৈন্যরা লঞ্চ থেকে মর্টারের গোলাবর্ষণ করতে শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ ভীত না হয়ে গুলি চালাতে থাকেন। এমন সময় হঠাৎ একটা গোলা এসে আঘাত করে তাঁকে। ফলে বীর মুক্তিযোদ্ধার তাজা রক্তে লাল হয় বাংলার মাটি। তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন।
উপসংহার :
মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের মাধ্যমে মুন্সী আব্দুর রউফ বাংলাদেশের মানুষের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। দেশের স্বাধীনতার জন্য সর্বোচ্চ অবদানের জন্যই জাতি তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করে ।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা