সংজ্ঞা :- সাইটোপ্লাজমে (Cytoplasm) অবস্থিত যে অঙ্গাণু সমূহ হাইড্রোলাইটিক এর এনজাইমের আধার হিসেবে কাজ করে তাকে লাইসোসোম বলে।
লাইসোজোম এর গঠন
ভৌত গঠন :
লাইসোজোম সাধারণত বৃত্তাকার, এদের ব্যাস সাধারণত ০.২-০.৮ মাইক্রোমিলি। বৃক্ক কোষের লাইসোসোম অপেক্ষাকৃত বড় হয়ে থাকে। প্রতিটি লাইসোসোম একটি দ্বিস্তরবিশিষ্ট আবরণী দ্বারা আবদ্ধ থাকে। এদের ভ্যাকুওল ঘন তরলে পূর্ণ থাকে ।
রাসায়নিক গঠন :
লাইসোজোম আবরণী ঝিল্লি লিপো-প্রোটিন নির্মিত। ঝিল্লি দ্বারা আবদ্ধ অবস্থায় এতে প্রায় ৪০ ধরনের এনজাইম থাকে। উল্লেখযোগ্য এনজাইমগুলো হলো DNAase, RNAase, অ্যাসিড লাইপেজ, এস্টারেজ, স্যাকারেজ, লাইসোজাইম ইত্যাদি ।
লাইসোজোম এর কাজ:-
(i) এরা ফ্যাগোসাইটোসিস (Phagocytosis) পদ্ধতিতে জীবাণু ধ্বংস করে।
(ii) বিগলনকারী এনজাইমসমূহকে আবদ্ধ করে রাখার পর এটি কোষের অন্যান্য অঙ্গাণুকে রক্ষা করে।
(iii) লাইসোসোম অন্তঃকোষীয় পরিপাক কাজে সাহায্য করে।
(iv) তীব্র খাদ্যাভাবের সময় এর প্রাচীর ফেটে যায় এবং আবদ্ধকৃত এনজাইম বের হয়ে কোষের অন্যান্য অঙ্গাণুগুলো বিনষ্ট করে দেয়। এ কাজকে বলে স্ব-গ্রাস বা অটোফ্যাগী (autophagy)।
এভাবে সমস্ত কোষটিও পরিপাক হয়ে যেতে পারে। একে বলা হয় অটোলাইসিস। এরা জীবদেহের অকেজো কোষসমূহকে অটোলাইসিস পদ্ধতিতে ধ্বংস করে বলে এদের আত্মঘাতী থলিকা বা স্কোয়াড (Suicidal bag or squad) বলা হয়।
(vi) কোষ বিভাজনকালে এরা কোষীয় ও নিউক্লীয় আবরণী ভাঙতে সাহায্যে করে। এরা কোষে কেরাটিন প্রস্তুত করে।
আরও পড়ুন :- রাইবোজোম কি? রাইবোজোম এর গঠন, কাজ, অবস্থান। অঙ্গাণু
লাইসোজোম কে আত্মঘাতী থলি বলে কেন ?
কোষের কোনো ক্ষতি হলে বা খাদ্যাভাব দেখা দিলে লাইসোজোম উপাদান ও কোষ অঙ্গাণুগুলোকে বিগলিত করে ধ্বংস করে দেয়। এ প্রক্রিয়াকে অটোফ্যাগি বলে । এজন্য লাইসোজোমকে কোষের 'সুইসাইডাল স্কোয়াড' বা আত্মঘাতী থলি বলে ।
লাইসোজোম এর বৈশিষ্ট্য
- i) এতে অন্তঃকোষীয় পরিপাক সংগঠিত হয় ।
- ii) ফ্যাগোসাইটোসিস হয় ।
- iii) অটোলাইসিস বলা হয়: অটোফেগী
- iv) একে সুইসাইডাল স্কোয়াড বা আত্মঘাতী নালিকা বলা হয়।