রচনা সহজ : দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান [ Class 6, 7, 8, 9, 10 ]

(toc) Table Of Contens

ভূমিকা: 

আধুনিক যুগ বিজ্ঞানের যুগ। মানবজীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের দান অনস্বীকার্য। বিজ্ঞানই আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাত্রাকে সহজ থেকে সহজতর করে দিয়েছে। সারা বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। প্রতিটি মুহূর্তের খবরাখবর আমরা ঘরে বসে জানতে পারছি। চিকিৎসা, কৃষি, মহাকাশ গবেষণা, পারমাণবিক শক্তি সর্বোপরি মানবজীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য শুধু বিজ্ঞানের দ্বারাই সম্ভব হয়েছে।

প্রতিদিনের সঙ্গী: 

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে চা তৈরি করার জন্যে আমরা, গ্যাস ব্যবহার করি। রান্নার কাজে যাতে এটিকে ব্যবহার করা সম্ভব হয় তার জন্যে এই বায়বীয় পদার্থটিকে সিলিন্ডারের ভেতর ভরে রাখা হয়েছে। যাই হোক, এই জ্বালানি জ্বালিয়ে দিনের যাত্রা আরম্ভ করা গেল। 

কিন্তু যা দিয়ে জ্বালালাম সেই লাইটারটিও কিন্তু বিজ্ঞানের মাধ্যমে পৌঁছেছে আমাদের হাতে। আমরা প্রতিদিন ঘরে যে আলো জ্বালাই এই আলো হলো— বিজলি বাতি। যে বিদ্যুৎ আকাশে ছিল তাকে আমরা নামিয়ে এনেছি আমাদের প্রতিদিনের সংসারে। এভাবেই বিজ্ঞান আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়েছে।

শৌখিন ব্যবহার: 

আমাদের ঘরে যে ইলেকট্রিক পাখা চলছে, বিজ্ঞানের অবদান না থাকলে তা কি আমরা পেতাম? কারও কারও ঘরে রয়েছে এয়ারকুলার । বলাবাহুল্য সেটিও দিয়েছে বিজ্ঞান। রেডিও, টেলিভিশন, ফ্রিজ, কম্পিউটার এগুলোও আজ আমাদের নিত্যসঙ্গী। রেডিও আমরা পেয়েছি অনেকদিন আগেই। পরে এসেছে টেলিভিশন এবং রেফ্রিজারেটার। টেলিভিশন প্রতিদিন আমাদের চোখকে, আমাদের দৃষ্টিকে নন্দিত করছে। 
শুধু থিয়েটার-সিনেমা নয়, জ্ঞান-বিজ্ঞানের নতুন নতুন তথ্যচিত্র সে পৌঁছে দিচ্ছে আমাদের ঘরে। আমরা বিছানায় বসেই দেখতে পাই আফ্রিকার জঙ্গল। রেফ্রিজারেটর আমাদের সাংসারিক প্রয়োজনে বড়ই জরুরি। শাক-সবজি, মাছ, ডিম থেকে আরম্ভ করে ওষুধপত্র প্রভৃতি নিত্য প্রয়োজনীয় সাংসারিক দ্রব্যকে সতেজ রাখছে এ যন্ত্রটি। আমাদের রান্না করা খাবারও রেখে দেওয়া হয় এর ভেতর। তাতে বাঁচে আমাদের বাড়তি শ্রম সাশ্রয় হয় জ্বালানি । কম্পিউটার বিশ্বকে এনে দিয়েছে হাতের মুঠোয়।

জীবনের নানা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান:

মোটরগাড়ি, মোটর সাইকেল ইত্যাদি আমাদের প্রাত্যাহিক জীবনকে করেছে সহজ ও গতিময়। আমরা যে দু চাকার সাইকেল ব্যবহার করছি এটিও বিজ্ঞানের দান। আমরা যে পাকা রাস্তা বানিয়েছি তার ভেতরেও কাজ করছে বিজ্ঞানের কারিগরি জ্ঞান। টেলিফোন-টেলিগ্রাফ আজ আমাদের প্রতিদিনের প্রতি মুহূর্তের সঙ্গী। 

আমরা ঘরে বসে যে প্রতিদিন দূর-দূরান্তের চিঠিপত্র পাই, তা সম্ভব হতো না যদি না আমরা বিজ্ঞানের সাহায্য পেতাম। এই যে আমরা প্রতিদিন নানা-কাজে সর্বদা কলম দিয়ে লিখি তাও সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞানের সহায়তায়। সিনেমা, থিয়েটার, চিত্র-স্থাপত্য-ভাস্কর্য ইত্যাদি তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণে বহু বৈজ্ঞানিক উপকরণ ব্যবহার করে চলেছি আমরা নীরবে ।

আরও পড়ুন :- কৃষি কাজে বিজ্ঞান – রচনা [ Class – 6, 7, 8, 9 ,10 ] – PDF

বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে: 

বিদ্যুৎ বিভ্রাট বা লোডশেডিং হলে টের পাওয়া যায় বিদ্যুৎ আমাদের কতখানি উপকারে আসে। বিদ্যুৎ না থাকলে পাখা চলে না, ফ্রিজ বন্ধ, পাম্প চলে না, এয়ারকুলার অকেজো হয়ে পড়ে থাকে । বিদ্যুৎ এগুলো সচল রাখে। এভাবে বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখা আমাদের সেবা করে চলেছে ।

কৃষিক্ষেত্রে: 

প্রতিদিনের গ্রামীণ জীবনেও বিজ্ঞানের দান অফুরন্ত। যে চাষি ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করছে, সে বিজ্ঞানের জ্ঞানকেই কাজে লাগাচ্ছে। এ ছাড়া রয়েছে উন্নত মানের সার। গাছের রোগ নিরাময় ও পরিচর্যার জন্যে আমরা ব্যবহার করছি নানা কীটনাশক। এর ভেতরেও রয়েছে বিজ্ঞানের জ্ঞান ।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে:

চিকিৎসার জন্যে প্রতিদিন আমরা যে নানা ধরনের ওষুধ ব্যবহার করছি তাতেও রয়েছে বিজ্ঞানের অবদান। বলার অপেক্ষা রাখে না, বিজ্ঞান যতই উন্নততর হচ্ছে, আমাদের প্রতিদিনের জীবনে তা ততই সেবক হয়ে এগিয়ে আসছে।

উপসংহার: 

প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞান সত্যি সত্যিই আমাদের সেবক। এ ধরনের সেবক সহজে পাওয়া যায় না। হাজার হাজার টাকা বেতন দিলেও এমন অনুগত সেবক কখনো মেলে না। বিজ্ঞান এখন আমাদের প্রাত্যাহিক জীবনের জন্য অপরিহার্য।

Thanks!
Your download will start in few seconds…
If not then,

Click Here


Leave a Comment