গরু - রচনা [ Class 1, 2, 3, 4, 5, 6 ]

গরু রচনা - Class 1, 2

সূচনা 

গরু একটি গৃহপালিত প্রাণী। এরা খুব সহজে পোষ মানে। গরু সবচেয়ে উপকারী গৃহপালিত পশুগুলোর অন্যতম ।

বর্ণনা

গরু চতুষ্পদ স্তন্যপায়ী প্রাণী। এর দুটি কান, দুটি চোখ ও একটি নাক আছে। গরুর মাথা বড় ও মুখ লম্বাটে হয়। মাথায় দুটি শিং ও পেছনে একটি লম্বা লেজ থাকে। এরা শিং দিয়ে আত্মরক্ষা করে আর লেজ দিয়ে মশা-মাছি তাড়ায়। 

গরুর সারা শরীর ছোট লোমে ঢাকা থাকে। গরু চার-পাঁচ ফুট উঁচু এবং ছয়-সাত ফুট লম্বা হয়। এ প্রাণীটি সাধারণত ১৮ থেকে ২২ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে । আমাদের দেশে সাদা, কালো, বাদামি, ধূসর ইত্যাদি নানা রঙের গরু দেখতে পাওয়া যায় ।

স্বভাব ও খাদ্য

গরু অত্যন্ত নিরীহ এবং শান্ত। মার খেলেও সাধারণত নীরবে সহ্য করে। তবে ষাঁড় গরু উত্তেজিত হলে অনেক সময় শিং দিয়ে আক্রমণ করে থাকে। গরু ঘাস, লতাপাতা, ভুসি, খড়, ভাতের মাড় ইত্যাদি খায়।

আরও পড়ুন :- বিড়াল বা আমার পোষা প্রাণী বিড়াল : রচনা

প্রাপ্তিস্থান

বিশ্বের প্রায় সব দেশেই গরু পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, আমেরিকা ও নিউজিল্যান্ডের গরু সারা বিশ্বে দুধ ও মাংসের জন্য বিখ্যাত ।

উপকারিতা ও অপকারিতা

গরু থেকে আমরা পুষ্টিকর দুধ ও মাংস পাই। গরুর চামড়া দিয়ে জুতা, ব্যাগ এবং শিং দিয়ে বোতাম, চিরুনি ইত্যাদি তৈরি হয়। গরুর গোবর উন্নত মানের জৈব সার। এর হাড় ও অন্যান্য উচ্ছিষ্টও বিভিন্ন কাজে লাগে। তবে গরুর মাংস বেশি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। বিশেষ করে বয়স্ক ও হৃদরোগীদের জন্য ।

উপসংহার

গরু আমাদের অনেক উপকার করে। আমাদেরও উচিত এ নিরীহ প্রাণীটির প্রতি সহানুভূতিশীল এবং যত্নবান হওয়া ।

গরু রচনা - Class 3, 4

ভূমিকা

গরু গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু। এটি অতিশয় উপকারী প্রাণী। কৃষিপ্রধান দেশে গরু কৃষকের পরম বন্ধু যেসব প্রাণী মানুষের উপকার করে গরু তাদের অন্যতম।

আকৃতি

গরু সাধারণত তিন থেকে চার হাত পর্যন্ত লম্বা ও আড়াই থেকে তিন হাত পর্যন্ত উঁচু হয়ে থাকে। এর সারা দেহ ছোট ছোট লোমে ঢাকা থাকে। এর মুখ লম্বা। এর চারটি পা, দুটি কান, দুটি চোখ, দুটি শিং ও একটি লম্বা লেজ আছে। এর পায়ের খুর দ্বিখণ্ডিত।

বর্ণ

গরু নানা বর্ণের হয়ে থাকে। কোনোটি কালো, কোনোটি সাদা, কোনোটি লাল আবার কোনোটি মিশ্রবর্ণের। 

প্রকৃতি  

গরু শান্ত স্বভাবের নিরীহ প্রাণী। এরা সহজে কাউকে আঘাত করে না। কেউ বিরক্ত করলে এরা শিং দিয়ে তাড়া করে। গাভী দশমাস গর্ভধারণ করে একটি বাচ্চা প্রসব করে। বাচ্চা এদের খুবই প্রিয়। হাম্বা হাম্মা শব্দ করে এরা এদের অনুভূতি প্রকাশ করে। কেউ এদের গলায় হাত বুলিয়ে আদর করলে এরা তার অনুগত হয়। 

আরও পড়ুন :- রচনা : আমার প্রিয় ফল - আম 

খাদ্য

গরু তৃণভোজী প্রাণী। এরা ঘাস, লতা-পাতা, খড়, খৈল, ভুসি প্রভৃতি খায়। প্রাথমিকভাবে এরা খাদ্য বস্তু দ্রুত গিলে ফেলে এবং অবসর সময়ে তা পুনরায় মুখে এনে ভালো করে চিবিয়ে খায়। একে জাবর কাটা বলে। 

প্রাপ্তিস্থান  

পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই গরু আছে। তবে দেশ ভেদে এদের আকার ছোট-বড় হয়। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, হল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড প্রভৃতি দেশের গরু উন্নত জাতের এবং বেশি দুধ দেয়। বিশ্বের বিভিন্ন অরণ্যে এখনও বন্য গরু দেখা যায়। এদের মধ্যে নীল গাই অন্যতম ৷

উপকারিতা

গরুর মতো উপকারী জন্তু পৃথিবীতে আর নেই। এর দুধ অতি পুষ্টিকর খাদ্য। দুধ থেকে ক্ষীর, ছানা, মাখন, দই, পনির প্রভৃতি পুষ্টিকর ও মুখরোচক খাবার তৈরি হয়। এর মাংস আমাদের প্রিয় খাদ্য। এর গোবর উৎকৃষ্ট সার। এর চামড়া দিয়ে জুতা, ব্যাগ প্রভৃতি তৈরি হয়। এর শিং ও হাড় দিয়ে চিরুনী, বোতাম প্রভৃতি তৈরি হয়। বলদ গরু লাঙ্গল ও গাড়ি টানে।

উপসংহার

গরু খুব নিরীহ এবং শান্ত প্রাণী। কোনো রকম প্রতিদানের আশা না করেই নীরবে এরা মানুষের উপকার করে। কৃষিপ্রধান এই সোনার বাংলায় গরু আমাদের জাতীয় সম্পদ। আমাদের গোচারণ ভূমির খুবই অভাব। পশু চিকিৎসাও অপ্রতুল। সব সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে এদের প্রতি সদয় হওয়া ও সঠিক যত্ন নেয়া আমাদের একান্ত দরকার।

গরু রচনা - Class 5, 6

উপস্থাপনা

আমাদের গৃহপালিত প্রাণীর মধ্যে গরু অন্যতম। বিভিন্নভাবে গরু আমাদের উপকারে আসে। এটি খুব শান্তশিষ্ট ও প্রভুভক্ত প্রাণী। এটি স্তন্যপায়ী, তৃণভোজী ও চতুষ্পদ জন্তু । 

গরুর আকৃতি

গরু সাধারণত উচ্চতায় ১.৪ মিটার থেকে ১.৫ মিটার এবং লম্বায় ২.৪ মিটার পর্যন্ত হয়। এদের সমস্ত শরীর ঘন লোমে ঢাকা থাকে। গরুর দুটি চোখ, দুটি শিং, দুটি কান ও একটি লম্বা লেজ আছে। লেজের অগ্রভাগে এক গুচ্ছ চুল থাকে এবং এটা দ্বারা এরা মশা-মাছি তাড়ায়। শিং দ্বারা এরা আত্মরক্ষা করে। 

এদের পায়ের খুর দ্বিখণ্ডিত। গরুর মুখের উপরের চোয়ালে কোনো দাঁত নেই; কিন্তু নিচের চোয়ালে এক পাটি দাঁত আছে। গরুর মুখ লম্বা। এদের গলার নিচে সবটুকু জুড়ে নরম মাংসল চামড়া ঝুলতে থাকে। একে ‘গলকম্বল' বলে। লাল, কালো, সাদা, ধূসর প্রভৃতি রঙের গরু দেখতে পাওয়া যায়।

প্রকৃতি  

গরু নিরীহ প্রাণী। বিরক্ত না করলে এরা কাউকে আঘাত করে না। গাভী প্রতিবছর একটি করে বাচ্চা দেয়।

আরও পড়ুন :- গাছ আমাদের বন্ধু - বাংলা রচনা

বাচ্চাকে সে খুব ভালোবাসে। গরুর বাচ্চাকে বাছুর বলা হয় বিশ্রামের সময় এরা ভক্ষিত খাদ্য আবার মুখে এনে চিবোয়। একে 'জাবর কাটা' বা 'চর্বিতচর্বণ প্রক্রিয়া' বা 'রোমন্থন' করা বলে ।

খাদ্য  

গরুর প্রধান খাদ্য ঘাস । এছাড়াও গরু খড়, পাতা, ভুসি, ভাতের মাড়, চালের কুঁড়া, খইল প্রভৃতি খেয়ে থাকে। বেশি খাবার খাওয়ালে এরা বেশ মোটাতাজা হয় ৷

প্রাপ্তিস্থান  

গরু পৃথিবীর সব দেশেই পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তান, ভারত, থাইল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় গরু পাওয়া যায় ।

উপকারিতা : 

গরু অত্যন্ত উপকারী জন্তু। গরুর দুধ পুষ্টিকর খাদ্য। গরুর দুধজাত বহু উপাদেয় খাদ্য আমরা খেয়ে থাকি। তন্মধ্যে ঘি, মাখন, দধি, মিষ্টান্ন, খির, পায়েস প্রভৃতি অন্যতম। গরু থেকে আমরা গোশত পাই। গরু আমাদের কৃষিকাজের প্রধান অবলম্বন। 

গরুর গোবরে উৎকৃষ্ট মানের সার, চামড়া হতে সুটকেস, জুতা, ব্যাগ ইত্যাদি তৈরি হয়। এর হাড় হতে তৈরি হয় চিরুনি, বোতাম, ছুরির বাট ইত্যাদি। গরুর চামড়া বিদেশে রপ্তানি করে আমরা প্রতিবছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করি। 

উপসংহার  

মানুষের জন্য গরুর মতো উপকারী গৃহপালিত পশু আর নেই। কৃষিকাজে এর অবদান তুলনাহীন। গরু আমাদের জাতীয় সম্পদ। তাই সবারই উচিত গরুর যথাযথ যত্ন নেওয়া।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad