প্রবন্ধ রচনা : শহীদ জিয়াউর রহমান

ভূমিকা : 

পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ জন্মগ্রহণ করেছেন তার মধ্যে যুগে যুগে বিভিন্ন দেশে এমন কিছু মানুষের আবির্ভাব ঘটেছে যাঁরা জাতির দুর্দিনে এগিয়ে এসেছেন হাল ধরার জন্যে, যাঁদের চরিত্র ও আদর্শ জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম।

জন্ম ও বংশ পরিচয় : 

শহীদ জিয়াউর রহমান বগুড়া জেলার বাগবাড়িতে ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাল্য নাম ছিল কমল। কমলের পিতার নাম মনসুর রহমান ও মাতার নাম জাহানারা খাতুন। তিনি ছিলেন তাঁর পিতার দ্বিতীয় ছেলে।

শিক্ষা জীবন : 

তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল কলকাতায় চাচার বাসা থেকে। জিয়াউর রহমান ও তাঁর ভাই রেজাউর রহমান কলকাতার হেয়ার স্কুলের ছাত্র ছিলেন। জিয়াউর রহমানের আগ্রহ ছিল ডাক্তারি পড়ার দিকে। কিন্তু ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তির্ণ হওয়ার পর তিনি ডাক্তারী পড়ার ইচ্ছা বাদ দিয়ে সেনা বাহিনীতে যোগদান করেন।

কর্মজীবন : 

জিয়াউর রহমান ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের এবোটাবাদ ক্যাডেট কলেজের একজন খ্যাতিমান ছাত্র। দেশ-বিদেশে বহু সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তিনি সামরিক গোয়েন্দা বিভাগে যোগদান করেন ১৯৬৩ সালে। ১৯৬৫ সালে পাক ভারত যুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন আলফা ব্যাটালিয়ান কোম্পানির কমান্ডার। ১৯৬৯ সালের এপ্রিল মাসে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের দ্বিতীয় ব্যাটালিয়ানের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড নিযুক্ত হন। 

আরও  পড়ুন : রচনা : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান - ২০০ শব্দের

১৯৭০ সালে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অষ্টম ব্যাটালিয়ানের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড নিযুক্ত হন। এ পদে থাকা অবস্থায়ই ১৯৭১ সালে ২৬ শে মার্চ চট্টগ্রাম কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের ঘোষণা পত্র পাঠ করেন তিনি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি সেনা বাহিনীর উচ্চপদ লাভ করেন।

তাঁর অবদান : 

১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতার সৈনিকদের নেতৃত্বে আস্থাবান হয়ে ওঠেছিল। পরবর্তীকালে এ আস্থাই স্থিতিশীল সরকার গঠনে জিয়াউর রহমানকে সাহায্য করেছিল।

প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রাণপণ চেষ্টায় গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ ও সেচের ব্যবস্থা, সবুজ বিপ্লবের মধ্য দিয়ে কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়ন এবং স্বনির্ভর আন্দোলন সার্থকতা লাভ করেছিল। স্বনির্ভর অর্থনীতি, নিরক্ষরতা দূরীকরণ ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে দেশবাসীর জীবনমানের উন্নয়নে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি। দেশ বিদেশের সাথে গড়ে তুলেছিলেন নিবিড় ভ্রাতৃত্বের বন্ধন।

মৃত্যু : 

১৯৮১ সালে ৩০শে মে জিয়াউর রহমানকে চট্টগ্রামে হত্যা করা হয়। আদর্শচ্যুত কতিপয় দুষ্কৃতিকারীর হাতে নিহত হয়েছেন তিনি। সে সময় থেকেই তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান নামে পরিচয় লাভ করেন।

উপসংহার : 

প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন নিঃস্বার্থ একজন আদর্শ মানুষ। দেশ ও জাতির উন্নতির জন্যে তিনি নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে গেছেন। আজ জিয়াউর রহমান সশরীরে নেই কিন্তু আছে তাঁর আদর্শ, আছে তাঁর ব্যক্তিত্ব ও আন্তরিকতার পরিচয়। তিনি বেঁচে থাকবেন এদেশের কোটি মানুষের হৃদয়ে।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad