বাক্য গঠনের নিয়ম।একটি সার্থক বাক্যের কয়টি গুন বা অংশ থাকে উদাহরণ সহ

সংজ্ঞা : অর্থবোধক কয়েকটি পদ বা শব্দ মিলিত হয়ে বক্তার মনের ভাব সম্পূর্নরূপে প্রকাশ করলে তাকে বাক্য বলে। 

বাক্য গঠনের নিয়ম :

বাক্য গঠনের নিয়ম বলতে বাক্যে কোন পদ কোন পদের আগে বসবে বা পরে বসবে তাকে বোঝায়। একে ব্যাকরণের ভাষায় পদবিন্যাস বা পদক্রম বলে।

বাক্য গঠনকালে নিম্নলিখিত নিয়মগুলো মনে রাখতে হবে :

১। বাক্যের প্রথমে কর্তা এবং বাক্যের শেষে সমাপিকা ক্রিয়া বসবে। যেমন-বালকটি (কর্তা) হাসছে (সমাপিকা ক্রিয়া) ।

২। প্রতি বাক্যে একটি ক্রিয়া বসবেই। ক্রিয়া ছাড়া বাক্য হয় না। যেমন-বালকটি হাসছে (ক্রিয়া) । 

৩. অসমাপিকা ক্রিয়া সমাপিকা ক্রিয়ার আগে বসে। যেমন-আমি অজু করে নামাজ পড়ব।

৪। বাক্যে কর্মপদ থাকলে ক্রিয়াপদের আগে কর্মপদ বসবে। যেমন-সে ভাত (কর্মপদ) খায় (ক্রিয়াপদ) । 

৫। সম্বোধন পদ বাক্যের প্রথমে বা পরে বসে। যেমন- প্রভু, আমাকে জ্ঞান দাও ।

৬। অধিকরণ কারক কর্তার পরে ও ক্রিয়ার আগে কিংবা বাক্যের প্রথমে বসে। যেমন- বনে বাঘ থাকে।

আরও পড়ুন : বাক্য কাকে বলে?গঠন ও অর্থ অনুসারে বাক্য কত প্রকার ও কী কী উদাহরণ 

একটি সার্থক বাক্যের গুণাবলি, অংশ বা বৈশিষ্ট্য :

চাষাবিদগণের বিচারে একটি সার্থক বাক্য গঠনে বাক্যের মধ্যে অবশ্যই তিনটি গুণ বা শর্ত থাকতে হবে। যথা- 

১। আকাঙ্ক্ষা।

২। আসত্তি। 

৩। যোগ্যতা। 

১। আকাঙ্ক্ষা :

বক্তার আকাঙ্ক্ষা সম্পূর্ণ ব্যক্ত না হলে পূর্ণ বাক্য গঠন হয় না। যেমন- ‘আমি বই পড়ি’ একটি বাক্য। কিন্তু যদি বলা হয় আমি বই, তাহলে বাক্য পূর্ণ হবে না। কারণ এতে বক্তার বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে ব্যক্ত হয়নি, আরো কিছু শোনার আকাঙ্ক্ষা থেকে যায় । 

২। আসত্তি :

অর্থসঙ্গতি রেখে যথাস্থানে পদ স্থাপনের নাম আসত্তি। যেমন- রহিম প্রত্যহ মাদরাসায় যায়। এটি একটি সার্থক বাক্য । কিন্তু যদি বলা হয়, যায় প্রত্যহ মাদরাসায় রহিম, তাহলে বাক্য হবে না ।

৩। যোগ্যতা : 

অর্থের সংলগ্নতা ও যৌক্তিকতা না থাকলে তা বাক্য হবে না। যেমন- গরু আকাশে উড়ে। এটি সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে বাক্য হলেও এর অর্থসংলগ্নতা ও যৌক্তিকতা নেই বলে বাক্য হিসেবে গণ্য নয়। কারণ গরু কখনো আকাশে উড়তে পারে না।

আকাঙ্ক্ষা, আসত্তি ও যোগ্যতা ছাড়াও বাক্য গঠনের জন্য অন্য গুণাবলি থাকা দরকার। যথা— 

১। স্বচ্ছতা। 

২। বলিষ্ঠতা।  

৩। সরলতা।  

৪। সংক্ষিপ্ততা।  

৫। যথার্থতা ইত্যাদি।

বাক্য গঠনের সময় কতকগুলো বিষয় সম্বন্ধে সজাগ থাকতে হয়। তা হলো— 

১। রীতিসিদ্ধ অর্থবাচকতা।  

২। দুর্বোধ্যতা। 

৩। উপমার ভুল প্রয়োগ।  

৪। বাহুল্য দোষ।  

৫। বাগ্‌ধারার রদবদল। 

৬।  গুরুচণ্ডালী দোষ ।

Post a Comment

0 Comments