ভাবসম্প্রসারণ: উত্তম নিশ্চিন্তে চলে অধমের সাথে তিনিই মধ্যম যিনি চলেন

ভাবসম্প্রসারণ: উত্তম নিশ্চিন্তে চলে অধমের সাথে তিনিই মধ্যম যিনি চলেন তফাতে

মূলভাব: উত্তম চরিত্রের ব্যক্তি সকলের সাথে সুন্দরভাবে চলতে পারেন। কিন্তু মধ্যমপন্থিরা একটু দূরে থাকেন সবসময়।

সম্প্রসারিত ভাব : যারা মহৎ হৃদয় ও চরিত্রবান তাঁরা নিখিল বিশ্বকে নিজেদের সঙ্গে একাত্ম করে নিতে জানেন। তাঁদের হৃদয় বিস্তীর্ণ ও বিচার সংকীর্ণতামুক্ত। তাই ইতর-ভদ্র, উত্তম-মধ্যম, ভালো-মন্দ সকলের সঙ্গে নির্বিকারে তাঁরা যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন । তাঁরা জানেন, হীন চরিত্রের সংস্রবে থাকলেও কোনো মালিন্য ও অসৎ চিন্তা তাদের স্পর্শ করতে পারবে না। তাদের সু-চিন্তা রক্ষা কবচের মতোই সঙ্গে থাকবে এবং সেজন্য অধমজনের সান্নিধ্যে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। এ কারণেই সকল লোকের সাথে তারা নিশ্চিন্তে সম্পর্ক স্থাপন এবং আত্মবিশ্বাস ও চারিত্রিক দৃঢ়তা নিয়ে সমাজের সর্বত্র অবাধে চলাফেরা করতে পারেন। কিন্তু আত্মপ্রত্যয় ও চারিত্রিক পবিত্রতার ওপর যারা বিশ্বাস রাখতে পারে না তাদের এ রকম মানসিক শক্তি নেই। তাই তারা অধমের সংস্পর্শে আসতে চায় না । তারা মধ্যম বলে উত্তম ও অধর্মের মধ্যে যে সংযোগ অনায়াসে সাধিত হয়, তাদের পক্ষে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তারা প্রতিমুহূর্তে নিজেদের পৃথক রাখতে চেষ্টা করে। ফলে তাদের মন শুচিবায়ুগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং তাদের বিচারবোধ সংকীর্ণ হয়ে যায়। জীবনের সর্বক্ষেত্রে তারা আলাদা হয়ে চলে এবং উত্তমের সাথে মিলিত হওয়ার মানসিক শক্তিও তাদের থাকে না। এ অতি সতর্কতার জন্য চিরকাল তারা পিছিয়ে থাকে এবং জীবনের কোনো ক্ষেত্রেই পরিপূর্ণ প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে না। অপরের মঙ্গল এবং নিজের পূর্ণতা কোনোটাই তাদের দ্বারা সম্ভবপর হয় না।

মন্তব্য : উত্তম চরিত্রের অধিকারীর মনোবল এত দৃঢ় যে সে অধমের সাথে চলতে ভয় পায় না। কিন্তু যার মনোবল ক্ষীণ সে ছিটকে পড়ার ভয়ে অধমের কাছ থেকে দূরে থকে। উত্তম আর অধমের মধ্যে যে · পার্থক্য রয়েছে, মধ্যমের সাথে সে পার্থক্য অনেক কম। কেননা উত্তম ও অধমের মধ্যস্থলেই মধ্যমের স্থান।

Post a Comment

0 Comments