কর্তব্যের কাছে ভাই বন্ধু কেউ নেই : ভাব সম্প্রসারণ(২টি)

মূলভাব : কর্তব্য পালন করা একটি মহান দায়িত্ব। কর্তব্য পালনের মধ্যেই জীবনের সার্থকতা নির্ভর করে। সকল মানবিক সম্পর্ক ও স্বার্থের উপরে কর্তব্যের স্থান।

সম্প্রসারিত ভাব : মানবজীবনে কর্তব্য পালনই গুরুত্বপূর্ণ। জীবনের কর্মকাণ্ডের মধ্যে কর্তব্যের স্থান সবার উপরে।মানবজীবনে অম্লান, ভাস্বর ও শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হওয়ার একমাত্র মাধ্যম তার কর্তব্য। সুষ্ঠু কর্তব্য সম্পাদনের মাধ্যমেই মানুষ মানুষের মাঝে স্মরণীয় ও বরণীয় হতে পারে। প্রতিটি মানুষকেই নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে কর্তব্য সম্পাদন করতে হয়। কিন্তু কর্তব্য পালন করা কঠিন কাজ। কর্তব্যের পথে নানা রকম বাধাবিঘ্ন বিদ্যমান থাকে। ব্যক্তিস্বার্থ ও নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করেই কর্তব্য পালন করতে হয়। কিন্তু এ বাধা অতিক্রম করতে না পারলে জীবনে সফলতা আসবে না। তাই কর্তব্য কর্মে অবহেলা করা উচিত নয়। কর্তব্য পালন করতে গিয়ে যদি আত্মীয়স্বজন ও ভাই-বন্ধুর বিরাগভাজনও হতে হয়, তবুও তা থেকে বিরত হওয়া উচিত নয়। 

কারণ আত্মীয়তার চেয়ে নীতি বড়। যিনি কর্তব্যপরায়ণ তিনি সত্য ও সুন্দরের সেবক। স্বজনপ্রীতির বশবর্তী হয়ে নীতি থেকে বিচ্যুত হওয়া উচিত নয়। স্বার্থের চেয়ে কর্তব্য পালন শ্রেয় ও মহৎ কাজ। সত্যনিষ্ঠ, ন্যায়বান মানুষ কখনই কর্তব্যকে বিসর্জন দেয় না। সে কর্তব্যের সামনে সকল সম্পর্ক উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালন করে যথার্থ মনুষ্যত্বের পরিচয় দেয়। সারাজীবন ধরেই কর্তব্যের ধারা অব্যাহত থাকে। মানুষ বিভিন্ন কর্তব্যের বেড়াজালে আবদ্ধ। তাকে পালন করতে হয় পারিবারিক, রাষ্ট্রীয়, ধর্মীয়, পেশাগত ও সামাজিক দায়িত্ব। এই গুরুভার পালনে যে ব্যক্তি অটল ও দৃঢ় থাকবেন তিনিই প্রকৃত মহৎ ও উদার ব্যক্তি। সুষ্ঠু কর্তব্য সম্পাদনের মধ্যে জীবনের সার্থকতা নিহিত।

মন্তব্যঃ কোনোরূপ দুর্বলতা যেন কর্তব্য থেকে বিচ্যুত না করে সে ব্যাপারে আমাদের সচেতন ও জাগ্রত থাকতে হবে।

আরও পড়ুন : প্রয়োজনীয়তাই উদ্ভাবনের জনক : ভাবসম্প্রসারণ(২টি)

একই ভাবসম্প্রসারণের ভিন্ন প্রতিলিপন

মূলভাব : কর্তব্য কর্মের কাছে আপন পর নেই। কর্তব্য সম্পাদনই আসল কথা ৷

সম্প্রসারিত ভাব : পৃথিবী মানবের কর্মক্ষেত্র। এ কর্মক্ষেত্রে মানুষ কর্মবোধ দ্বারা সর্বদা শাসিত হচ্ছে। যারা সমাজে কর্তব্যপরায়ণ ব্যক্তিরূপে খ্যাতিমান হয়েছেন, অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে, তাঁরা জীবনের প্রভাতিবেলা থেকেই সমাজে কর্তব্যবোধের অর্থ অনুধাবন করতে সমর্থ হয়েছেন এবং জীবন সংগ্রামে যথোচিত সম্মান ও মর্যাদার আসনে উপবিষ্ট হয়েছেন। মহাপুরুষ মাত্রই কর্তব্যের কাছে নতি স্বীকার করেন; ফলে তাঁদের কর্তব্যের সফলতার পথে যে কোনো বাধাই আসুক না কেন তাঁরা অবলীলায় তা অতিক্রম করেন। এমনকি নিজের রক্তের সম্পর্ক ভাইও তাঁদের কর্তব্যের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে না ।

মানুষের সবচেয়ে প্রিয় তার ভাই ও বন্ধু। কিন্তু কর্তব্যনিষ্ঠ বলে পরিচিত ও অভিহিত ব্যক্তিমাত্রই কর্তব্যকর্ম সম্পাদনের পথে ভাই ও বন্ধুর কোনো প্রতিবন্ধক গ্রাহ্য করেন না। তিনি সামনের দিকে অগ্রসর হন এবং জীবনে সাফল্য লাভ করেন। সমাজ সংসারে কর্তব্যনিষ্ঠ বহু লোক আছেন, তাঁদের জীবনের চাকা কর্তব্যবোধের পীড়নে সুষ্ঠুভাবে ঘুরত বলেই আজ তারা নিজ নিজ লক্ষ্যে সফলকাম হয়েছেন। 

মন্তব্যঃ কর্তব্য নিষ্ঠাই সাফল্যের চাকিকাঠি। কর্তব্যে অবহেলা করলে তার জীবনে দুর্বিষহ যন্ত্রণা ও কষ্ট নেমে আসে।

Post a Comment

0 Comments