দৈনন্দিন কাজকর্ম ও ব্যবসা বাণিজ্যের কারণে প্রাচীনকাল থেকে মাপের প্রচলন ছিল। এই মাপের জন্য বিভিন্ন রাশির স্থানীয় বা এলাকা ভিত্তিক বহু একক প্রচলিত ছিল। যেমন- কিছু কাল পূর্বেও আমাদের দেশে ভরের একক হিসাবে মণ, সের ইত্যাদি চালু ছিল। দৈর্ঘ্যের জন্য গজ, ফুট, ইঞ্চি এখনও প্রচলিত আছে।
বৈজ্ঞানিক তথ্যের আদান-প্রদান ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের জন্য সারা বিশ্বে মাপে একই রকম আদর্শের প্রয়োজন হয়ে পড়ে, এই তাগিদ থেকেই ১৯৬০ সালে দুনিয়া জোড়া বিভিন্ন রাশির একই রকম একক চালুর সিদ্ধান্ত হয়। এককের এই পদ্ধতিকে বলা হয় “এককের আন্তর্জাতিক পদ্ধতি” (International system of units) বা সংক্ষেপে এস. আই (SI)।
আন্তর্জাতিক পদ্ধতির মৌলিক এককসমূহ :
আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে সাতটি মৌলিক রাশির জন্য সাতটি মৌলিক একক ধরা হয়েছে। এককগুলো নিম্নে ছকে দেখানো হল-
মৌলিক রাশি | এস.আই.একক |
---|---|
১. দৈর্ঘ্য | মিটার (m) |
২. ভর | কিলোগ্রাম (Kg) |
৩. সময় | সেকেণ্ড (S) |
৪. তাপমাত্রা | কেলভিন (K) |
৫. তড়িত প্রবাহ | অ্যাম্পিয়ার (A) |
৬. দীপন ক্ষমতা | ক্যাণ্ডেলা (cd) |
৭. পদার্থের পরিমাণ | মোল (mol) |
আরও পড়ুন : পদার্থ বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ একক সমূহ: বিস্তারিত তালিকা
এককের আন্তর্জাতিক পদ্ধতির সুবিধা :
এককের আন্তর্জাতিক পদ্ধতির নিম্নোক্ত সুবিধা রয়েছে।
১. সর্বজন গ্রাহ্য পদ্ধতি।
২. পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন একক পদ্ধতি প্রচলিত হওয়ায় পরিমাপের ক্ষেত্রে বৈষম্যের জন্য যে অসুবিধে হয়, তা এ পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে দূর করা হয়েছে।
৩. এম. কে. এস. পদ্ধতির সাথে আরও কয়েকটি প্রমাণ রাশি এবং এদের একক যোগ করায় সমগ্র পদার্থবিজ্ঞানকে একটিমাত্র একক পদ্ধতির আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।
৪. এ পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্য বা ভরের যে কোন একক তার পরবর্তী ক্ষুদ্রতর এককের দশগুণ এবং তার পূর্ববর্তী বৃহত্তর এককের দশ ভাগের এক ভাগ। সুতরাং এ পদ্ধতিতে এক একককে অন্য এককে রূপান্তর করতে কেবলমাত্র দশমিক বিন্দুকে ডান বা বাম দিকে এক বা একাধিক ঘর সরাতে হয়। যেমন : 1.255 মিটার =12.55 ডেসিমিটার = 125.5 সেন্টিমিটার = 1255 মিলিমিটার।
৫. কাজের সুবিধার জন্য এককগুলোর গুণিতক বা উপগুণিতক ব্যবহার করা যায় এবং এককের সাথে সুবিধাজনক উপসর্গ যোগ করে তা পাওয়া যায়।