মাত্রা কাকে বলে ?
সংজ্ঞা : বাংলা বর্ণের উপর যে রেখা (—) চিহ্ন দেয়া হয় তাকে মাত্রা বলে ।
মাত্রার প্রকারভেদ :
মাত্রা প্রধানত তিন প্রকার। যথা—
১. পূর্ণমাত্রা,
২. অর্ধমাত্রা ও
৩. মাত্রা ছাড়া।
১। পূর্ণমাত্রা : যেসব বর্ণের মাত্রা পূর্ণ হয় সেগুলোকে পূর্ণমাত্রা বর্ণ বলা হয়। বাংলা ভাষায় পূর্ণ মাত্রা বর্ণ ৩২টি। যথা—
অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ, ক, ঘ, চ, ছ,জ, ঝ, ট, ঠ, ড, ঢ, ত, দ, ন, ফ, ব, ভ, ম, য, র, ল, ষ, স, হ, ড়, ঢ়, য়। (স্বরবর্ণ ৬ টি এবং ব্যঞ্জনবর্ণ ২৬ টি)
২। অর্ধ মাত্রা : যেসব বর্ণের মাত্রা অর্ধ হয় সেগুলোকে অর্ধ মাত্রা বর্ণ বলা হয়। বাংলা ভাষায় অর্ধমাত্রা বর্ণ ৮টি। যথা-
ঋ, খ, গ, ণ, থ, ধ, প, শ। (স্বরবর্ণ ১টি - ঋ এবং ব্যঞ্জনবর্ণ ৭ টি - খ, গ, ণ, থ, ধ, প, শ ) ।
৩। মাত্রা ছাড়া : যেসব বর্ণের মাত্রা নেই সেগুলোকে মাত্রা ছাড়া বা মাত্রাহীন বর্ণ বলা হয়। মাত্রা ছাড়া বর্ণ ১০টি। যথা—
এ, ঐ, ও, ঔ, ঙ, ঞ, ৎ, ং, ঃ, ঁ ( সরবর্ণে ৪ টি - এ, ঐ, ও, ঔ এবং ব্যঞ্জনবর্ণে ৬ টি - ঙ, ঞ, ৎ, ং, ঃ, ঁ) ।
আরও পড়ুন : বর্ণ, স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ কাকে বলে?কত প্রকার।সংজ্ঞা সহ উদাহরণ
কার কাকে বলে ?
সংজ্ঞা : স্বরবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে ‘কার’ বলে। বাংলা ভাষায় 'কার' মোট ১০টি। (শুধমাত্র অ- এর কোনো 'কার' বা সংক্ষিপ্ত রূপ নেই) যথা -।
আ-কার(া), ই-কার(ি), ঈ-কার(ী), উ-কার(ু), ঊ-কার(ূ), ঋ-কার(ৃ), এ-কার(ে), ঐ -কার(ৈ), ও-কার(ো), ঔ-কার(ৌ)।
কার চিহ্ন দিয়ে শব্দ গঠন :
১। আ-কার(া): কাচা, কাকা, খাজা, খাতা, খাচা, গাধা, ডানা, দাতা, তালা, টাকা, ঠাসা, থালা ইত্যাদি।
২। ই-কার(ি): আঁখি, মনি, গিরি, তিন, বাচি, বাটি, ডিম, হিম, মাটি, হাড়ি, তিল, ঘটি ইত্যাদি।
৩। ঈ-কার(ী : সতী, ধনী, দীপ, শীত, গীত, ধীর, শাড়ী, গাড়ী, রাগী, হীন, কাকী, বাড়ী ইত্যাদি।
৪। উ-কার(ু) : খুশি, ছুটি, ঠুলি, গুণ, কুল, ঘুঘু, ঝুল, নুন, জুতা, ঢুলি, অণু, মধু, ঋতু, থুথু ইত্যাদি।
৫। ঊ-কার(ূ): কূল, ধূলি, ভূত, শূর, সূতা, মূল, রূপ, ধূম, মূক, কূপ, বধূ, চূর্ণ, ধূপ, শূল ইত্যাদি।
৬। ঋ-কার(ৃ): কৃপা, ঘৃণা, ধৃত, কৃশ, তৃণ, কৃত, ঘৃত, অমৃত, আবৃত মৃগ, কৃপণ, পৃথক, সদৃশ্য, পৃথিবী ইত্যাদি।
৭। এ-কার(ে): শেষ, যেতে, দেশ, মেষ, লেপ, তেল, কেশ, বেশ, মেতে, ঠেলা, বেলা, মেয়ে, থেকে, মেখে ইত্যাদি।
৮। ঐ -কার(ৈ): তৈল, জৈব, দৈব, শৈশব, চৈতালি, সৈনিক, বৈশাখ, বৈঠা, দৈনিক, তৈরি, চৈতালি ইত্যাদি।
১০। ঔ-কার(ৌ): দৌড়, চৌকি, লৌহ, নৌকা, পৌষ, কৌটা, গৌরব, সৌরভ, মৌমাছি, যৌথ, কৌণিক ইত্যাদি।
ফলা কাকে বলে ?
সংজ্ঞা : য, র, ম, ন, ণ, ব, ল-এ সাতটি বর্ণ অন্য ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে মিলিত হয়ে যে সংক্ষিপ্ত রূপ ধারণ করে, তাকে ফলা বলে। অথবা ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে ফলা বলে।