ভার্নিয়ার ধ্রুবক,লঘিষ্ঠ গণন এবং তুলা যন্ত্র কাকে বলে?বিস্তারিত

ভার্ণিয়ার ধ্রুবক : প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম এক ভাগের চেয়ে ভার্ণিয়ার স্কেলের এক ভাগ কতটুকু ছোট, তার পরিমাণকে ভার্ণিয়া ধ্রুবক বলে। S প্রধান স্কেলের 1 ক্ষুদ্রতম ভাগের দৈর্ঘ্য এবং n ভার্ণিয়ারের ভাগ সংখ্যা হলে,

ভার্ণিয়ার ধ্রুবক = Sn

ভার্ণিয়ার ধ্রুবকের ব্যাখ্যা : মনে করি, একটি ভার্ণিয়ার স্কেলে 10টি ভাগ আছে (দশটি দাগ কাটা)। এ দশ ভাগ প্রধান স্কেলের নয়টি ক্ষুদ্রতম ভাগের সমান।

প্রধান স্কেলের নয়টি ক্ষুদ্রতম ভাগ হল 9 মিলিমিটার বা 0.9 সেন্টিমিটার। যেহেতু ভার্ণিয়ার স্কেলের 10 ভাগ প্রধান স্কেলের 9 ক্ষুদ্রতম ভাগের সমান।

∴ ভার্ণিয়ার স্কেলের ভাগগুলো প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম ভাগের চেয়ে সামান্য ছোট। ভাগগুলো যতটুকু ছোট, তাকে ভার্ণিয়ার ধ্রুবক বলে।

এখানে, প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম 1 ভাগ, S = 1 মি.মি. এবং ভার্ণিয়ারের ভাগ সংখ্যা n = 10 হওয়ায়

ভার্ণিয়ার ধ্রুবক = Sn=1mm10=0.1mm=0.01cm

কোন কোন সময় ভার্ণিয়ার স্কেলের 20 ভাগ প্রধান স্কেলের 19 ক্ষুদ্রতম ভাগের সমান থাকে এবং প্রধান স্কেলের এক ক্ষুদ্রতম ভাগ 1mm-এর চেয়ে কম থাকে। তখন ভার্ণিয়ার ধ্রুবক বিভিন্ন রকম হয়। প্রধান স্কেল ও ভার্ণিয়ার স্কেলের দাগ কাটার বৈশিষ্ট্যের ওপর ভার্ণিয়ার ধ্রুবক নির্ভর করে।

আরও পড়ুন : পরিমাপ ও পরিমাপের এককের সংজ্ঞা, কত প্রকার এবং প্রয়োজনীয়তা

ভার্ণিয়ার ধ্রুবক নির্ণয়  সূত্র :

প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম এক ভাগের চেয়ে ভার্ণিয়ার স্কেলের এক ভাগ যতটুকু ছোট তার পরিমাণকে বলা হয় ভার্ণিয়ার ধ্রুবক (Vernier constant)। 

একটি সহজ সূত্র দ্বারা ভার্ণিয়ার ধ্রুবক নির্ণয় করা যায় তাহলো, 

ভার্ণিয়ার ধ্রুবক  =Sn যেখানে s প্রধান স্কেলের 1 ক্ষুদ্রতম ভাগের দৈর্ঘ্য এবং n ভার্ণিয়ারের ভাগের সংখ্যা। 

উপযুক্ত ক্ষেত্রে s = 1 মি.মি. এবং n = 10 ভাগ

∴ভার্ণিয়ার ধ্রুবক = Sn=1mm10=0.1mm=0.01cm

লঘিষ্ঠ গণন (Least cant) :স্ক্রু  গজের বৃত্তাকার স্কেলের মাত্র এক ভাগ ঘুরালে স্ক্রুটি যে পরিমাণ সরে আসে, তাকে ঐ যন্ত্রের লঘিষ্ঠ গণন বলে।

ব্যাখ্যা : স্ক্রুগজের বৃত্তাকার বা বেলনাকৃতি স্ক্রু T একবার ঘুরালে এর যতটুকু সরণ ঘটে এবং রৈখিক স্কেল বরাবর যে দৈর্ঘ্য এটি অতিক্রম করে, তাকে স্ক্রুর পিচ বলে। বৃত্তাকার স্কেলের মাত্র একভাগ ঘুরালে স্কু =T যতটুকু সরে আসে, তাকে বলা হয় যন্ত্রের লঘিষ্ঠ গণন। যন্ত্রের পিচকে বৃত্তাকার স্কেলের ভাগের সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে লঘিষ্ঠ মান পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ লঘিষ্ঠ গণন = পিচ /বৃত্তাকার স্কেলের ভাগের সংখ্যা

উদাহরণ : কোন স্কু গজের বৃত্তাকার স্কেলে 100 ভাগ থাকলে এবং এই যন্ত্রের পিচ 1 মি.মি. হলে, লঘিষ্ঠ গণন 1100 মি.মি. = 0.01 মি.মি.

আরও পড়ুন : মাত্রা সমীকরণ সংজ্ঞা,প্রয়োজনীয়তা,ও সমীকরণের সাহায্যে v=u+at যাচাই

তুলাযন্ত্র : খুবই অল্প পরিমাণ জিনিসের ভর কোন কোন সময় পদার্থবিদ্যা বা রসায়নবিদ্যায় অনেক সূক্ষ্মভাবে নির্ণয় করতে হয়, যা স্বাভাবিক নিক্তি দিয়ে করা যায় না। কোনো বস্তু বা পদার্থের পরিমাণ যতই কম হবে তার ভর পরিমাপের নিক্তিও হতে হবে তত সূক্ষ্ম। এই রকম একটি সূক্ষ্ম ভর পরিমাপের নিত্তি হলো তুলা বা তুলাযন্ত্র। 

তুলা যন্ত্রের ব্যবহার : কোনো অল্প জিনিসের ভর সূক্ষ্ণভাবে নির্ণয়ের জন্য তুলা যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। তুলা যন্ত্র পদার্থবিদ্যা ও রসায়নবিদ্যার ল্যাবরেটরীতে অল্প জিনিসের ভর সূক্ষ্মভাবে পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়। কারণ, ল্যাবরেটরী কিংবা পরীক্ষাগারে কোন জিনিসের ভর পরিমাপ সঠিক না হলে পরীক্ষণ থেকে ভুল লাল আসতে পারে এবং পরীক্ষণটির উদ্দেশ্য ভণ্ডুল হয়ে যেতে পারে।স্বর্ণের দোকানে স্বর্ণের ভর মাপতেও এই যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। 

Post a Comment

0 Comments