বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে পালিত কোনো উৎসব সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
অথবা, তোমার কলেজে কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উদযাপন
গত ২৬ মে, ২০২৩ তারিখ বাংলাদেশের জাতীয় ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন পালন উপলক্ষে ঢাকা কলেজ মিলনায়তনে বিভিন্ন সাহিত্য-সংস্কৃতিসেবী সংস্থা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আয়োজন করেছিল বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি ছিল আধুনিক সাজে সজ্জিত যা সকলকেই চমকে দিয়েছিল। অনুষ্ঠান মঞ্চে কবির যৌবনকালের তারুণ্যদীপ্ত একটি প্রতিকৃতি টাঙানো ছিল। এ মহতী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের পরপরই কবির বিখ্যাত ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’ গান দিয়ে মূল অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল এর আলোচনা পর্ব। বিশিষ্ট সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক আবদুল হই সিকদার কবি নজরুলের “জীবন, কর্ম ও সাহিত্যক্ষেত্রে তাঁর অবদান” এ বিষয়ের ওপর একটি চমৎকার ও আকর্ষণীয় প্রবন্ধ পাঠ করেন। অন্যান্য আলোচকদের মধ্যে ছিলেন— মোবায়েদুর রহমান, আজাদ মানসুর ও জহিরুদ্দিন বাবর প্রমুখ। তাঁরা তাঁদের আলোচনায় নজরুলের প্রতিভার মূল্যায়নের চেষ্টা করেন। বক্তব্যের সমর্থনে তাঁরা নজরুলের রচনা থেকে প্রাসঙ্গিক উদ্ধৃতি উপস্থাপন করে সমবেত শ্রোতামণ্ডলীকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন।
প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভিসি (সাবেক) অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্যের মধ্য দিয়েই আলোচনা পর্ব শেষ হয়। আলোচনা পর্বের সমাপনীতে শুরু হয় নজরুল গীতির অনুষ্ঠান। প্রখ্যাত নজরুল গীতি বিশেষজ্ঞ ওস্তাদ মালেক চিশতী প্রাসঙ্গিক ভূমিকার পর একে একে গেয়ে শোনান বিভিন্ন পর্বের দশটি সুনির্বাচিত গান। অনুষ্ঠানটি শেষ হয় অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নাসিম উদ্দীন সাহেবের ভাষণের পর। তিনি তাঁর সংক্ষিপ্ত ভাষণে আমাদের জাতীয় জীবনে নজরুলের প্রভাব ও প্রয়োজনীয়তা, তাঁর রচনার যথার্থ মূল্যায়ন, পঠন-পাঠন এবং তাঁর আদর্শকে অনুসরণের জন্য সকলকে আহ্বান জানান। পরে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে নজরুলের রুহের মাগফেরাত কামনা করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে উদযাপিত অনুষ্ঠানের বর্ণনা দিয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
তারিখ : ২৮ মে ২০২৩
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
মতিঝিল, ঢাকা।
বিষয় : জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী প্রসঙ্গে।
মহোদয়,
আপনার আদেশক্রমে (আদেশ নং ম. আ. ফু. অ্যা. ক. / ২০১৮/২০৩) মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৮তম জয়ন্তী উপলক্ষে উদযাপিত অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন আপনার সমীপে পেশ করছি।
কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৮তম জন্মজয়ন্তী পালিত।
গত ২৪ মে, ২০২৩ (১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫) ছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মজয়ন্তী। এ উপলক্ষে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে সেমিনার, আবৃত্তি, নজরুল সংগীত ও নৃত্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি আসাদ চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন সেলিম রেজা, আবু আউয়াল প্রমুখ ।
প্রধান অতিথির ভাষণে ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, নজরুল আমাদের কাব্যসাহিত্য ধারায় একটি অনির্বচনীয় নাম। তার কবিতাই তার নন্দনতাত্ত্বিক পরিমাপের একান্ত উপকরণ। তৎকালীন সময়ের রাজনীতি, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, শ্রেণিবৈষম্য, প্রেম প্রভৃতি তাঁর কবিতায় অসাধারণ ভঙ্গিমায় ফুটে উঠেছে। বিদ্রোহী চেতনামূলক কবিতা রচনার জন্য তাকে কারাবরণ করতে হয়। তার এ বিদ্রোহ বর্তমান সমাজ ও রাজনীতির প্রেক্ষাপটে প্রেরণার উৎস।
বিশেষ অতিথি কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নজরুলের অবদান অনস্বীকার্য। সামাজিক অন্যায়, অত্যাচার আর ভণ্ডামির বেড়াজাল ছিন্ন করে তিনি মানুষের সার্বিক মুক্তি ঘটাতে চেয়েছেন। তিনি কুলি, মজুর, জেলে, কৃষক শ্রেণির মানুষের দুঃখবোধ গভীরভাবে উপলব্ধি করেছেন। তাদের দুঃখ দূর করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। তিনি আরো বলেন, নজরুলের প্রায় সব কবিতাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের দ্যোতক।
সভাপতির ভাষণে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, সাহিত্যের বেশ কয়েকটি শাখায় নজরুলের দৃপ্ত পদচারণা অত্যন্ত সমৃদ্ধ স্থান দখল করে আছে। তার লেখার প্রতি পাঠকের আন্তরিক সমর্থন তার জীবিতকালেই ছিল। সেই সঙ্গে তার লেখার প্রতি প্রচুর কটূক্তিও বর্ষিত হয়েছে। এ প্রশংসা ও প্রতিবাদ, অভিনন্দন ও তিরস্কার তার লেখার স্বীকৃতিরূপেই বিবেচিত হতে পারে। তিনি আরও বলেন, নজরুলের কবিসত্তা সময়ের দাবিতেই আমাদের জন্য প্রেরণার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
সেমিনার শেষে বিশিষ্ট আবৃত্তিকার, নৃত্যশিল্পী ও সংগীতশিল্পীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল নজরুল সংগীত শিল্পী ফেরদৌসী রহমানের সংগীত পরিবেশনা।
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা : ইশিতা আনজুম, মতিঝিল, ঢাকা।
প্রতিবেদনের শিরোনাম : বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৮তম জন্মজয়ন্তী পালিত
প্রতিবেদন তৈরির সময় : সকাল ৯টা