ছাত্র ছাত্রীদের বিদায়ী মানপত্র – স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা-pdf

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুগণ, একমাত্র তোমাদের শেখার সুবিধার জন্যই ছাত্র ছাত্রীদের বিদায়ী মানপত্র – স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার জন্য আলাদা করে খুব সুন্দর করে লিখে দেয়া হলো। আশা করি তোমাদের অনেক উপকারে আসবে।

তোমার বিদ্যালয়ের এস.এস.সি পরীক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে একটি মানপত্র রচনা কর।

ইস্পাহানি পাবলিক স্কুলের ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে
আন্তরিক সংবর্ধনা

জ্ঞানের পথের বিদায়ী পথিক,
ঐতিহ্যবাহী ইস্পাহানি উচ্চ বিদ্যালয়ের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীর কলকাকলিতে মুখরিত অঙ্গন থেকে আজ তোমাদের অশ্রুসজল বিদায় আমাদের হৃদয়কে বেদনাসিক্ত করেছে। বিদায় বেলায় তোমরা ছোট ভাই বোনদের বেদনার্ত হৃদয়ের শ্রদ্ধাঞ্জলি গ্রহণ কর ।

আদর্শবাহী সাধক,
দীর্ঘদিন ধরে এ শিক্ষায়তনে তোমাদের অবস্থানের লক্ষ্য ছিল জ্ঞানের সাধনায় আত্মনিয়োগ । অপরিমিত আকাঙ্ক্ষা তোমাদের নিয়ে যাচ্ছে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে—বৃহত্তর জ্ঞান সাধনার পথে। পেছনের আকর্ষণ উপেক্ষা করে তোমাদের অগ্রযাত্রা হবে গৌরবময়। তাই স্মৃতি আজ বেদনাময় হয়ে উঠলেও সকল মায়া তোমাদের কাটাতে হবে। জীবনে বয়ে আনতে হবে জ্ঞানালোকের উজ্জ্বল সম্ভাবনা । জাতির অনাগত দিনের পরম নির্ভর হয়ে ওঠার সাধনা তোমাদের। সে সাধনা সফল করে তুলতে হবে ।

সহৃদয় সুহৃদ,
তোমাদের উজ্জ্বল আদর্শ আমাদের প্রেরণার উৎস। তোমাদের সাফল্য আমাদের গৌরবের বস্তু। তাই তোমাদের সাধনার পথে আমাদের অনুসরণ চলবে আগামী দিনে । চলার পথে আমরা কখনও বিভ্রান্তির পরিচয় দিয়ে থাকলে তোমাদের ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি আমাদের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে, আর আমাদের একান্ত কামনা তোমাদের আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন-সাধনা সফল হোক ।

বেদনাহত-
ইস্পাহানি পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থীবৃন্দ
২৫ জানুয়ারি, ২০২৫

আরো পড়ুন : শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা মানপত্র- প্রধান ও সহকারী শিক্ষক

তোমার মাদরাসার বিদায়ী ছাত্রদের উদ্দেশ্যে একটি মানপত্র রচনা কর।

ফেনী আলিয়া মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রীদের বিদায় উপলক্ষে

“আন্তরিক সংবর্ধনা”

হে বিদায়ী বন্ধুগণ!
সবেমাত্র কৃষ্ণচূড়ায় রং ধরতে শুরু করেছে। রক্তলাল শিমুলেরা দল মেলে বাড়তে চাইছে দিক-বিদিক। দখিণা বাতাসের আগমন বার্তা কানে ভেসে আসতে শুরু করেছে। এমনি ক্ষণে তোমাদের বিদায় বার্তায় আমাদের কচিমন ছেয়ে গেল বিষাদের কালো ছায়ায় ।

হে বিদায়ী অগ্রজবৃন্দ!
আজ এ বিদায় বেলায় আমাদের মনে পড়ছে বিগত দিনের কত অফুরন্ত স্মৃতি । সুদীর্ঘ ক’টি বছরে তোমাদের সাথে আমাদের যে নিবিড় সম্পর্কের বাঁধন সৃষ্টি হয়েছিল, আজ তা ছিন্ন করে আমাদের কচি-হৃদয়কে ক্ষত-বিক্ষত করে তোমরা চলে যাচ্ছ। তবু তোমরা সীমার বাঁধন পেরিয়ে উচ্চতর এক জীবনের সন্ধানে যাত্রা করছ ভেবে আমাদের মনে বেদনার মাঝেও আনন্দের এক অম্ল-মধুর ভাব সৃষ্টি
হয়েছে।

হে নবীন অভিযাত্রী দল!
জীবনের এক নব দিগন্তের উদ্দেশ্যে তোমাদের এ অভিযাত্রা। তোমাদের সামনে সোনালী প্রত্যাশা। এ বিদ্যাপীঠে জ্ঞান-সাধনার মাধ্যমে তোমাদের মাঝে যে অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষা তীব্রতা লাভ করেছে তারই নিরসনে আজ তোমরা বৃহত্তর জ্ঞান-সাধনার পাদপীঠে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছ। তোমাদের এ অগ্রযাত্রা শুভ, সার্থক ও ফলপ্রসূ হোক ।

হে পূর্বসূরি সাথীরা!
বিগত ক’টি বছরে তোমরা-আমরা ছিলাম অভিন্ন হৃদয় । প্রতিটি কাজে ও আচরণে তোমরা ছিলে আমাদের আদর্শও প্রেরণার উৎস। তোমাদের অফুরন্ত স্নেহ-মমতা, সোহাগমাখা শাসন আমাদেরকে যে বাঁধনে বেঁধেছ, তা চিরদিন থাকবে অক্ষয় ও অম্লান। তোমাদের আগামী জীবনের উত্তরণের প্রতিটি পদক্ষেপের সাথে মিশে থাকবে আমাদের ঐকান্তিক ভালবাসা ও সুগভীর শ্রদ্ধা । পরিশেষে কামনা করি, তোমাদের ভবিষ্যৎ জীবন ফুল ও ফলে সুশোভিত হয়ে সমৃদ্ধ করুক দেশ ও জাতিকে।

তোমাদের গুণমুগ্ধ
ফেনী আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ ।
তাং ০৭/০১/২০… ইং

আরো পড়ুন : অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনা মানপত্র : স্কুল ও কলেজ

তোমার কলেজের এইচ এস সি পরীক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে একখানা বিদায় অভিনন্দন পত্র রচনা কর ।

ঐতিহ্যবাহী গোপালপুর সরকারি কলেজের ২০২৫ সালের এইচ এস সি পরীক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রীদের বিদায় উপলক্ষে অশ্রুসিক্ত উচ্চারণ কবির ভাষায়-

উড়ে এসেছিলাম জ্ঞানের গুল বাগিচায়
মোরা পথভোলা বুলবুল।
উড়ে যাই আবার জীবন-সংগ্রাম নীড়ে
আশঙ্কা বেদনায় হৃদয়-ভাঙা ব্যাকুল ।

হে বিদায়ী বন্ধুরা!
চমৎকার সুন্দর নীলচে আকাশে শারদীয় মেঘ, শিউলিঝরা প্রভাত আর কুয়াশার শুচি-শুভ্র উত্তরীয় প্রকৃতি যখন অনিন্দ্য সুন্দর, তখন শেষ হয়ে এলো তোমাদের জীবনের শিক্ষাকাল। তোমাদের বিদায় রাগিণীতে আমাদের মনের সোনালি আকাশ ছেয়ে গেছে বিষাদের ঘনঘটায়।

হে শ্ৰেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ!
মুসলিম ইতিহাসের যুগ সন্ধিক্ষণের নব-চেতনা ও রেনেসাঁর প্রতিশ্রুতি নিয়ে দু’শতাধিক বছর পূর্বের ঐতিহাসিক যাত্রালগ্ন থেকে জ্ঞান-পিয়াসী কত না মনীষী, সুধী-জ্ঞানী-গুণী দিয়েছ বিদায় তোমার এই অনন্ত সুবাসিত কুসুম কানন হতে। পঞ্চদশ হিজরীর ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ উত্তাল সিন্ধু মাঝে আমরাও আজ রিক্ত হস্তে দিচ্ছি পাড়ি মহাকালের যাত্রাপথে। তাই আমরা আজ আশঙ্কিত, কিংকর্তব্যবিমূঢ়; কিন্তু দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ – জ্বালিয়ে দেব সকল অপকর্মের আস্তানা, প্রতিষ্ঠা করব ‘হেরার রাজ’ তোমার দেয়া পথনির্দেশনায় ।

সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ!
এ ঐতিহ্যবাহী শিক্ষায়তনের তোমরা যুগ-শ্রেষ্ঠ, কাল বরেণ্য ওস্তাদ। তোমাদের অকুণ্ঠিত বিচ্ছুরিত আলোর দিশায় আমাদের মন- মঞ্জুষা উদ্ভাসিত, আমরা আজ গৌরবান্বিত । তোমাদের এ ঋণ কী দিয়ে শোধরাব? তদুপরি বিষাক্ত আবহাওয়ার অঙ্কুরিত সন্তানেরা অবাঞ্ছিত আচরণে দিয়েছি বেদনার ডালি। তবু সব ভুলে বিদায়লগ্নে দোয়া দেবে জানি ।

হে বিদায়ী অগ্রজবৃন্দ!
বেদনাবিধুর এ বিদায় বেলায় আমাদের মনে পড়ছে বিগত দিনের অফুরন্ত স্মৃতি। সুদীর্ঘ সময়ে তোমাদের সাথে আমাদের হৃদ্যতার যে নিবিড় সম্পর্কের গ্রন্থি রচিত হয়েছিল, তা আজ ছিন্ন করে আমাদের হৃদয়কে ক্ষত-বিক্ষত করে তোমরা চলে যাচ্ছ। তবু শিক্ষার এ ক্ষুদ্রতর সীমার বাঁধন পেরিয়ে উচ্চতর এক শিক্ষাজীবনের সন্ধানে যাত্রা করছ ভেবে আমাদের মনে বেদনার মাঝেও কিছুটা আনন্দের ধারা বহমান।

হে সুহৃদ বন্ধুগণ!
জানি, তোমাদের যথাযথ সম্মান আমরা দিতে পারিনি। অনেক সময় আমাদের অবুঝ যুক্তি-তর্ক, আচার-ব্যবহারে তোমরা মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছ। আজ এ বিদায়লগ্নে করজোড়ে তোমাদের আকাশসম হৃদয়ের কাছে আমরা ক্ষমার মঞ্চে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। আশা করি ক্ষমা করে দেবে।
হে অন্তর্যামী!
আমাদের পথ চলা বিদ্যার্জন সমর্পিত হোক তোমাদেরই রাহে। জীবন – চলার পথে সমাগত পরীক্ষায় তুমি তোমার বান্দার জন্য নির্ধারিত কর গৌরব উজ্জ্বল স্থান। পূর্ণ কর মনের সকল নেক বাসনা।

তোমাদের স্নেহমুক্ত
গোপালপুর সরকারি কলেজ এইচ এস সি পরীক্ষার্থীবৃন্দ
তারিখ : ০৫/০৯/ ২০২৫

আরো পড়ুন : মানপত্র কাকে বলে? মানপত্র লেখার নিয়ম ও মানপত্র নমুনা

আমার মূল লক্ষ্য একটাই (Sikkhagar-শিক্ষাগার) ওয়েবসাইটের হাত ধরে “শিক্ষা হবে উন্মুক্ত ও বাণিজ্যমুক্ত”। এই প্লাটফর্মে থাকবে একাডেমিক প্রস্তুতি, ভর্তি প্রস্তুতি, চাকরি প্রস্তুতি, স্পেশাল স্কিল এবং ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানাবিধ বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ।

Leave a Comment