উসূলুশ শাশী গ্রন্থকারের জীবনী

শাশী প্রণেতা আল্লামা নিযামুদ্দীন সহজ ও সাবলীল ভাষায় উসূল রচনা করে বিশ্বমুসলিমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাঁর অনবদ্য রচনার স্বীকৃতি মুসলিম জাতি তাঁকে দিয়েছে, সারাবিশ্বের মুসলিম বিদ্যাপীঠসমূহে তাঁর এ মূল্যবান গ্রন্থ সিলেবাসভুক্ত রয়েছে।

উসূলুশ শাশী গ্রন্থকারের জীবনী :

নাম ও বংশ পরিচয় : ‘উসূলুশ শাশী’ হানাফী মাযহাবের ফিকহ শাস্ত্রের মূলনীতি সংক্রান্ত একটি প্রামাণ্য গ্রন্থ। এ গ্রন্থের গ্রন্থকার পরিচিতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য উদঘাটন করা বড়ই কঠিন। তিনি মানুষের খেদমতের মাধ্যমে উভয় জাহানে কল্যাণ লাভের আশায় নিজ গ্রন্থের কোথাও নিজের নাম প্রকাশ করেননি। এ গ্রন্থের ব্যাখ্যাকারগণও গ্রন্থকার সম্পর্কে কোনো ব্যাখ্যা প্রদান করেননি। দক্ষিণ ভারতের হায়দরাবাদের আসেফিয়া গ্রন্থাগারের গ্রন্থসূচিতে এ গ্রন্থের একটি হাতে লেখা কপি রয়েছে, তাতে গ্রন্থকারের স্থান খালি রয়েছে- مَحْبُوبٌ أَلْبَاب فِي تَعْرِيفِ الْكُتُبِ وَالْكِتَابِ নামক গ্রন্থসূচিতেও এ ব্যাপারে কিছুই উল্লেখ নেই।

ফিকহ অধ্যায়ে শুধু إكثا أ القنوع بما هم مطبو ع । গ্রন্থসূচিতে উসূলে কথাটিই উল্লিখিত হয়েছে; الشَّاشِي المُلَقَّبُ بِالقفَّالِ কিন্তু এটা উসূলুশ শাশীর ব্যাপারে বলা হয়নি। কেননা ‘কাফাল’ উপাধি দু’ব্যক্তির ছিল, একজন ছিলেন আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল আল কাফাল, দ্বিতীয়জন ছিলেন আবু বকর আবদুল্লাহ ইবনে আহমাদ ইবনে আবদুল্লাহ আল কাফাল। উল্লিখিত একজনও উসূলুশ শাশী গ্রন্থকার নন। প্রথমোক্ত ব্যক্তি শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী অথচ উসূলুশ শাশী হানাফী ফিকহের সমর্থনে লিখিত। দ্বিতীয় ব্যক্তি ছিলেন মারুযী গ্রন্থের লেখক ।

আরো পড়ুন : উসুলুশ শাশী গ্রন্থের বৈশিষ্ট্য

১১৮৯ হিজরী সনে মিসরে একটি গ্রন্থসূচিতে উসূলুশ শাশী গ্রন্থকারের নাম ইসহাক ইবনে ইবরাহীম শাশী বলে উল্লিখিত হয়েছে। তিনি বর্তমান সোভিয়েত রাশিয়ার অধীন সমরকন্দ প্রদেশের ‘শাশ” নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বহুদিন এ অঞ্চলটি মুসলিম শাসনাধীনে ছিল। মধ্য এশিয়ার এ অঞ্চলটিতে ইসলামী দর্শন ও জ্ঞানবিজ্ঞানের অনেক প্রখ্যাত পণ্ডিত জন্মগ্রহণ করেছেন। আল্লামা শাশী ফিকহশাস্ত্রের একজন খ্যাতনামা পণ্ডিত ছিলেন ও হানাফী ফিকহের অনুসারী ছিলেন। গ্রন্থকার ইসহাক ইবনে ইবরাহীম ৩২৫ সালে মিসরে ইন্তেকাল করেন।

মাওলানা আবদুল হাই লাখনুবী (র) এবং الفوائد البهية নামক গ্রন্থে কাশফ গ্রন্থকারের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করেছেন যে, উসূলুশ শাশী গ্রন্থকারের নাম নিযামুদ্দীন। এ মতটি সঠিক হলে গ্রন্থকার খ্যাতনামা ওলামায়ে কেরামের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন বলে প্রমাণ করা অসম্ভব। কেননা ইতিহাস গ্রন্থাবলিতে এ নামের গ্রন্থকারের পরিচয় পাওয়া যায় না। পরবর্তীকালে গবেষকগণ তাঁর পরিচয় নিম্নরূপ প্রকাশ করেন।

ফেহরেস্ত খেদাভী মিসর গ্রন্থে উসূলুশ শাশী গ্রন্থকারের মূল নাম হলো ইবরাহীম ইবনে ইসহাক এবং তাঁর উপাধি হলো নিযামুদ্দীন। তাঁর নামটি এভাবে লেখা হতো ‘নিযামুদ্দীন ইবরাহীম ইবনে ইসহাক’। তাই ইবরাহীম ও নিযামুদ্দীন এ দুটির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই ।

শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবন : গ্রন্থকারের নাম ও পরিচয় গোপন থাকায় তাঁর কর্মজীবন, শিক্ষাজীবন জাতির অগোচরে থেকে যায়। তবে তিনি যেই হোন না কেন, তাঁর শিক্ষাজীবন ব্যাপক ছিল, তাঁর কর্ম পরিধিও প্রশস্ত ছিল, তাঁর রেখে যাওয়া স্মৃতিটুকুই তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণবাহী।

ইন্তেকাল : এ মহান মনীষীর জীবন মৃত্যু ইতিহাসের কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আমার মূল লক্ষ্য একটাই (Sikkhagar-শিক্ষাগার) ওয়েবসাইটের হাত ধরে “শিক্ষা হবে উন্মুক্ত ও বাণিজ্যমুক্ত”। এই প্লাটফর্মে থাকবে একাডেমিক প্রস্তুতি, ভর্তি প্রস্তুতি, চাকরি প্রস্তুতি, স্পেশাল স্কিল এবং ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানাবিধ বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ।

Leave a Comment