হোম পদার্থ রসায়ন জীব ইসলামিক

শ্বসন কাকে বলে কত প্রকার। শ্বসনের গুরুত্ব ও বিক্রিয়া

প্রতিটি জীবের জীবনধারণের জন্য শক্তির প্রয়োজন । সূর্যই সব শক্তির উৎস। সবুজ উদ্ভিদ সালোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় সৌর শক্তিকে রাসায়নিক শক্তি হিসেবে শর্করা ও অন্যান্য জৈবযৌগে সঞ্চয় করে রাখে। শ্বসন প্রক্রিয়ায় এ সমস্ত স্থৈতিক শক্তি গতিশক্তি রূপে মুক্ত হয় এবং ATP-এর মধ্যে আবদ্ধ হয়।

এছাড়া আরও কিছু উচ্চ শক্তিধর যৌগের (NADH, FADH, ইত্যাদি) সৃষ্টি হয়, এ সমস্ত শক্তিধারণকারী যৌগ জীবের বিপাকীয় কাজের প্রয়োজনীয় শক্তি যোগায় ।

শ্বসন কী ?

যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় O2 এর উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে কোষের জৈবখাদ্য জারণের মাধ্যমে শক্তি নির্গত করে এবং উপজাতদ্রব্য হিসেবে CO2 ও পানি উৎপন্ন করে তাই শ্বসন ।

শ্বসন কাকে বলে ?

যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় অক্সিজেনের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতিতে জটিল জৈব যৌগ জারিত হয়ে সরল যৌগে পরিণত হয় এবং স্থৈতিক শক্তি গতি শক্তিতে রূপান্তরিত হয় সে প্রক্রিয়াকে শ্বসন বলা হয় ।

শ্বসন কত প্রকার ও কি কি ?

শ্বসনের সময় অক্সিজেনের প্রাপ্যতার ভিত্তিতে শ্বসনকে দুভাগে করা হয়। যথা :

(i) সবাত শ্বসন ও (ii) অবাত শ্বসন।

(i) সবাত শ্বসন (Aerobic respiration) : যে শ্বসন প্রক্রিয়ায় মুক্ত অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় এবং শ্বসনিক বস্তু সম্পূর্ণভাবে জারিত হয়ে CO2, পানি ও বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করে তাকে সবাত শ্বসন বলে।

(ii) অবাত শ্বসন (Anaerobic respiration) : যে শ্বসন প্রক্রিয়ায় কোনো শ্বসনিক বস্তু অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে কোষ মধ্যস্থ এনজাইম দ্বারা আংশিকরূপে জারিত হয়ে অ্যালকোহল বা ল্যাকটিক এসিড, CO2 ও সামান্য পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করে তাকে অবাত শ্বসন বলে ।

সবাত শ্বসনের বিক্রিয়াসমূহ কিছু অংশ সাইটোপ্লাজমে এবং কিছু অংশ মাইটোকন্ড্রিয়ার অভ্যন্তরে সম্পন্ন হয়। অপরপক্ষে, অবাত শ্বসনের সমুদয় বিক্রিয়া সাইটোপ্লাজমের অভ্যন্তরে সম্পন্ন হয় ।

শ্বসনের রাসায়নিক বিক্রিয়া :

C6H 12 O6+6O2⟶ 6CO2+ 6H2O + শক্তি

অর্থাৎ, গ্লুকোজ + অক্সিজেন → কার্বন ডাইঅক্সাইড + পানি + শক্তি

শ্বসনের গুরুত্ব :

শক্তি উৎপাদন : জীবদেহে সংঘটিত জৈবিক প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি আসে শ্বসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। কাজেই শক্তি উৎপাদনের জন্য জীবের জীবনে শ্বসন প্রক্রিয়ার প্রকৃত গুরুত্ব নিহিত রয়েছে।

CO2-এর ব্যবহার : শ্বসন প্রকিয়ায় নির্গত কার্বন ডাইঅক্সাইড সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয় এবং জীব জগতের জন্য প্রয়োজনীয় শর্করা জাতীয় খাদ্য উৎপন্ন করে। নির্গত কার্বন ডাইঅক্সাইড প্রকৃতিতে এর ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

বিপাকীয় শক্তির যোগান : উদ্ভিদে পুষ্টিমৌলের শোষণে যে বিপাকীয় শক্তির প্রয়োজন হয় তা শ্বসন থেকে আসে। শ্বসনের হার কমে গেলে পুষ্টিমৌলের শোষণও কমে যায়। ফলে বিপাকীয় কাজ ব্যাহত হয় ।

কোষ বিভাজন ও দৈহিক বৃদ্ধি : কোষ বিভাজনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি ও কিছু আনুষঙ্গিক পদার্থ শ্বসন প্রক্রিয়া থেকে আসে । কোষ বিভাজনে এর ভূমিকার দ্বারা উদ্ভিদ দৈহিক বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে ।

যৌগ সংশ্লেষণ : শ্বসন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন বিভিন্ন যৌগ উদ্ভিদে অ্যামিনো এসিড, নিউক্লিক এসিড, গ্লিসারল, ফ্যাটি এসিড, লিপিড ইত্যাদি যৌগ সংশ্লেষণে কাজে লাগে ।

তাপমাত্রা রক্ষা : শ্বসনে সৃষ্ট তাপ জীবদেহের প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা বজায় রাখে ।

এনজাইম ও ভিটামিন : বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার অবাত শ্বসন দ্বারা বাণিজ্যিকভাবে এনজাইম ও ভিটামিন উৎপাদন করা হয়।

শিল্পদ্রব্য উৎপাদন : অণুজীবের অবাত শ্বসন বা ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শিল্পদ্রব্য যেমন-সাইট্রিক এসিড, ল্যাকটিক এসিড, ওয়াইন, ভিনিগার, ওষুধ, অ্যালকোহল, বায়োগ্যাস, বায়োডিজেল প্রভৃতি উৎপাদন করা হয়।

বেকারি ও দুগ্ধজাত খাদ্য : অণুজীবের অবাত শ্বসনকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ বিভিন্ন রকম বেকারি (পাউরুটি, আচার, সস) এবং দুগ্ধজাত (দই, পনির, ইয়োগাট, ক্রিম) খাদ্য তৈরি করে থাকে ।

শিক্ষাগার

প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে

মাহমুদুল হাসান

শিক্ষাগত যোগ্যতা
গণিতে অনার্স ও মাস্টার্স

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

ফাজিল সম্পন্ন

গোপালপুর দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা

বিশেষ দক্ষতা

বাংলা সাহিত্য • গণিত • ইসলামিক শিক্ষা

অভিজ্ঞতা

শিক্ষকতা ও ৫+ বছর কন্টেন্ট রাইটিং

আমাদের লক্ষ্য

শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করা। ২০২৩ সাল থেকে লাখো শিক্ষার্থী শিক্ষাগার থেকে উপকৃত হচ্ছে।

Leave a Comment