আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর প্রিয় হাবীবকে সর্বশেষ নবী হিসেবে প্রেরণ করে নবুয়ত ও রেসালাতের দ্বার রুদ্ধ করে দিয়েছেন । মহানবী (সাঃ) এর ইন্তেকালের পর যুগে যুগে বহু মিথ্যাবাদী খতমে নবুয়ত কে অস্বীকার করে নিজেকে নবী দাবি করার মতো ধৃষ্ঠতা প্রদর্শন করেছে। আর কাদিয়ানীরা ঐসব সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত একটি ভ্রান্ত দল । নিম্নে কাদিয়ানীদের প্রসঙ্গে আলোচনা করা হলো-
১. কাদিয়ানী ধর্মমত সৃষ্টির পটভূমি : কাদিয়ানী ভ্রান্ত দলের প্রতিষ্ঠাতা মির্জা গোলাম আহমদ পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার অন্তর্গত কাদিয়ান নামক গ্রামে ১৮৩৯ বা ১৮৪০ সনে জন্মগ্রহণ করে । সে ইসলামের ছদ্মাবরণে ইসলামের পরিভাষা ব্যবহার করে ইসলাম বহির্ভূত একটি নতুন ধর্মমতের সৃষ্টি করে। যাকে কাদিয়ানী ধর্মমত বলা হয় এবং এর অনুসারীদের কাদিয়ানী নামে আখ্যা দেওয়া হয় ।
আরও পড়ুন : কাদিয়ানী মতবাদ কি? তাদের আকিদা ও আকিদার মূলনীতি
২. মির্জা গোলাম আহমদের বংশ পরিচয় : এ ভ্রান্ত পণ্ডিত তার বংশ-পরিচয় সম্পর্কে নিজেই পরস্পর বিরোধী কথা বলেছে। একবার বলে যে, সে মুঘল বংশের, আবার বলে যে, সে পারস্য বংশোদ্ভূত, অতঃপর বলে যে, সে চীন বংশীয় লোক । –[মির্জা গোলামের প্রণীত হাকীকাতুল ওহী পৃ. ২০০]
সে আরো বলে, আল্লাহর কালাম হতে প্রকাশ যে, সে পারস্য বংশোদ্ভূত। পূর্বের সব কথা পরিবর্তন করে সে পুনরায় বলে যে, সে ফাতেমী ও রাসূল বংশের লোক । সে আবার বলে, সে ফাতেমী তথা রাসূল- তনয় হযরত ফাতেমার বংশধর এবং তার বংশ হযরত ইসহাকের উত্তরসূরী ।
৩. কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের মতাদর্শ ও স্বরূপ উদঘাটন : মির্জা গোলাম আহমদের মতাদর্শে বিশ্বাসীগণই কাদিয়ানী বলে পরিচিত। তারা ইসলামের লেবেল এঁটে এবং ইসলামি পরিভাষা ব্যবহার করে সরলপ্রাণ মুসলমানগণকে ধোঁকায় ফেলে ঈমানহারা করার অপচেষ্টায় লিপ্ত । অথচ তাদের মতবাদ ও ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পূর্ণরূপে ইসলামের পরিপন্থি । কুরআন ও হাদীসের অপব্যাখ্যা করে তারা নিজেদের মনগড়া একটি নতুন শরিয়ত প্রতিষ্ঠা করেছে। আর এটাকে ইসলামের নামে চালু করার অপকৌশলে লিপ্ত রয়েছে।
আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানসহ বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম রাষ্ট্রই কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে সরকারিভাবে অমুসলিম বলে ঘোষণা দিয়েছে।
আরও পড়ুন : গোলাম আহমদ কাদিয়ানী কে?তার ভ্রান্ত দাবিসমূহ কি? ও তার আকিদা
৪. আল্লাহ সম্পর্কে কাদিয়ানীদের আকীদা : কাদিয়ানী সম্প্রদায় কাফের হওয়ার প্রত্যক্ষ প্রমাণ নিম্নে তুলে ধরা হলো-
ক. গোলাম আহমদ বলে- “ঐ খোদা, যে আমার খোদা, সে হচ্ছে একটি সর্বগ্রাসী অগ্নি।” -[ ভ্রান্ত কাদিয়ানী ধর্মবিশ্বাস, পৃ. ১]
খ. গোলাম আহমদ আরো বলে, “আল্লাহর অস্তিত্বের প্রকৃতিকে আমরা এরূপ ধরে নিতে পারি যে, তাঁর অনেকগুলো হাত, পা আছে এবং তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অগণিত ও অসংখ্য । আর তা এত বড় যে, তাঁর দৈর্ঘ্য-প্রস্থের কোনো সীমা নেই । তিনি অক্টোপাস [সামুদ্রিক জীব] সদৃশ । তাঁর অনেক শিরা রয়েছে, যা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে সম্প্রসারিত। -[ কাদিয়ানী মতবাদ, পৃ. ১৩৩ ]
৫. আল-কুরআন ও ওহী সম্পর্কে তাদের আকীদা : সমগ্র মুসলমানদের ঈমানের একটি অংশ হচ্ছে পবিত্র কুরআনকে আসমানি কিতাবসমূহের মাঝে সর্বশেষ আসমানি কিতাব বলে বিশ্বাস করা । হযরত মুহাম্মদ -এর পর আর কোনো নবী ও রাসূলের আগমন হবে না এবং আর কোনো ওহীও আসবে না । অথচ গোলাম আহমদ বলে যে, তার উপর ওহী ও কুরআন সদৃশ কিতাব নাজিল হয়েছে এবং কুরআনে ভুলত্রুটি রয়েছে। এ ব্যাপারে তার এবং তার অনুসারীদের বক্তব্য লক্ষ্য করুন-
ক. “আমি যা কিছু আল্লাহর ওহী থেকে শুনি, খোদার কসম! সেটাকে সব রকমের ত্রুটি থেকে পবিত্র মনে করি । কুরআনের ন্যায় আমার ওহী ভুলত্রুটি থেকে মুক্ত। এটা আমার ঈমান ও বিশ্বাস। খোদার কসম! এটাও আল্লাহ তা’আলার মুখনিঃসৃত পবিত্র বাণী ।”
খ. মির্জা নিজে লিখেছে : আমি কুরআন সদৃশ বৈ তো নই ।
গ. কুরআন ভূপৃষ্ঠ থেকে উঠে গিয়েছিল, আমি [মির্জা] কুরআনকে পুনরায় আসমান থেকে নিয়ে এসেছি। [ ভ্রান্ত কাদিয়ানী ধর্ম বিশ্বাস, পৃ. ১৯]
আরও পড়ুন : জাহমিয়াদের পরিচয়, উৎপত্তির ইতিহাস ও আকিদার বিবরণ
৬. কালেমায়ে শাহাদাতের অভিনব ব্যাখ্যা : কাদিয়ানী সম্প্রদায় মনে করে, কুরআনে বর্ণিত আহমদ ও মুহাম্মদ নাম দ্বারা উদ্দেশ্য গোলাম আহমদ। তাই তারা বলে, কালেমায়ে শাহাদাতের বর্ণিত মুহাম্মদ বলতে গোলাম আহমদকেই বুঝায় । কারণ, গোলাম আহমদ হচ্ছে মুহাম্মদ । কি আশ্চর্য ব্যাখ্যা! উম্মতে মুহাম্মদীকে তারা কি একেবারেই মূর্খ ও অবুঝ মনে করে?
৭. নবী-রাসূল সম্পর্কে তাদের আকীদা : মির্জা গোলাম আহমদ ও তার অনুসারীরা ধৃষ্টতার সীমা লঙ্ঘন করে আল্লাহর প্রেরিত মুক্তির দিশারী নবী ও রাসূলগণ সম্পর্কে অত্যন্ত আপত্তিকর, ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বক্তব্য প্রকাশ করেছে । যার কিছু তথ্য নিম্নে প্রদত্ত হলো-
৮. বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সম্পর্কে গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর বক্তব্য :
ক. “কয়েকটি ইলহাম হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর বোধগম্য হয়নি। তাঁর [মুহাম্মদ সাঃ] থেকে কয়েকটি ভুলত্রুটিও হয়েছে । তিনি কয়েকটি ইলহাম বুঝতে পারেননি ।
খ. “হযরত মুহাম্মদ পরিপূর্ণভাবে ধর্ম প্রচার করতে পারেননি। আমিই পূর্ণতা দান করেছি।” উল্লেখ্য, গোলাম মির্জা তার এই উক্তি দ্বারা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে । কারণ আল্লাহ তা’আলা সূরা মায়েদার ৩ নং আয়াতে ঘোষণা করেন-
ٱلْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ ٱلْإِسْلَامَ دِينًا
“আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণ করলাম ও তোমার প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন মনোনীত করলাম।” আর যে ব্যক্তি কুরআনের আয়াত অস্বীকার করবে, সে নিঃসন্দেহে কাফের হয়ে যাবে। সুতরাং মির্জা যে কাফের, তাতে আর কোনো সন্দেহ রহলো না।
গ. মির্জা গোলাম আহমদ সম্পর্কে আরো একটি গুরুতর অভিযোগ হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ সর্বশেষ নবী বলে অস্বীকার করা, তদুপরি নিজেকেই আহমদ ও মুহাম্মদ (সাঃ ) ।
ঘ. হযরত মুহাম্মদ-(সাঃ )-এর মু’জিযা ৩ হাজার, আর তার মুজিযা দশ লক্ষের অধিক। [ কাদিয়ানী মতবাদ, পৃ. ৯৯]
ঙ. নবীর সকল কামালিয়াত মির্জার মধ্যে বিদ্যমান। [নাউযুবিল্লাহ!] – [ভ্রান্ত কাদিয়ানী ধর্মবিশ্বাস, পৃ. ৯]
৯. হাদীস সম্পর্কে তাদের আকীদা :
ক. গোলাম আহমদ বলে, “কুরআন হচ্ছে আল্লাহর কিতাব এবং আমার (মির্জার) মুখের কথাবার্তা, আর আমার এই দাবির ভিত্তি হাদীস নয়, কুরআন এবং ঐ ওহী, যা আমার উপর অবতীর্ণ হয়েছে। হ্যাঁ, বক্তব্যকে জোরদার করার জন্য আমি ঐ সমস্ত হাদীস উপস্থাপন করি, যা কুরআন শরীফের সমর্থক এবং আমার ওহীর বিরোধী নয় । এছাড়া অন্যান্য হাদীসকে প্রত্যাখ্যাত জিনিসের ন্যায় দূরে নিক্ষেপ করি।” [ভ্রান্ত কাদিয়ানী ধর্মবিশ্বাস— পৃ. ১৯]
খ. মির্জার পুত্র খলিফা মাহমুদ আহমদ বলে, “তিনি (মির্জা) যে হাদীসকে বিশুদ্ধ বলেন, তাকে আমরাও বিশুদ্ধ বলব, আর তিনি যে হাদীসকে দুর্বল বলেন, তাকে আমরাও দুর্বল বলব। যে হাদীস গোলাম আহমদের শিক্ষার আলোকে হবে, তা ভিন্ন আর কোনো হাদীস নেই এবং গোলাম আহমদের নেতৃত্ব বহির্ভূত কোনো নবী নেই।” [কাদিয়ানী মতবাদ— পৃ. ১৪৫-১৪৬]
১০. সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে তাদের আকীদা : ইসলামের দৃষ্টিতে যাদের স্থান রাসূলুল্লাহ -এর পরেই, তারা হচ্ছেন সাহাবায়ে কেরাম। তন্মধ্যে কয়েকজনকে তাদের মৃত্যুর পূর্বেই জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে । আর সকলেরই জানা যে, এদের মধ্যে হযরত আবূ বকর ও ওমর (রা.)-এর মর্যাদা সবার ঊর্ধ্বে । অথচ মির্জা গোলাম তাঁদেরকে অবমাননা করতে এবং হেয় প্রতিপন্ন করতে কোনোরূপ দ্বিধা করেনি । নিম্নে সাহাবাদের ব্যাপারে মির্জা ও তার অনুসারীদের অত্যন্ত জঘন্য কিছু উক্তি তুলে ধরা হলো-
১. তার তুলনায় হযরত আবূ বকর (রা.)-এর স্থান কোথায়? এর উত্তরে মির্জা গোলাম বলে, “সে তো [মির্জা] কোনো কোনো নবীর চেয়েও উত্তম। -[তাবলীগে রিসালাত খ. ৯, পৃ. ৩০]
২. “আর হযরত আবূ বকর (রা.)-এর মর্যাদা উম্মতে মুহাম্মদীর শত শত লোক অর্জন করেছে। [ভ্রান্ত কাদিয়ানী ধর্মবিশ্বাস- পৃ. ৭৪]
৩. হযরত আবূ বকর ও হযরত ওমর (রা.) সম্পর্কে তাদের উক্তি হচ্ছে- “তারা তো হযরত গোলাম আহমদের জুতার ফিতা খুলে দেওয়ার যোগ্যও ছিলেন না।”
৪. মির্জা গোলাম আহমদ মনে করে, সে ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইন অপেক্ষা উত্তম।
৫. আমার [মির্জার) প্রতিটি মুহূর্তের সফর এক একটি কারবালার যুদ্ধের সমতুল্য। শত হুসাইন আমার পকেটেই রয়েছে। – [ভ্রান্ত কাদিয়ানী ধর্মবিশ্বাস – পৃ. ১৭/]
৬. শ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক হাদীস সংগ্রহকারী হযরত আবূ হুরায়রা সম্পর্কে মির্জা গোলাম আহমদ বলে যে, তিনি নির্বোধ। তাঁর কোনো বোধশক্তি ছিল না।
৭. শালীনতা ও ভদ্রতার সীমা ছাড়িয়ে অত্যন্ত আপত্তিকর এক বক্তব্যে সে বলে, “হযরত ফাতেমা (রা.) কাশফের অবস্থায় তাঁর ঊরুতে আমার মাথা রাখলেন এবং আমাকে দেখালেন যে, আমি তার থেকে উদ্ভূত । -[প্রাগুক্ত; পৃ. ১৭]
১১. ইসলাম ও মুসলমান সম্পর্কে তাদের আকীদা : কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে সাধারণ মুসলমানগণ উম্মতে মুহাম্মদীরই একটি অংশ বলে মনে করে থাকে। তারা এটাও মনে করে যে, কাদিয়ানী সম্প্রদায় সকল মুসলমানকে মুসলমান বলেই স্বীকার করে থাকে, কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটি এর সম্পূর্ণ উল্টো। নিম্নে এর প্রমাণ পেশ করা হলো-
১. মিথ্যা নবীর দাবিদার গোলাম আহমদ বলেছে- “যে ব্যক্তি আমাকে নবী বলে বিশ্বাস করে না, সে আল্লাহ ও রাসূলকেও বিশ্বাস করে না।”
২. “আমার বিরুদ্ধবাদীরা জংলী শূকর হয়ে গেছে। আর তাদের স্ত্রীরা [স্বভাব-চরিত্রের দিক থেকে| কুকুরীদের অগ্রে চলে গেছে।”
৩. “যারা আমাকে সত্য বলে স্বীকার করে না, তারা রেন্ডির [বেশ্যার] বাচ্চা।”
৪. সে আরো বলে, “খোদা তা’আলা আমার নিকট প্রকাশ করে দিয়েছেন যে, এমন প্রত্যেক ব্যক্তি, যার নিকট আমার দাওয়াত পেয়েছে, অথচ সে আমাকে গ্রহণ করেনি, সে মুসলমান নয়।
১২. ওলামা ও আউলিয়ায়ে কেরাম সম্পর্কে তাদের আকীদা :
১. ভারতের তদানীন্তন যে সমস্ত বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরামের নিকট মির্জা গোলাম আহমদ চিঠি পাঠিয়েছিল, তাদের সেই চিঠিতে সালাম মাসনুন বা বিসমিল্লাহ পর্যন্ত না লেখায় এর কারণ জিজ্ঞেস করলে সে উত্তরে বলে, তাঁরা কাফের ছিল । কাফেরদের নিকট সালাম মাসনুন জায়েজ নেই । ফলে সে তাদেরকে সালাম দেয়নি।
২. আমি হচ্ছি খাতামুল আউলিয়া । আমার পরে কোনো ওলী নেই; কিন্তু [শুধুমাত্র] সে, যে আমার হতে।
৩. “আমার পূর্বে এই উম্মতের মধ্য হতে যত আউলিয়া, আবদাল ও আকতাব অতিক্রম করেছে, আমি তাদের সবার শ্রেষ্ঠ।”
৪. “এই অধমকে আল্লাহ তা’আলা ঐ সমস্ত ব্যক্তির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন, যারা হযরত মুজাদ্দিদে আলফেসানী হতেও শ্রেষ্ঠ ছিলেন।
১৩. তাদের মতে মুসলমান ইমামের পিছনে নামাজ পড়া হারাম :
১. মির্জা কাদিয়ানী বলে, “যে ব্যক্তি আমাকে অবিশ্বাস করে এবং আমার আনুগত্য করতে ইতস্তত করে, তার পিছনে নামাজ পড়া অকাট্য হারাম; বরং তোমাদের মধ্য হতে কোনো এক ইমামের পিছনে নামাজ পড়াই তোমাদের কর্তব্য।
২. “আমাদের জন্য এটা অপরিহার্য এবং ফরজ যে, আমরা অকাদিয়ানীদেরকে অমুসলিম মনে করব। আর তাদের পিছনে নামাজ পড়ব না। কেননা আমাদের মতে, তারা আল্লাহর একজন নবী [মির্জা]-কে অস্বীকার করেছে । এছাড়া কাদিয়ানীরা বিশ্বাস করে যে, কাদিয়ান শহর মক্কা শরীফ ও মদিনা শরীফের সমতুল্য এবং তদপেক্ষাও উত্তম ।
১৪. মির্জাদের মতে কাদিয়ানে আগমনই হচ্ছে হজ : মির্জা গোলাম আহমদের পুত্র দ্বিতীয় খলিফা বলে, “কাদিয়ানে অনুষ্ঠিত আমাদের বার্ষিক সম্মেলনই হলো হজ । আল্লাহ তা’আলা হজের স্থান স্বরূপ কাদিয়ানকে বাছাই করেছেন। তাই এখানে অশ্লীলতা, পাপাচার ও ঝগড়া-বিবাদ নিষিদ্ধ ।” -[বারাকাতুল খিলাফত, পৃ. ৫-৭]
১৫. গোলাম আহমদ কাদিয়ানী জিহাদকে হারাম ঘোষণা করেছে : উনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে এবং বিংশ শতাব্দীর প্রথম থেকে ভারতীয় মুসলমানগণ সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হন এবং এদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেন।
যখন ইংরেজরা দিশাহারা হয়ে পড়ল, চারদিক থেকে তাদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড প্রতিরোধ গড়ে তোলা হলো, তখন ইংরেজরা সশস্ত্র যুদ্ধে প্রায় ব্যর্থ হয়ে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে এবং তাদের লালিত ভণ্ড নবীকে সকল প্রকার সহযোগিতা করার সুবাদে গোলাম আহমদ কাদিয়ানী মুসলমানদের ফরজ বিধান জিহাদকে হারাম ঘোষণা করে। যেমন- সে বলে, “নিশ্চয়ই এ কাদিয়ানী সম্প্রদায় মুসলমানদের অন্তর থেকে জিহাদের অপবিত্র আকীদা দূর করতে দিবারাত্রি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।”
১৬. গোলাম আহমদই ঈসা (আ.) ও ইমাম মাহদী : এতক্ষণে এটি স্পষ্ট হলো যে, কাদিয়ানী হলো মুসলিম বিদ্বেষী, হিন্দু ও ইহুদিদের দোসর, মুসলমানদের চরম শত্রু। ইংরেজ ও ইসলাম বিদ্বেষীদের স্বার্থ রক্ষায় সদা তৎপর। ইহুদি ও ইংরেজদেরই অর্থে লালিত সদা এই দলটি গোটা মুসলিম মিল্লাতকে কলুষিত করার অপচেষ্টায় ব্যাপত ।