সংজ্ঞা : যে অব্যয় পদ একটি বাক্যের সাথে অন্য একটি বাক্যের অথবা বাক্যস্থিত একটি পদের সাথে অন্য একটি পদের সংযোজন বা বিয়োজন ঘটায়, তাকে সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে।
যেমন- রফিক ও আযম এ কাজ করেছে ৷ এই বাক্যে ‘রফিক’ ও ‘আযম’ পদদ্বয় ‘ও’ দ্বারা সংযোজন করা হয়েছে। সুতরাং ‘ও’ সমুচ্চয়ী অব্যয়।
সমুচ্চয়ী অব্যয়ের প্রকারভেদ :
সমুচ্চয়ী অব্যয়কে আবার ছয় ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
ক. সংযোজক অব্যয় : এ অব্যয় পদগুলো বিভিন্ন পদ, পদসমষ্টি ও বাক্যকে সংযুক্ত করে। এগুলো হল- এবং, আর, ও, অধিকন্তু ইত্যাদি। যেমন- তিনি বাড়ি গেলেন এবং আমি রওনা হলাম । সাপে আর নেউলে চির শত্রুতা ।
খ. বিয়োজক অব্যয় : এগুলো অর্থের দিক দিয়ে একাধিক পদ বা বাক্যকে পরস্পর থেকে পৃথক করে । এগুলো হল- হ্যাঁ, না, অথবা, কিংবা, নতুবা, নচেৎ, না হয়, নইলে ইত্যাদি। যেমন- শারমিন কিংবা মুনতাহা এ কাজ করেছে। মন দিয়ে লেখাপড়া কর নইলে ফেল করবে।
গ. সংকোচন বা প্রতিষেধক অব্যয় : এগুলো কোন একটি পদ বা বাক্যের অর্থের সাহায্যে অপর একটি পদ বা বাক্যের অর্থকে ভাবের দিক দিয়ে সংকুচিত করে। এগুলো হল- কিন্তু, পরন্তু, বরং, বরঞ্চ, তথাপি, অথচ ইত্যাদি। যেমন- সে গরিব অথচ লোভী নয় । অসময়ে পরিশ্রম করলে লাভ হয় না বরং ক্ষতিই হয় ।
ঘ. হেতুবোধক অব্যয় : এ অব্যয় পদগুলো কারণ বা হেতু বুঝিয়ে দুটি বাক্যকে সংযুক্ত করে। এগুলো হল- যে, সুতরাং, অতএব, তাই, কাজেই, কারণ ইত্যাদি। যেমন- যে করেই হোক কাল সকালে আমি ফিরব। সুজন আজ বাড়ি আসবে না কারণ সে ছুটি পায়নি।
ঙ. নিত্য সম্বন্ধীয় বা সাপেক্ষ অব্যয় : কতকগুলো অব্যয় আছে যারা জোড়ায় জোড়ায় বসে এবং একটি অন্যটির ওপর নির্ভরশীল। এদের নিত্য সম্বন্ধীয় বা সাপেক্ষ অব্যয় বলে। এগুলো হল- বরং – তবু, যেমন- তেমন, যদিও – তথাপি, হয় – নয় ইত্যাদি। যেমন- হয় এখানে থাক নয় বাড়ি চলে যাও। বরং জান দেব তবু মান দেব না ।
চ. সিদ্ধান্তবাচক অব্যয় : যে সব অব্যয় সিদ্ধান্ত বা ব্যবস্থা বুঝায় তাদেরকে সিদ্ধান্তবাচক অব্যয় বলে। সিন্ধান্তবাচক অধ্যয়গুলো হল- তাই, অতএব, এজন্যে ইত্যাদি। যেমন- তুমি মনোযোগী, অতএব পরীক্ষায় পাস করবে। কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই, তাই চুপ করে বসে আছি।