স্বাধীনতা দিবস – রচনা ১০০, ২০০ এবং ৫০০ শব্দ

স্বাধীনতা দিবস রচনা – ১০০ শব্দ

সূচনা  : 

বিশ্বের ছোট-বড় প্রতিটি দেশেরই রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল জাতীয় দিবস। অত্যন্ত মর্যাদার সঙ্গে এসব দিবস পালন করা হয়। আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ তেমনই একটি মর্যাদাপূর্ণ দিন ।

২৬ মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস : 

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতের পর, অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত নয় মাস ধরে চলেছে। তবে ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। স্বাধীনতার ঘোষণা এবং যুদ্ধ শুরু হয়েছিল বলে এটিই আমাদের স্বাধীনতা দিবস ।

স্বাধীনতা দিবস উদযাপন : 

১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়। প্রতিবছর এই দিনে দেশের সব স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকে। তোপধ্বনি, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ, সামরিক কুচকাওয়াজ, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন ইত্যাদির মধ্য দিয়ে এ দিবসটি উদযাপিত হয়।

উপসংহার : 

স্বাধীনতা একটি জাতির সবচেয়ে গৌরবের বিষয়। যেকোনো মূল্যে আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখব।

আরও পড়ুন :- বিজয় দিবস – রচনা [class 6, 7, 8, 9 ] এবং HSC

স্বাধীনতা দিবস রচনা – ২০০ শব্দ

সূচনা : 

প্রত্যেক জাতিরই এমন কতকগুলো গৌরবোজ্জ্বল জাতীয় দিবস থাকে, যেগুলোকে জাতি অত্যন্ত মর্যাদার সাথে পালন করে থাকে। বাঙালি জাতির সে রকম একটি গৌরবোজ্জ্বল দিবস স্বাধীনতা দিবস ।

অতীত ইতিহাস : 

২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। আমরা অতীতে ছিলাম বিদেশি শাসক ব্রিটিশের অধীন। পরে ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ছেড়ে ব্রিটিশ শাসকরা চলে যায়। জন্ম নেয় ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্র। পূর্ব বাংলা ছিল পাকিস্তানের অন্তর্গত এবং পূর্ব বাংলার নামকরণ করা হয় পূর্ব পাকিস্তান। তৎকালীন পাকিস্তান সরকার নানাভাবে বঞ্চিত করতে লাগল পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দিল (১৯৪৯ সালে)।

মুক্তিযুদ্ধ : 

১৯৭১ এর ২৫ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তান হানাদার বাহিনী আমাদের ওপর নিষ্ঠুর আঘাত হানে। নির্বিচারে চালায় গণহত্যা আর নির্যাতন। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ছাত্র-জনতার মিলিত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জিত হয়। ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনী পরাজিত হয় এবং আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।

স্বাধীনতা দিবস : 

২৬ মার্চকে আমরা স্বাধীনতা দিবস রূপে উদযাপন করি। স্বাধীনতা দিবসে আমাদের জাতীয় পতাকা উড্ডয়ন করি এবং জাতীয় স্মৃতি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করি ।

জাতীয় চেতনায় স্বাধীনতা দিবস : 

জাতি হিসেবে নিজেদেরকে স্বতন্ত্রভাবে ভাবতে শিখিয়েছে স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখিয়েছে স্বাধীনতা দিবস।

উপসংহার : 

২৬ মার্চ আমাদের জীবনে এক স্মরণীয় দিন। এদিন স্বাধীন জাতি হিসেবে মাথা তোলার দিন। তাই আমাদের জাতীয় জীবনে এ দিনটির গুরুত্ব ও মর্যাদা অপরিসীম।

আরও পড়ুন :- আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস [ রচনা PDF ৬টি – শ্রেণী ভিত্তিক ]

স্বাধীনতা দিবস রচনা – ৫০০ শব্দ

উপস্থাপনাঃ 

২৬শে মার্চ আমাদের জাতীয় ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। এ দিন আমদের স্বাধীনতা দিবস। দিনটি আমাদের নিকট অন্তহীন শক্তির উৎস, পথের দিশারী, অন্ধকারে আলোর ঝিলিক। এটি আমাদের পরম উৎসব এবং পরম আনন্দের দিনও বটে।

পূর্বকথা :

১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ, সেদিন আমাদের স্বাধীনতা বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ঘোষিত হয়েছিল। জাতিধর্ম নির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষ জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়েছিল সেদিন ।

অতীতে আমরা দীর্ঘদিন বৃটিশ শাসনের অধীনে ছিলাম । ১৯৪৭ সালেল ১৪ই আগষ্ট পাকিস্তান ও ভারত স্বাধীন হয় । আমরা পূর্ব পাকিস্তানের অধিবাসী ছিলাম কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের কিছু সংখ্যক কুচক্রী নেতা নানা ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানকে ঠকাতে এবং অর্থ বণ্টন, রাজনীতি, চাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে আমাদের ন্যায্য অংশ থেকে বঞ্চিত করে। 

তদুপরি তারা নানা রকম দমননীতি চালাতে থাকে । ১৯৫২ সালে আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবী নস্যাৎ করে দেয়ার জন্য ছাত্রনেতাদের উপর গুলী চালায় । এর ফলে দিনে দিনে আন্দোলন আরও তীব্র আকার ধারণ করে। এরই প্রেক্ষিতে পাকিস্তানীদের ক্ষমতা হস্তান্তর করার নামে হঠকারিতা দেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বিশাল জনসভায় জনগণকে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন এবং সংগ্রামের জন্য আহ্বান জানান । 

২৫শে মার্চ কালরাত্রিতে পাক সেনারা বাঙালীদের ওপর আঘাত হানে। ১৯৭১ সালে ২৬শে মার্চ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্ব ঘোষিত হয়-‘স্বাধীনতা’ ঘোষণা বঙ্গবন্ধুর ভাষণের ভেতর দিয়ে। এরপর শুরু হয় মুক্তির সংগ্রাম । দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ চলে। বাংলাদেশের ছাত্র, কৃষক, শ্রমিক ও বুদ্ধিজীবীসহ সর্বস্তরের লোক মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। 

বাংলাদেশের পুলিশ, বি ডি আর, সৈনিক, অফিসার ও জোয়ানরা প্রচণ্ড বিক্রমে এগিয়ে আসে। ফলে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী পরাজয় বরণ করে এবং বাংলাদেশ মুক্ত হয় । প্রতি বছরের ২৬শে মার্চ তাই আমাদের কাছে এক প্রিয় এবং স্মরণীয় দিন।

২৬ মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস : 

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতের পর, অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত নয় মাস ধরে চলেছে। তবে ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। স্বাধীনতার ঘোষণা এবং যুদ্ধ শুরু হয়েছিল বলে এটিই আমাদের স্বাধীনতা দিবস ।

জাতীয় জীবনে ২৬শে মার্চের মূল্যবোধ : 

আমাদের স্বাধীনতা দিবসটি আমাদের সংগ্রামী শক্তিরই অবদান ৷ আমরা যে কারো কাছে মাথা নত করি না, মাথা নত করতে জানি না, এ তারই ফলশ্রুতি । সুতরাং যে ত্যাগ-তিতিক্ষা ও এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা দিবসটি পেয়েছি তাকে তেমনি মর্যাদার সাথে রক্ষা করতে হবে। প্রতি বছর এ দিবসটি আসবে, প্রতিবারই আমরা একে তোপধ্বনি, সামরিক কুচকাওয়াজ, সভা-সমিতি, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল ইত্যাদি দিয়ে বরণ করে নেব।

উদযাপন : 

এদিন প্রভাতের আলো ফুটতেই ৩১ বার তোপধ্বনি করা হয় এবং আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ে। তারা সবার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে । সারাদেশে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় । বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উড়তে থাকে সব সরকারী ও বেসরকারী ভবনে। 

স্টেডিয়ামে শিশু-কিশোরদের কুচকওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়, নদীতে হয় নৌকা বাইচ, মাঠে মাঠে প্রীতি ফুট বল খেলা হয় বিভিন্ন দলের মধ্যে, ঘরে ঘরে আনন্দের তুফান বয়ে যায়। বেতার ও টেলিভিশনে স্বাধীনতার তাৎপর্য বিষয়ে অনুষ্ঠান প্রচারিত হয় ।

উপসংহার :

২৬শে মার্চ আমরা দুনিয়ার মধ্যে একটি স্বাধীন ও বিশিষ্ট জাতি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছি। জাতির ইতিহাসে তুলনাহীন এর মার্যাদা । এ দিনটি আমাদের জাতীয় মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দিন, আমাদের শক্তি ও প্রেরণার উৎস

আমার মূল লক্ষ্য একটাই (Sikkhagar-শিক্ষাগার) ওয়েবসাইটের হাত ধরে “শিক্ষা হবে উন্মুক্ত ও বাণিজ্যমুক্ত”। এই প্লাটফর্মে থাকবে একাডেমিক প্রস্তুতি, ভর্তি প্রস্তুতি, চাকরি প্রস্তুতি, স্পেশাল স্কিল এবং ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানাবিধ বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ।

Leave a Comment