ধান – বাংলা রচনা [ Class 2, 3, 4, 5 ]

ধান রচনা – ১

সূচনা : 

ধান আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ফসল ।

প্রকারভেদ ও বর্ণনা : 

আমাদের দেশে সাধারণত চার প্রকার ধান হয়। যথা— আউশ, আমন, বোরো ও ইরি। ধান তৃণজাতীয় উদ্ভিদ। ধান গাছের পাতা সরু ও দীর্ঘ হয়। কাঁচা ধানগাছ সবুজ থাকে। পাকা ধানগাছ ও ধানের ছড়ার রং সোনালি হয় ।

ধানের চাষ : 

আমাদের দেশের বেশিরভাগ জমিতেই ধান চাষ করা হয়। বছরের কিছু সময় হাওর, খাল, বিল এবং নদীর চরেও ধানের চাষ হয়। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই ধান চাষ হয়। তবে এশিয়া মহাদেশ, বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, চীন ও থাইল্যান্ড ধানের জন্য বিখ্যাত। বাংলাদেশের বরিশাল, দিনাজপুর ও নওগাঁ জেলায় বেশি ধান উৎপাদিত হয়।

আরও পড়ুন :-  পাট – রচনা ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণি

চাষপ্রণালি : 

আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে আউশ, অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে আমন আর বৈশাখ মাসে বোরো ধান কাটা হয়। উচ্চফলনশীল ইরি ধানের চাষ বিভিন্ন সময়ে হয়ে থাকে। সাধারণত প্রথমে বীজ ছিটিয়ে ধানের চারা তোলা হয়। তারপর চারাগুলো নরম করে রাখা কাদাজমিতে রোপণ করা হয় । আগাছা পরিষ্কার করা এবং নিয়মিত সার ও পানিসেচ দেওয়ার পর একসময় পরিপক্ব ধান কাটা হয় ।

ব্যবহার : 

ধান থেকে চাল হয়। চাল দিয়ে ভাত রান্না করা হয়। ভাত বাংলাদেশসহ অনেক দেশের প্রধান খাদ্য। এ ছাড়া চাল থেকে চিড়া, মুড়ি, খই ইত্যাদি হালকা খাবার তৈরি হয়। ধানের খড় গরু- মহিষের খাদ্য। ধানের তুষ এবং খড়ও অনেক কাজে লাগে। তুষ থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় স্বাস্থ্যকর ভোজ্যতেল ।

উপসংহার : 

আমাদের দেশ ধান উৎপাদনে মোটামুটি স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া আগের মতো করে চাল আমদানি করতে হয় না। তবে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার বিবেচনায় কৃষির আধুনিকায়নের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানো প্রয়োজন ।

ধান রচনা – ২

সূচনা :

ধান তৃণ জাতীয় উদ্ভিদ। পৃথিবীতে যত রকমের খাদ্য শস্য জন্মে তার মধ্যে ধান হচ্ছে প্রধান ফসল। ধান থেকে চাল হয়। চাল থেকে ভাত হয়। ধান গাছ একবার ফসল দিয়ে মরে যায়। এ ধরনের গাছকে বলে ওষদি।

উৎপত্তিস্থান :

বাংলাদেশ, মায়ানমার, জাপান, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, মিশর, চীন ও আমেরিকায় প্রচুর ধান হয়। বার্মা, জাপান, থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের মানুষের প্রধান খাদ্য হচ্ছে ভাত।

Advertisement Advertisement

প্রকারভেদ ও উৎপাদন : 

ধান প্রধানত চার প্রকার। যথা : আউশ, আমন, ইরি ও বোরো। আউশ ধান শুকনো উঁচু জায়গায় ভাল জন্মে। বৈশাখ মাসে আউস ধানের বীজ বুনতে হয় এবং শ্রাবণ মাসে এ ধান পাকে। আমন উঁচু ও জলা দু’জায়গাতেই হয়। কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান পাকে। বোরো ধান জলমগ্ন মাঠে জন্মে। ইরি ধানের গোড়ায় সব সময় পানি থাকতে হয়।

আরও পড়ুন :- পাট – রচনা : ২য়, ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণি

চাষের নিয়ম : 

ধানের জমি খুব ভালোভাবে চাষ করতে হয়। তিন চারবার চাষ দেওয়ার পর মাটি যখন অত্যন্ত নরম হয়ে পড়ে তখন উঁচু জায়গায় বোনা রোপা ধান গাছের রোয়া এনে ভেজা কর্দমাক্ত মাটিতে লাইন করে বুনতে হয়। ধান গাছের গোড়া নিড়ানি দিয়ে সব সময় পরিষ্কার রাখতে হয়। এবং গাছে যেন পোকা-মাকড় লেগে ধানের শীষ কেটে না ফেলে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হয়।

উপকারিতা :

কথায় আছে ‘ভেতো বাঙালি’। বাংলাদেশের লোকদের প্রধান খাদ্য চাউল থেকে উৎপাদিত হয় ভাত। ভাত আমাদের প্রাণে শক্তি জোগায়, দেহে বল জোগায় ৷

উপসংহার :

ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য হলেও বৈজ্ঞানিকভাবে ধানের চাষাবাদ আমাদের দেশে ব্যাপকভাবে এখনও শুরু হয়নি। ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান উন্নত ধানবীজ ও ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।

ধান রচনা – ৩

ভূমিকা :

ধান বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য। ধান থেকে তৈরি চালের ভাত খেয়ে আমরা জীবনধারণ করি। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ লোক প্ৰধানত খাদ্যের জন্য ধানের ওপর নির্ভরশীল! বিশ্বের প্রায় সব দেশেই ধানের চাষ হয়। আমাদের দেশের জলবায়ু ধান চাষের উপযোগী।

প্রকারভেদ :

আমাদের দেশে প্রধানত চার প্রকারের ধান জন্মে- আউশ, আমন, বোরো ও ইরি। আউশ, আমন ও বোরো ধানের চাল খুব পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। ইরি ধানের ফলন বেশি হলেও তা তেমন পুষ্টিকর ও সুস্বাদু নয়, তবে ইদানিং পানিসেচের মাধ্যমে সারা দেশে প্রচুর ইরি ধান ফলানো হচ্ছে।

চাষাবাদ :

ধান উৎপাদন করা সহজ নয়। প্রথমে কৃষক ভালোভাবে জমি চাষ করে এবং কয়েকবার মই দেয়। তারপর সে ধানের বীজ বপন করে। শীঘ্রই ছোট ধান গাছ বের হয়ে আসে। কৃষক জমি থেকে আগাছা তুলে ফেলে এবং সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে। বৈশাখ মাসে আউশ ধান বোনা হয় এবং ভাদ্র মাসে কাটা হয়।

আরও পড়ুন :চা – বাংলা প্রবন্ধ রচনা

আমন ধান শীতকালে কাটা হয়। বোরো ধান বপন করা হয় শীতকালে এবং কাটা হয় বসন্তকালে। ইরি সারা বছর চাষ করা হয়। প্রায় চার মাসের মধ্যে ধান পাকে। ধান কাটার পর আঁটি বেঁধে বাড়িতে আনা হয়। কৃষকেরা গরুর সাহায্যে মাড়াই করে বা মেশিনের সাহায্যে গাছ থেকে ধান আলাদা করে এবং অতপর ধান সিদ্ধ করে রৌদ্রে শুকিয়ে মেশিনের সাহায্যে চাল পেয়ে থাকে।

উপকারিতা :

ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য। এছাড়া চিড়া, মুড়ি, খই, পিঠা ইত্যাদি ধান থেকে তৈরি করা হয়। ধানের খড় বা বিচালি গবাদি পশুর খাদ্য এবং তুষ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয় ।

উপসংহার : 

আমরা ভাত ছাড়া বাঁচতে পারি না। একে আমাদের জীবনীশক্তি বলা হয়। তাই ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য আমাদের চেষ্টা করা উচিত। তাহলেই বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে ওঠবে।

আরও পড়ুন

আমার মূল লক্ষ্য একটাই (Sikkhagar-শিক্ষাগার) ওয়েবসাইটের হাত ধরে “শিক্ষা হবে উন্মুক্ত ও বাণিজ্যমুক্ত”। এই প্লাটফর্মে থাকবে একাডেমিক প্রস্তুতি, ভর্তি প্রস্তুতি, চাকরি প্রস্তুতি, স্পেশাল স্কিল এবং ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানাবিধ বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ।

Leave a Comment

Advertisement Advertisement
error: Content is protected !!