উপস্থাপনা :
নর-নারীর সমন্বয়েই মানুষ জাতি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে বানিয়েছেন । সে হিসেবে মানুষ অন্য সব সৃষ্টির ওপর মর্যাদাবান। ইসলামই একমাত্র জীবন ব্যবস্থা, যেখানে মর্যাদার দিক থেকে নারীকে পুরুষের থেকে ভিন্ন করে দেখা হয় নি । আর নারী হলো মায়ের জাত। তাই ইসলামে নারীর মর্যাদা অতুলনীয়।
নারীর মর্যাদা বলতে কী বুঝায় :
মর্যাদা শব্দের অর্থ গৌরব, সম্ভ্রম, মূল্য, সম্মান ইত্যাদি। ‘নারীর মর্যাদা’ বলতে নারীর ন্যায়সঙ্গত অধিকারের স্বীকৃতিকে বুঝায় ।
ইসলাম পূর্ব যুগে নারী :
ইসলাম পূর্ব যুগের নারী ছিল সবচেয়ে অবহেলিত, লাঞ্ছিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত এবং অধিকারহারা । তখন তাদেরকে শুধুমাত্র ভোগের সামগ্রী মনে করা হত । কন্যা সন্তান জন্মের সাথে সাথে তাকে জীবন্ত সমাধিস্থ করা হত। নারীদেরকে স্ত্রী হিসেবে ব্যবহার করা হত । স্বামী যত খুশি স্ত্রী গ্রহণ করতে পারতো। আর স্বামী বা পিতার সম্পদের উত্তরাধিকার হতেও তারা বঞ্চিত ছিল।
আরও পড়ুন :- নারী শিক্ষা – বাংলা রচনা
ইসলামে নারীর মর্যাদা ঃ
অমর্যাদাকর সব ব্যবস্থার বিলুপ্তি ঘটিয়ে ইসলাম নারীকে দিয়েছে সম্মানজনক এক সামাজিক স্বীকৃতি। জীবনের বিভিন্ন স্তরে ইসলাম প্রদত্ত এই মর্যাদাগুলো নিম্নরূপ-
১. কন্যা হিসেবে মর্যাদা :
সন্তানের ব্যাপারে ইসলাম পুত্রের ওপর কন্যাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। জাহেলী যুগের কন্যা সন্তান প্রোথিত করা সংক্রান্ত ব্যাপারে আল-কুরআনে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। যেমন ইরশাদ হচ্ছে- “কিয়ামতের সেই দিনে কন্যা সন্তানকে জিজ্ঞেস করা হবে, কেন তাকে হত্যা করা হয়েছিল।’
২. বিবাহের মাধ্যমে মর্যাদা দান :
ইসলাম পূর্ব যুগে বিবাহের ক্ষেত্রে নারীদের কোনরূপ স্বীকৃত অধিকার ছিল না। ইসলাম এহেন ঘৃণিত প্রথার মূলোৎপাটন করে নারী-পুরুষের বৈবাহিক সূত্রে সম্পর্ক স্থাপন করার বিধান প্রণয়ন করেছে ।
৩. স্ত্রী হিসেবে মর্যাদা :
ইসলাম স্ত্রী হিসেবে নারীকে মর্যাদার আসনে আসীন করেছে। কুরআনে এসেছে ‘তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সদাচরণ কর।’ অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘নারীর ওপর যেমনি অধিকার রয়েছে পুরুষের, তেমনি রয়েছে পুরুষের ওপর নারীর। হাদীসে এসেছে- ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম।’
৪. মাতা হিসেবে মর্যাদা ঃ
ইসলাম নারীকে শ্রেষ্ঠ সম্মান দিয়েছে মা হিসেবে। জনৈক সাহাবী রাসূল (স)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আমার সদ্ব্যবহার পাবার অধিক হকদার কে? সাহাবীর পুনঃ পুনঃ জিজ্ঞাসার জবাবে রাসূল (স) প্রথম তিনবাই বলেছিলেন মায়ের কথা । চতুর্থবার পিতার কথা বলে মা হিসেবে নারীর উচ্চ মর্যাদার স্বীকৃতি দিয়েছিলেন তিনি। রাসূল (স) বলেছেন, ‘মায়ের পায়ের তলায় সন্তানের বেহেশত।’
আরও পড়ুন :- ইভটিজিং / নারী উত্যক্তকরণ রচনা [ ক্লাস ৬, ৭, ৮, ৯, ১০]
৫. সম্পত্তির অধিকার ঃ
ইসলাম পূর্ব যুগে নারীদেরকে সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হত। কিন্তু ইসলামে নারীদের যথাযোগ্য মর্যাদাসহ তাদের পৈতৃক ও স্বামীর সম্পত্তিতে নির্ধারিত অংশ দেয়া হয়েছে ।
৬. মহরানা প্রদান ঃ
ইসলাম পূর্ব যুগে বিবাহের ব্যাপারে কোন স্থায়ী বিধান ছিল না। ফলে নারীদের জীবন ছিল অনিশ্চিত। পরবর্তীতে ইসলাম পুরুষ কর্তৃক নারীকে মহরানা দিয়ে বিয়ে করার প্রথা প্রচলন করে। এতে তাদের মর্যাদা ঊর্ধ্বে তুলে ধরা হয় ।
৭. শিক্ষার অধিকার :
ইসলাম নারীকে শিক্ষার অধিকার দিয়েছে। পুরুষের পাশাপাশি নারীদের জন্যও বিদ্যা শিক্ষা ফরয করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মহানবী (স) বলেছেন, ‘প্রত্যেক নর-নারীর বিদ্যার্জন করা ফরয’।
৮. সংসারের তত্ত্বাবধান ঃ
ইসলামের দৃষ্টিতে পুরুষ-নারী পরস্পরের প্রতিযোগী নয়; বরং সহযোগী। এ প্রসঙ্গে মহানবী (স) বলেছেন, স্ত্রী তার স্বামীর পরিজনবর্গের এবং সন্তানদের তত্ত্বাবধানকারিণী।’
৯. চাকরির অধিকার ঃ
ইসলাম নারীকে অর্থনৈতিক প্রয়োজনে যথাসম্ভব পর্দার সাথে অর্থকরী কর্মে নিয়োজিত হবার অধিকার প্রদান করেছে।
১০. সেবামূলক কর্মকাণ্ড :
ইসলাম সেবামূলক কর্মকাণ্ডে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরকেও সমান অধিকার প্রদান করেছে। ইসলামের দৃষ্টিতে একজন নারী চিকিৎসক হতে পারে। ইসলামের দৃষ্টিতে একজন নারী অধ্যাপক হতে পারে, ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে। অর্থাৎ শিক্ষা-সংস্কৃতি থেকে শুরু করে জীবনের সার্বিক পরিমণ্ডলেই নারীরা সুনিয়ন্ত্রিত পন্থায় অবস্থান করে সেবামূলক কাজে ব্রতী হতে পারে।
উপসংহার :
আজকের এই সভ্যতার যুগে প্রগতিশীল অপশক্তি নারীমুক্তি নামে নারীকে আবার প্রাক-ইসলামী যুগের সেই যাতনাক্লিষ্ট অমর্যাদাকর জীবনের দিকে ধাবিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। কিন্তু ইতিহাসের সাক্ষ্য এটাই, যথার্থ মর্যাদা ও মুক্তির স্বাদ পেতে হলে নারীদেরকে ইসলামের দিকে ফিরে আসতে হবে।
রচনা: ইসলামে নারীর মর্যাদা (Class 6 -10) PDF ২টি
ফাইল সাইজ: 346 KB | ফরম্যাট: PDF
আপনার ফাইল প্রস্তুত হচ্ছে… অপেক্ষা করুন
30 সেকেন্ড
IELTS Preparation, অথবা
Online Degree Programs?
Explore trusted resources for students worldwide.
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও
আপনার লেখা রচনা অনেক উপকারে আসবে সকল ছাত্র/ছাত্রীদরে।
আপনাদের এমন মন্তব্য আমাদের আরও ভালো কিছু তৈরি করতে উৎসাহ জোগায়। আন্তরিক ধন্যবাদ! “
Good