আদিকোষ ও প্রকৃতকোষের সংজ্ঞা, পার্থক্য, বৈশিষ্ট, উদাহরণ

সংজ্ঞা:- যেসব কোষে কোনো সুসংগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না অর্থাৎ নিউক্লিয়ার মেমব্রেন ও নিউক্লিওলাস অনুপস্থিত, ফলে নিউক্লিয় পদার্থ সাইটোপ্লাজমে ভাসমান অবস্থায় থাকে তাদেরকে আদিকোষ বা প্রোক্যারিওটিক কোষ বলে ।

আদিকোষের উদাহরণ :-

ব্যাকটেরিয়ার কোষ, নীলাভ সবুজ শৈবালের কোষ ইত্যাদি ।
আদি কোষের চিত্র

আদি কোষের বৈশিষ্ট্য :-

  • আদিকোষে সুগঠিত কোনো  নিউক্লিয়াস থাকে না। এই জন্য এদেরকে আদি নিউক্লিয়াসযুক্ত কোষও বলা হয়।
  • আদিকোষের কোষের নিউক্লিয়াস  (nucleus) কোনো পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে না। যার ফলে নিউক্লিয়বস্তুটি সাইটোপ্লাজমে বিক্ষিপ্ত থাকে।
  • আদিকোষে  প্লাস্টিড, মাইটোকন্ড্রিয়া, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম ইত্যাদি যাৰ  অঙ্গাণু থাকে না তবে রাইবোজোম উপস্থিত থাকে।
  • আদিকোষ নীলাভ সবুজ শৈবাল (Blue Green Algae,), ব্যাকটেরিয়ায় (Bacteria) এ ধরনের কোষে থাকে ।

আদি কোষের dna দেখতে কেমন

আদি কোষে নন-হিস্টোন প্রোটিনযুক্ত একটি মাত্র বৃত্তাকার DNA থাকে যা সাইটোপ্লাজমে মুক্তভাবে অবস্থান করে। আদিকোষে বৃত্তাকার DNA যা মুক্তভাবে ছড়ানো থাকে তাকে নিউক্লিঅয়েড (Nucleoid) বলে। এদের রাইবোসোম 705 ।

আরও পড়ুন : দেহকোষ ও জননকোষের সংজ্ঞা, পার্থক্য ও উদাহরণ সহ ব্যাখ্যা

প্রকৃত কোষ (Eukaryotic cell)

সংজ্ঞা:- যেসব কোষে আদর্শ ও সুসংগঠিত নিউক্লিয়াস বিদ্যমান তাদেরকে প্রকৃ কোষ বা ইউক্যারিওটিক কোষ বলে । 

প্রকৃতকোষের উদাহরণ :-

বিভিন্ন শৈবাল, ছত্রাক, ব্রায়োফাইটা, টেরিডোফাইটা, নগ্নবীজী ও গুপ্তবীজী উদ্ভিদের কোষ।
 
কাজের ভিত্তিতে প্রকৃত কোষ দুই প্রকার, যথা- 
দেহ কোষ ও  জনন কোষ ।

প্রকৃত কোষের বৈশিষ্ট্য

  • প্রকৃত কোষের নিউক্লিয়াস (nucleus) সুগঠিত অর্থাৎ নিউক্লিয়ার ঝিল্লী (nuclear membrane) দ্বারা নিউক্লিওবস্তু পরিবেষ্টিত ও সুসংগঠিত। 

  • শৈবাল থেকে শুরু করে সপুষ্পক উদ্ভিদ এবং অ্যামিবা থেকে উন্নত প্রাণির দেহেও এ ধরনের কোষ থাকে। 

  • এসব কোষে রাইবোজোম ছাড়া অন্যান্য কোষীয় অঙ্গাণু উপস্থিত থাকে।

আরও পড়ুন :-  কোষ কাকে বলে? কোষের প্রকারভেদ। বৈশিষ্ট্য এবং আয়তন

আদিকোষ ও প্রকৃত কোষের পার্থক্য

আদিকোষ প্রকৃত কোষ
অত্যন্ত ছোট আকৃতির, অতি সরল কোষজ সংগঠন । অপেক্ষাকৃত বড় এবং অত্যন্ত জটিল কোষজ সংগঠন ।
অসংগঠিত অর্থাৎ নিউক্লিয়ার মেমব্রেন, নিউক্লিওলাস ও লিওক্লিওপ্লাজম থাকেনা । সুসংগঠিত। অর্থাৎ নিউক্লিয়ার মেমব্রেন, নিউক্লিওলাস ও নিউক্লিওপ্লাজম থাকে।
রাইবোসোম ছাড়া অন্য কোন কোষ অঙ্গাণু দেখা যায় না। রাইবোসোম ছাড়াও বহু অঙ্গাণু, যেমন- প্লাস্টিড, মাইটোকন্ড্রিয়া, অন্তঃপ্লাজমীয় জালিকা, গলজি বস্তু, লাইসোসোম ইত্যাদি দেখা যায় ।
এ্যামাইটোসিস; এটি সাধারণত ফিসন বা কনজ্যুগেশন এর আকারে প্রকাশ পায় । দেহকোষের ক্ষেত্রে মাইটোসিস, কিন্তু জননকোষ সৃষ্টির ক্ষেত্রে মিয়োসিস ।
কোষের কেন্দ্রে সাধারণত ক্রোমাটিন দানা থাকে। কোষের কেন্দ্রে ক্রোমাটিন দানার পরিবর্তে ক্রোমোসোম থাকে ।
অপেরণ আছে। অপেরণ নাই ।
সাইটেস্কেলেটন নাই । সাইটেস্কেলেটন আছে।

FAQs

১। আদি কোষ কোনটি ??
উত্তরঃ ব্যাকটেরিয়াকে আদি কোষী বা আদি কোষ বলা হয়।

২। আদি কোষ এর অপর নাম কি ?
উত্তরঃ প্রোক্যারিওটিক কোষ। 

৩। আদি কোষে কি থাকে না?
উত্তরঃ আদি কোষে নিউক্লিয়াস থাকে না।

৪। ব্যাকটেরিয়াকে আদিকোষী বলা হয় কেন
উত্তরঃ যেসব কোষের নিউক্লিয়াস সুগঠিত নয় তাকে আদিকোষ বলে। ব্যাকটেরিয়ার কোষে কোনো সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না বলে একে আদিকোষী বলা হয় ।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad