উপস্থাপনা :
আমাদের মাদরাসার নাম গোপালপুর দারুল উলূম কামিল মাদরাসা। এটা টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর থানায় অবস্থিত। মাদরাসার দক্ষিণ দিক দিয়ে একটি প্রশস্ত রাস্তা পশ্চিম হতে পূর্ব দিকে চলে গেছে। তারপর পূর্বদিকে রয়েছে খেলার মাঠ, মাঠের দক্ষিণ দিকে রয়েছে নারকেল সুপারি ঘেরা একটি পুকুর।
তাই স্থানটি অতি মনোরম। মাদরাসাটিও দেখতে খুবই সুন্দর। মাদ্রাসা গৃহটির সম্মুখে একটি সুন্দর কমপ্লেক্স রয়েছে। মাদরাসা হতে আরম্ভ করে রাস্তা পর্যন্ত বিরাট খেলার মাঠ। আমাদের মাদরাসার চারদিকে উন্মুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন।
আসবাবপত্র ও অবস্থান :
প্রত্যেক শ্রেণীতে ছাত্র-ছাত্রীদের বসবার জন্য বেঞ্চ এবং শিক্ষকের জন্য একটি করে চেয়ার ও টেবিল আছে। শ্রেণীকক্ষের এক কোণে একটি করে ব্ল্যাকবোর্ড রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্বদিকে অধ্যক্ষ সাহেবের কক্ষ। অপর পার্শ্বে শিক্ষকদের ও কেরানী সাহেবের কক্ষ। এর এক কোণে দপ্তরী বসে। এখানে আবার একটি পাঠাগার রয়েছে। পাঠাগারে অনেক বই-পত্র রয়েছে। ছাত্রগণ এখান হতে নানা প্রকার বই সংগ্রহ করে পাঠ করে থাকে ।
আরও পড়ুন :- আমাদের গ্রাম - রচনা : ক্লাস 6, 7, 8, 9, 10 - PDF
বর্ণনা :
মাদরাসার আশেপাশে নানা প্রকার গাছ আছে। সকল ঋতুতেই ছাত্র-ছাত্রীরা মাঠে নানা প্রকার খেলাধুলা করে থাকে। মাদরাসার সঙ্গেই একটি বোডিং হাউসও আছে। সেখানে প্রায় ২০০/৩০০ জন ছাত্র ও ৭/৮ জন শিক্ষক থাকার ব্যবস্থা আছে। আমাদের মাদরাসায় পাঠাগার তত ছোট নয় । সেখানে অনেক বই-পত্র আছে। ছাত্র ও শিক্ষকদের নিজ নিজ সুবিধামত সেখানে পড়াশুনা করেন ।
বর্তমান সময়ের উপযোগী জ্ঞানবিজ্ঞানের প্রায় সকল রকমের পুস্তকই অল্প বিস্তর এই লাইব্রেরীতে পাওয়া যায়। আমরা সে সুযোগের সদ্ব্যবহার করে থাকি । মাদরাসায় প্রায় ১৫০০ ছাত্র-ছাত্রী ও ৪৫ জন শিক্ষক আছেন। অধ্যক্ষ সাহেব সত্যিই একজন আদর্শ পুরুষ । জ্ঞান ও ব্যবহারের দিক দিয়ে তার মত লোক আজ-কাল খুব কমই দেখতে পাওয়া যায় । মাদরাসা আর ছাত্র-ছাত্রীরা যেন তার সর্বস্ব ।
তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের সহিত খুব ভাল ব্যবহার করেন । শিক্ষকদিগকে তিনি পূর্ণ মর্যাদা দেন। বাস্তবিকই তাঁর মত একজন আদর্শ পুরুষ আজকাল বড় একটা দেখা যায় না। তার জন্যই আজ মাদরাসার এত সুনাম। অন্যান্য শিক্ষকগণও অতিশয় যত্ন ও মনোযোগের সহিত ছাত্র- ছাত্রীদের পড়ায়ে থাকেন। চরিত্রিক দৃরতার জন্য তারা আমাদের অনুসরণীয় ।
বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোল, অঙ্ক, আরবি, বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয় আমরা মাদরাসায় পড়ে থাকি। ব্যায়াম চর্চার উপযুক্ত ব্যবস্থাদি মাদরাসায় পুরাপুরিই আছে। অধিকাংশ ছাত্রই বেতন দিয়ে পড়ে। গরীব ছেলে-মেয়েদের বিনা বেতনে, অর্ধ বেতনে পড়বার ব্যবস্থা আছে।
আরও পড়ুন :- রচনা : মাদ্রাসা শিক্ষা / মাদ্রাসা শিক্ষার প্রয়াজনীয়তা
মেয়েদের পৃথক বৃত্তির ব্যবস্থা আছে।গরীব অথচ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা বেতনে অধ্যয়নের ব্যবস্থা আছে। আমাদের মাদ্রাসার মাঠটি বড় বলে এতদঞ্চলের বার্ষিক ক্রীড়া-প্রতিযোগিতা এখানেই অনুষ্ঠিত হয় । বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী ও মিলাদ মাহফিলের সময় রীতিমত উৎসবই পালিত হয়।
বার্ষিক পুরস্কার, লেখাপড়া ছাড়া খেলাধুলাও হয়ে থাকে। খেলা শিখাবার জন্য একজন শারীরিক প্রশিক্ষক রয়েছেন। প্রত্যেক বছরই বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সভা হয়ে থাকে ।
উপসংহার :
অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীই মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়ে । তারা চরিত্রবান, মেধাবী ও পরিশ্রমী। উন্নত রুচি ও চরিত্রবলে বলীয়ান শিক্ষকবৃন্দ আমাদিগকে দিন দিন উন্নতির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। মাদ্রাসাটি আমাদের সকলের আদর ও গৌরবের প্রতিষ্ঠান। আমাদের মাদ্রাসাটি একটি আদর্শ মাদ্রাসা । আমি এর ছাত্র হিসেবে গর্ব করি ।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা