উপস্থাপনা :
অন্যের ওপর নির্ভুল না করে নিজের চেষ্টায় নিজের ওপর নির্ভর করতে শেখার নামই আত্মনির্ভরশীলতা বা স্বাবলম্বন । ইংরেজিতে একটি কথা আছে- "Self help is the best help." অর্থাৎ "স্বাবলম্বনই সর্বশ্রেষ্ঠ অবলম্বন।”
স্বাবলম্বনের প্রয়োজনীয়তা :
জীবনে উন্নতি এবং সফলতার স্বর্ণমৃগ করায়ত্ত করতে হলে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সাহসিকতার সাথে এগিয়ে যেতে হবে। স্বাবলম্বনের দ্বারাই মানুষের দৈহিক ও মানসিক শক্তির বিকাশ ঘটে। স্বাবলম্বী ব্যক্তির বুদ্ধি পরনির্ভরশীল ব্যক্তির বুদ্ধি অপেক্ষা তীক্ষ্ণ ও যুক্তিগ্রাহ্য। মানবজীবনে স্বাবলম্বনই উন্নতির সোপান।
ব্যক্তিগত জীবনে স্বাবলম্বনের গুরুত্ব :
ইংরেজিতে একটি কথা আছে-“God helps those who help themselves"- “অর্থাৎ আল্লাহ তাকে সাহায্য করে, যে নিজেকে সাহায্য করে।" স্বাবলম্বন হচ্ছে নিজেকে অবলম্বন। ব্যক্তিগত জীবনের বিকাশ ও মনুষ্যত্বের পরিস্ফুটনে স্বাবলম্বন গুরুত্বপূর্ণ দিক। মানবজীবনের কল্যাণের উত্তরণে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা, উদ্যম ও প্রতিভার মূল্য স্বতন্ত্র । অপর ব্যক্তির পিঠে ঠেস দিয়ে সামনের দিক অগ্রসর হওয়ার পেছনে কোন মাহাত্ম্য নেই।
আরও পড়ুন :- নিরক্ষরতা দূরীকরণ - বাংলা রচনা | Sikkhagar
জাতীয় জীবনে স্বাবলম্বনের গুরুত্ব :
জাতীয় জীবনে স্বাবলম্বনের অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য। এর ভিত্তি হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। যে জাতির মধ্যে আত্মবিশ্বাস নেই সে জাতি কখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি উন্নতির উচ্চশিখরে আরোহণ করেছে।
আত্মনির্ভরশীলতায় মহাপুরুষগণ :
জগতে বিভিন্ন ধর্মের মহাপুরুষদের জীবনী পর্যালোচনা করলে দেখা যায় তারা সব সময় আত্মনির্ভরশীলতায় বিশ্বাসী ছিলেন। তাঁরা মানুষকে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)।
আত্মনির্ভরশীল হওয়ার সময় :
আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য বাল্যকাল থেকেই উপযুক্ত শিক্ষা অর্জন করে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। মুঘল সম্রাটদের মধ্যে আকবর অতি অল্প সময়ে পিতাকে হারিয়ে বৈরাম খাঁর সাথে বহুযুদ্ধ পরিচালনা করে হাতে কলমে শিক্ষা নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন :- কর্মমুখী শিক্ষা বা কারিগরি শিক্ষা -রচনা [Class - 6, 7, 8 ,9 ,10]
স্বাবলম্বনহীন জীবন তুচ্ছ :
যে ব্যক্তির মাঝে স্বাবলম্বন নেই সে ব্যক্তি জীবনে কখনো উন্নতি লাভ করতে পারে না। তার জীবন করুণার বস্তু, সবার নিকট সে ঘূর্ণিত । তার জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে রয়েছে বাধা-বিপত্তি। সে কখনো জীবনকে আস্বাদন করতে পারে না।
স্বাবলম্বনের শিক্ষা :
স্বাবলম্বন মানবজীবনের অপরিহার্য ভূষণ। মূলতঃ মানুষের জীবন কর্মময়। কর্মমুখরতার মধ্য দিয়েই জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্যে স্বাবলম্বন একান্ত কাম্য ।
উপসংহার :
স্বাবলম্বন সাফল্য ও সমৃদ্ধির সোপান। মানুষ নিজেই নিজের ভাগ্য নির্মাতা। আর মানুষের দুঃসাধ্য বলতে কিছুই নেই। তাই নিজেকে জানার জন্য, দেশকে জানার জন্য, পৃথিবীকে জানার জন্যে স্বাবলম্বন অপরিহার্য। নিজের সুন্দর কর্মশক্তি বিকশিত ও কাজে লাগানোর মাঝে মানব জীবনের সার্থকতা।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা