বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা - বাংলা প্রবন্ধ রচনা

উপস্থাপনা  ঃ 

Education is life. - শিক্ষাই জীবন। Education is the backbone of a nation- “শিক্ষাই "জাতির মেরুদন্ড" । আকাঙ্ক্ষা মানুষকে বাঁচার পথ আবিষ্কারের প্রেরণা দেয়। মানুষ জন্মেই মানুষ হয় না। জন্মের পর নানাবিধ শিক্ষার মাধ্যমে নিজকে উপলব্ধি করে এবং উপযুক্ত শিক্ষার্জনের দ্বারা সে মানুষ হিসেবে পরিচিত লাভ করে। 

প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করা সব মানুষের একান্ত কর্তব্য। দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূর করতে হলে সকল মানুষকে শিক্ষিত হতে হবে তার জন্য চাই বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা। 

প্রয়োজনীয়তা : 

১৮ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত এদেশে কেবল নাম সই করতে পারে মাত্র শতকরা ৬৮ জন লোক। প্রাথমিক শিক্ষাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সংখ্যা হাতের আঙ্গুলে গোনা যায়। অতএব, দেখা যাচ্ছে মোট জনসংখ্যার শতকরা ৩২ ভাগ লোক নিরক্ষর। তারা অভিশপ্ত, বঞ্চিত । এজন্য প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ।

প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা : 

আমাদের দেশে পাঁচ বছর মেয়াদী প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। কিন্তু এ শিক্ষার ব্যাপক সম্প্রসারণ না ঘটার ফলে জনসংখ্যার বৃদ্ধির সাথে তাল রাখতে পারছে না। সেজন্য প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা সম্ভব হলে ক্রমবর্ধমান নিরক্ষরতা রোধ করা যেত।

আরও পড়ুন :- মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাদান- রচনা [Class - 6, 7, 8 ,9 ,10]এবং hsc

প্রাথমিক শিক্ষা আইন : 

সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯৯০ সালে জাতীয় সংসদে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা আইন পাস করে। এ আইনের প্রেক্ষিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী সকল ছেলে-মেয়েকে ১৯৯১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে বিদ্যালয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সমস্যা : 

বাধ্যতামূলক শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের পথে নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। যেমন- দারিদ্র্যের ফলে জনসাধারণের অর্থ ব্যয় কম, সরকারী সাহায্যও পর্যাপ্ত নয়। প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রেরও যথেষ্ট অভাব রয়েছে। বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য বিনামূল্যে পাঠপুস্তক প্রদানের যে রীতি আছে তার প্রেক্ষিতে আরো বিপুল পরিমাণ পাঠ্যপুস্তকের প্রয়োজন ।

সমস্যার সমাধান : 

দেশের বৃহত্তম স্বার্থে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যে এসব বাধা অবশ্যই দূর করতে হবে। এজন্য বিদ্যালয়ের গৃহ সংস্কার, সম্প্রসারণ ও আসবাবপত্রের ব্যবস্থা করতে হবে। সে সঙ্গে এমন কর্মসূচী নিতে হবে যাতে বিনামূল্যে শিক্ষার্থীকে পাঠ্যবই সরবরাহ করা যায়।

আরও পড়ুন :- বৃত্তিমূলক শিক্ষা : বাংলা  রচনা । Sikkhagar

বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষায় গৃহীত কর্মসূচি : 

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ১৯৯২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছেন। সরকার বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষাকে বাস্তবায়নের জন্য কতিপয় উদ্যোগও গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে নবনির্মিত সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়কে অনুমোদন দান এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭০ ভাগ শিক্ষিকা নিয়োগ অন্যতম। 

এছাড়াও বিনামূল্যে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বই দেয়া, বিনামূলে পোশাক সরবরাহ এবং গরিব ছাত্রদের জন্য শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষাকে কার্যকর করার জন্য জাতীয় প্রচার মাধ্যমগুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করছে সরকার দেশের এন. জি. ও গুলোকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন ।

উপসংহার : 

বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তনের পথে অর্থ প্রদান অন্তরায় হওয়া উচিত নয়। কারণ প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন করার মধ্যে আমাদের জাতীয় জীবনের উন্নতি নির্ভরশীল। তাই এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য দেশের সবাইকে আন্তরিকতা সহকারে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারের এই পদক্ষেপে সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা একান্ত কাম্য । Mathu Arnold বলেন, “The basic education for the children must be ensured if the nation.

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad