রচনা : মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার - ২০ পয়েন্ট

(toc) Table Of Contens

ভূমিকা : 

মাদকাসক্তি আজ বিশ্বের এক নম্বর সমস্যা। উন্নত - উন্নয়নশীল - অনুন্নত নির্বিশেষে সকল দেশই আজ এ সমস্যায় বিপর্যস্ত। মাদকাসক্তির মরন ছোবলে আমাদের নতুন প্রজন্ম, আমাদের সম্ভবাময় তরুণ সমাজ আজ বিপথগামী। মাদকাসক্তির নীল ছোবলে সামাজিক প্রগতি বিপন্ন। 

মাদকদ্রব্যসমূহ : 

মাদকের নেশা খুব দ্রুত মানুষকে আসক্ত করে, আর এই আসক্তির আকর্ষণশক্তি এত তীব্র যে, একবার যাকে স্পর্শ করে তার পক্ষে আবার পূর্বের সহজ জীবনে ফিরে আসা দুষ্কর। নারকোটিক ড্রাগ একজাতীয় মাদকদ্রব্য। হেরোইন, ব্রাউনসুগার, এল-এস-ডি, স্ম্যাক ইত্যাদি নানা রকম এর নাম। মানুষের নেশার জন্য রয়েছে আরও অনেক ড্রাগ । যেমন : গাঁজা, আফিম, চরস, ভাং, প্যাথেড্রিন, মরফিন, হাসিস, কোকেন ইত্যাদি ছাড়াও রয়েছে নানা রকম ঘুমের ট্যাবলেট। 

অধুনা আকাড়া কোকেনের সঙ্গে তামাক মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে নতুন ধরনের মাদকদ্রব্য। এ নতুন ড্রাগ ‘বাজুকো' নামে ইউরোপের বাজারগুলোতে এখন বেশ জমজমাট। গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল, গোল্ডেন ক্রিসেন্ট, গোল্ডেন ওয়েজ হেরোইনের মূল উৎস আফিম। আর আফিম পাওয়া যায় পপি উৎপাদনের মাধ্যমে।

সর্বনাশা নেশার উৎসভূমি : 

মাদকের উৎস বিদেশের নানান দেশে। আমেরিকা মহাদেশের কলম্বিয়া, বলিভিয়া, লাতিন আমেরিকায় নারকোটিক ড্রাগ তৈরির বিশাল বিশাল চক্র আছে। আমাজানের অববাহিকার গভীর জঙ্গলে 'ল্যান্ড অব ট্যাঙ্ককোয়েলিটি' নামক অঞ্চলে নারকোটিক ড্রাগ শিল্পের বেআইনি শহরটির কথা প্রসঙ্গত স্মরণ করা যায়।

এশিয়ার তিনটি এলাকায় প্রধানত পপি উৎপাদিত হয়। এলাকা তিনটি হলো— গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল, গোল্ডেন ক্রিসেন্ট ও গোল্ডেন ওয়েজ। কর্কটক্রান্তির উত্তর ১৮° থেকে ২৪° দ্রাঘিমাংশের মধ্যে গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল অবস্থিত। এর পরিধি থাইল্যান্ড, লাওস ও বার্মা। পপি উৎপাদনকারী গোল্ডেন ক্রিসেন্টের বিস্তৃতি পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান, তুরস্ক জুড়ে। এর মধ্যে সিংহভাগ উৎপন্ন হয় পাকিস্তানে। গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল ও গোল্ডেন ক্রিসেন্টের মধ্যবর্তী অপর একটি নতুন অঞ্চল গোল্ডেন ওয়েজ।

আরও পড়ুন :- বাংলা প্রবন্ধ রচনা : দেশ/জাতি গঠনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা - ২০ পয়েন্ট

এ অঞ্চলটি ভারত এবং নেপাল সীমান্তে। প্রাপ্ত তথ্য মতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কলাম্বিয়া, বলিভিয়া, গুয়েতেমালা, জ্যামাইকা, ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে, ঘানা, নাইজেরিয়া, কেনিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা, পেরু কোকেন উৎপাদনকারী উল্লেখযোগ্য দেশ। মেক্সিকো, যুগোশ্লাভিয়া, হাঙ্গেরীর সীমান্ত প্রদেশ সাইপ্রাস, ইরান, আফগানিস্তান, ভারত, বার্মা, থাইল্যান্ড, নাওস ও অস্ট্রেলিয়ায় আফিম এবং হেরোইন উৎপন্ন হয় । হাসিস উৎপাদনের ক্ষেত্রে জ্যামাইকা, মরক্কো, জর্ডান, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তান সমধিক পরিচিত।

পৃথিবী ও বাংলাদেশে মাদকাসক্ত লোকসংখ্যা : 

পৃথিবীর শতাধিক দেশের ৫০ থেকে ৬০ কোটি মানুষ মাদকে আসক্ত বলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এক রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছে। ৩৬টি দেশে অধিক ক্ষতিকর মাদক উৎপাদন করা হলেও এর স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শতাধিক দেশকে মাদকের লীলা ক্ষেত্রে পরিণত করেছে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক এক সরকারি জরিপে জানা গেছে যে, সমগ্র দেশে ১৭ লাখ মানুষ মাদকাসক্ত। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, বর্তমানে দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৫০ লাখেরও বেশি। প্যাথেড্রিন আসক্তদের মধ্যে বেশি হচ্ছে মহিলার সংখ্যা ।

বিভিন্ন ধরনের ড্রাগের কবলে বাংলাদেশ : 

ড্রাগের উৎপাদন বাড়ছে দ্রুত গতিতে। এবার তো বাজার দরকার। এই বাজারের অন্যতম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে। স্বাধীনতার কয়েক বছর পর থেকে বাংলাদেশে এই নেশা ব্যাপকভাবে ছড়াতে শুরু করেছিল। গাঁজা, চরস, হাসিস, হেরোইন, কোকেন, হেম্প, ব্রাউনসুগার, ওপিয়াম ডেরিভেটিস ইত্যাদি মাদকদ্রব্যে ছেয়ে গেছে দেশ।

এ গ্রাম হেরোইন বা ব্রাউনসুগার দু থেকে তিনবার ব্যবহার করলে সে ব্যক্তি আর এ নেশা থেকে নিজেকে সহজে মুক্ত করতে পারে না। কৌতূহলের বশবর্তী হয়েও যারা এ নেশার কবলে একবার প্রবেশ করেছে, তারা হয়েছে নরকের কারাগারে বন্দী।

মাদকাসক্তির কারণ : 

বেকারত্ব, হতাশা, বন্ধুবান্ধবের প্ররোচনায় কৌতূহল মেটাতেও মানুষ দুএকবার মাদক সেবন করতে গিয়ে আর বেরিয়ে আসতে পারে নি তার যাদুস্পর্শ থেকে। কোথাও কোনো মানসিক আঘাত পেলে সাময়িকভাবে ভুলে থাকার জন্যও মানুষ মাদক সেবন করে, কিন্তু পরে তা নেশায় পরিণত হয়। তাছাড়া চিরন্তন নতুনত্বের নেশা, নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের দুর্নিবার আকর্ষণ এবং সাময়িক ভালোলাগার বশবর্তী হয়েও অনেকে আসক্ত হয়। 

দেশের বিশেষ সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থায় কেউ কেউ নিজের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে না পেরে হতাশায় ভোগে এবং তা থেকে আসক্ত হতে শুরু করে। মাদকাসক্ত লোকসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ীরাও দূর থেকে কাজ করে থাকে। খবই ভয়াবহ। 

আরও পড়ুন :- প্রবন্ধ রচনা :বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা ও তার প্রতিকার 

মাদকাসক্ত হবার প্রাথমিক লক্ষণ ও পরিণতি : 

মাদকাসক্ত হবার পরিণতি খুবই ভয়াবহ। ড্রাগে অভ্যস্ত ব্যক্তিদের আচার আচরণের মধ্যে একটা খাপছাড়া ভাব পরিলক্ষিত হয়। চেহারাও হয়ে যায় রুক্ষ । খিদে না পাওয়া এবং দ্রুত ওজন হ্রাস এ আসক্তির প্রাথমিক লক্ষণ। দেখা যায়, তারা যখন তখন নিজের ঘরে ফিরে আসছে। 

সেই সঙ্গে বইপত্র, খাতা-কলম ও অন্যান্য দ্রব্য হারিয়ে ফেলা, পায়খানা বা বাথরুমে বেশি সময় কাটানো, চোখের তারা ছোট হয়ে যাওয়া, এমন কি চুরির অভ্যাসও দেখা যায়। এ সময় থেকেই অভিভাবকদের সাবধান হওয়া উচিত। চিকিৎসকদের মতে, এ ভালোলাগা থেকেই ধীরে ধীরে স্নায়ু অসাড় হয়ে যায়, কর্মক্ষমতা লোপ পায় এবং ক্রমে ক্রমে মৃত্যুর ঘণ্টাধ্বনি বেজে ওঠে জীবনে ।

মাদকাসক্তি :

বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য সেবন করে নেশাগ্রস্ত হওয়াকেই মাদকাসক্তি বলা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা (WHO)-এর মতে, মাদকাসক্তি হচ্ছে চিকিৎসা গ্রহণযোগ্য নয় এমন দ্রব্য অতিরিক্ত পরিমাণে ক্রমাগত বিক্ষিপ্তভাবে গ্রহণ করা এবং এসব দ্রব্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়া।

মাদকদ্রব্যের কুফল : মাদকদ্রব্যের নানাবিধ কুফল রয়েছে। যথা-

মাদক গ্রহণে নৈতিক অবক্ষয় :

মাদকদ্রব্য গ্রহণের ফলে বহুলোকের বিশেষত তরুণ সমাজের ধ্বংস নেমে আসছে, শুরু হয়েছে এক ভয়াবহ নৈতিক অবক্ষয়ের। এর ফলে তরুণ সমাজ অধঃপতনের নিম্নসীমায় পৌছে যাচ্ছে।

মাদক গ্রহণে সামাজিক কুফল : 

মাদকদ্রব্য গ্রহণের ফলে ব্যক্তিজীবন; পারিবারিক জীবন ও সামাজিক জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। মাদকাসক্তির প্রভাবে যুবক শ্রেণি চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, উচ্ছৃঙ্খলা এবং নানারূপ অত্যাচার-অনাচারের আশ্রয় নেয়। মাদকদ্রব্য ব্যক্তিকে নেশাগ্রস্ত করে তার ব্যক্তিত্বকে নষ্ট করে, সদগুণ ও শুভ চৈতন্যকে নষ্ট করে দেয়। জীবনের প্রতি বেঁচে থাকার অনীহা সৃষ্টি করে। ফলে তারা যা ইচ্ছা তাই করে।

আরও পড়ুন :- বাংলা প্রবন্ধ রচনা : বাংলাদেশে দুর্নীতির কারণ ও প্রতিকার  

মাদক গ্রহণে  দৈহিক ক্ষতি : 

মাদকদ্রব্য দেহের নানারকম ক্ষতি সাধন করে। মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে মানুষ ক্রমান্বয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে; রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়। প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায়। যকৃত ও ফুসফুসের ক্ষতি, যক্ষ্মা, ক্যান্সার, জন্ডিসের মতো প্রাণনাশা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। কিডনি ধীরে ধীরে অকেজো হয়ে পড়ে, রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়, হৃদরোগ হয়। এছাড়া চামড়া খসখসে, চুলকানি, ঘা, ফোঁড়া ইত্যাদি হয়ে অনেকসময় শরীরে পচন ধরে।

মাদক গ্রহণে  মানসিক কুফল : 

মাদকদ্রব্য গ্রহণের ফলে মানসিক ভারসাম্যহীনতার পাশাপাশি দেহের মাংসপেশির কম্পন সৃষ্টি হয়। এভাবে একসময় তারা মানসিকভাবে জড়তাগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তাদের অনুভূতিগুলো ভোঁতা হয়ে যায়। ফলে ভালোমন্দ জ্ঞানহীন হয়ে নৈতিকতাবিরোধী কাজে কোনো দ্বিধাবোধ তাদের থাকে না।

মাদক গ্রহণে  মেধার অপচয় : 

মাদকদ্রব্য গ্রহণের ফলে ব্যক্তির মেধা বিনষ্ট হয়, স্মরণশক্তি কমে যায়। ঘটে এবং স্বাভাবিক জীবনে বেঁচে থাকার সামর্থ্য থাকে না। এদের পক্ষে কোনো গুরুদায়িত্ব পালন করা সম্ভব হয় না। 

মাদক গ্রহণে অন্যান্য কুফল : 

মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ফলে যুব সমাজের মাঝে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। সামাজিকভাবে তারা হেয় প্রতিপন্ন ও অপমানজনক জীবনযাপন করে। মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে গাড়ি চালকরা গাড়ি চালালে নানা দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতার জন্য অবৈধ জমজমাট ব্যবসায় গড়ে ওঠে।

মাদক গ্রহণে ইসলাম:

 ইসলাম কখনো নেশা জাতীয় কোন কিছু সেবন গ্রহণ করেন না। যে ব্যক্তি নেশা করেন সে কখনো আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভ করতে পারেন না। এটা অনেক বড় একটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মাদক সেবন করে আল্লাহর এবাদত করলে সেই এবাদত কখনোই কবুল হয় না।  এজন্য এসব নেশা জাতীয় সেবনে ইসলাম কঠুর নিষেধ রয়েছে। 

মাদক গ্রহণে অর্থনৈতিক ক্ষতি : 

মাদকদ্রব্য ক্রয় করতে টাকার দরকার হয়। কোনো কোনো মাদকদ্রব্য অনেক মূল্য দিয়ে কিনতে হয়। এজন্য বিপুল অর্থের অপচয় হয়। 

মাদকদ্রব্যের ব্যবহার ও কুফল :

বিজ্ঞানের অভাবিত সাফল্য মাদকদ্রব্যের ক্ষেত্রেও বিস্তৃত হয়েছে এবং তৈরি হয়েছে এমন সব মাদকদ্রব্য যা মানুষকে আকৃষ্ট করে খুব সহজেই কিন্তু পরিত্যাগ করা খুবই দুরূহ। বর্তমানে মাদকদ্রব্যের মধ্যে শীর্ষে আছে হেরোইন যার মারাত্মক ক্রিয়া আসক্ত ব্যক্তিকে তিলে তিলে নিঃশেষ করে। হেরোইন গ্রহণের পরিণতি অত্যন্ত করুণ ও ভয়াবহ।

নেশার দ্রব্যগুলো ক্যানসার, যক্ষ্মা, আলসার, পঙ্গুত্বসহ নানা দুরোরোগ্য রোগ সৃষ্টি করে মৃত্যুর কারণ হয়ে থাকে ।মাদকাসক্তি এমন এক ধরনের অপরাধ যা সহজে দূর করা সম্ভব নয় । আজকাল অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানের মাদকাসক্তিতে অতীষ্ঠ হয়ে তাকে পুলিশে সোপর্দ করছেন।

এ থেকে নেশাগ্রস্থদের নৈতিক অবক্ষয়ের করুণ অবস্থাটি উপলব্ধি করা যায়। যে বয়সে একজন সন্তানের বা ছাত্রের সুকুমার বৃত্তিগুলো প্রস্ফুটিত হবার কথা, সঙ্গদোষে মাদকাসক্ত হয়ে সে নির্বাসিত হয় এক ভয়ঙ্কর অপরাধ . জগতে। নেশার শিকার হয়ে সে হারিয়ে ফেলে নিজের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ, আত্মসমর্পণ করে নেশা তথা মৃত্যুর কাছে ।

মাদক গ্রহণ না করার সুফল :

মাদক গ্রহণ না করলে রাতের ঘুম ভালো হয়। আমরা সকলে জানি ধূমপান ক্যান্সারের কারণ। মাদক ছেড়ে দিলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক অংশ কমে যায়। মাদক সেবন করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়। আর যদি মাদক গ্রহণ না করে তাহলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। অর্থ সাশ্রয় হয়।

মাদকাসক্তির প্রতিকার : 

আমাদের তরুণ সমাজই মাদকাসক্তির কবলে আক্রান্ত হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। এ থেকে তাদেরকে রক্ষা করতে না পারলে জাতির জন্য তা অভিশাপ হয়ে থাকবে। এর ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে বিশ্ব জুড়ে তা প্রতিরোধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

মাদকদ্রব্যের উৎপাদন, আমদানি, বিক্রয় ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে বিশ্বের সকল দেশে আইন তৈরি করা হয়েছে। শুধু মাদকাসক্তির কুফলের কথা প্রচার করে বা উপদেশ দিয়ে এ ভয়ংকর ব্যাধির প্রতিকার করা যাবে না। এর হাত থেকে রক্ষার জন্য কঠোর আইন যেমন প্রয়োজন, তেমনি পারিবারিক ও সামাজিকভাবে প্রতিকার করতে হবে।

নেশামত্ত ব্যক্তিদের সমাজে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং চলমান সুস্থ জীবনের সঙ্গে তাদের মেলাতে হবে। এর জন্য মাদকাসক্ত রোগীদের উপযুক্ত চিকিৎসা প্রয়োজন। সে সাথে প্রয়োজন রক্ষণাবেক্ষণ। প্রথম পর্যায়ে এসব রোগীদের সতর্কভাবে রাখতে হবে, দরকার হলে বেঁধে রাখতে হবে, যেন এরা নেশার দুর্নিবার আকর্ষণে ছিটকে বেরিয়ে আসতে না পারে। 

নেশা ছাড়ার সময় এরা নেশার বস্তুর জন্য উন্মাদপ্রায় হয়ে যায়। তারপর এদের দিতে হবে মরফিন ইনজেকশন যা ব্যথা কমায় ও সুখ আনে। উপযুক্ত ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে যেন শারীরিক ক্রিয়াগুলো যথাযথ সম্পন্ন হয়। আত্মবিশ্লেষণের জন্য নির্জন বাসও এদের কখনো কখনো দরকার । তখন সাইকোলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট বা মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন। এরপর রোগীদের জন্য প্রয়োজন পুনর্বাসন ।

উপসংহার :

আমাদের যুব সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা এবং আজকের ও আগামীদিনের সুস্থ, সুন্দর ও সুখকর সমাজের জন্য মাদকদ্রব্যের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে। আর এর জন্য দরকার পারিবারিক, সামাজিক ও আস্ত র্জাতিক পদক্ষেপ । সবাইকে মুক্ত কণ্ঠে বলতে হবে- “মাদক নয়, সুস্থ জীবন চাই, শিশুদের জন্য সুস্থ সুন্দর ভবিষ্যৎ চাই।'

Post a Comment

0 Comments