উপস্থাপনা :
দু'প্রকৃতির মানুষ নিস্বার্থ ভাবে মানুষের সফলতায় আনন্দিত হয় । এক পিতা, দুই,শিক্ষক । পিতা অকৃপণ হাতে তার কষ্টের উপার্জিত ধন সম্পদ পুত্রের হাতে তুলে দেন। শিক্ষকের হাজারো চেষ্টা সাধনায় অর্জিত জ্ঞান অকৃপণ হাতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। আর সন্তানের পিতা-মাতার পরে যার সাথে পবিত্র সম্পর্ক হয় সে হলো শিক্ষক ।
ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের গুরুত্ব :
ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে একটি মধুর সম্পর্ক বিদ্যমান। যেমন-অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘনকালো রাত্রিতে ধ্রুবতারা যেমন পথচারীকে পথের সন্ধান দেয়, তেমনি অজ্ঞতার গহীন অন্ধকারেও একজন শিক্ষক জ্ঞানের মশাল হাতে এগিয়ে আসেন। তাঁর সেই প্রদীপ্ত জ্ঞানের মশাল জ্বলে ওঠে তা হলো স্বার্থহীন মধুর সম্পর্ক।
ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে মধুর সম্পর্ক না থাকলে জ্ঞানের রাজ্যের সম্প্রসারণ ঘটবে না, মানুষ অজ্ঞতার অন্ধকারে থেকে যাবে। কখনো বন্ধু আবার কখনো অভিভাবক । তাই প্রাচীনকাল থেকেই ছাত্র শিক্ষকের মধ্যে একটি মধুর সম্পর্ক গড়ে ওঠেছে। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) ঘোষণা করেন, “আমি তোমাদের মাঝে শিক্ষক হিসেবে এসেছি।”
ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের অবনতি :
আধুনিক যান্ত্রিক সভ্যতার যুগে বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। বর্তমান সমাজে শিক্ষকতার পেশাকে অনেক ক্ষেত্রে ছোট মনে করা হয়। তাই শিক্ষকদের একটি অংশ আর্থিক সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য গৃহ শিক্ষকতা করতে যেয়ে তাদের মর্যাদাকে অনেকখানি ক্ষুণ্ণ করেছেন।
আরও পড়ুন :- ছাত্র জীবন - বাংলা রচনা [ Class - 6, 7, 8 ,9 ,10]
শিক্ষকদের কর্তব্য :
যুগ যুগ ধরেই শিক্ষক মহোদয়গণ ছাত্রদের মধ্যে জ্ঞান বিতরণ করে আসছেন। ঘুনে ধরা এ সমাজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে শিক্ষকরাই পারেন একটি নতুন সমাজ গড়তে। তাঁরাই হলো জাতির বিবেক, মানুষ গড়ার শ্রেষ্ঠ কারিগর। তাঁরা তাঁদের অসাধারণ পান্ডিত্য, চারিত্রিক মাধুর্য ও স্নেহময় মধুর ব্যবহারের দ্বারা ছাত্রদের মন জয় করতে পারেন এবং তাঁদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারেন। তাই ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের যে অবনতি ঘটেছে তা পুনরুদ্ধার করার জন্য একমাত্র শিক্ষকরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন ।
ছাত্রদের কর্তব্য :
শিক্ষকের প্রতি ছাত্রদের যথেষ্ট কর্তব্য রয়েছে। শিক্ষকের মনে আঘাত দিয়ে কোনো ছাত্র জীবনে উন্নতি করতে পারেনি। শিক্ষকের আশীর্বাদ একজন ছাত্রের জীবনের পরম পাথেয়। কাজেই শিক্ষককে যথাযথ সম্মান করা প্রত্যেক ছাত্রের অবশ্য কর্তব্য।
উপসংহার :
ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মাঝে যদি কখনো কোনো অবাঞ্চিত কিছু এসে যায় তাহলে জাতির ভাগ্যাকাশে মহা দুর্যোগের ঘনঘটা নেমে আসে। কাজেই ছাত্র-শিক্ষকের মধুর ও পবিত্র সম্পর্ককে অটুট রাখার জন্য ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকসহ সবাইকে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা