২১শে ফেব্রুয়ারি/আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা- ১০০,২০০, ৩০০ শব্দ

একুশে ফেব্রুয়ারি /আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা - ১০০ শব্দ

ভূমিকা

একুশে ফেব্রুয়ারি অমর শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে জাতি শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে। দিনটি ভাষা প্রেমের এক অনন্য দৃষ্টান্তের দিন। 

একুশে ফেব্রুয়ারির ঘটনা  

ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল এড়াবার জন্য পাকিস্তানি শাসক ১৪৪ ধারা জারি করে। এজন্য পুলিশ বাহিনী ও সেনাবাহিনী তলবা করা হয়। কিন্তু ছাত্র-জনতা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাস্তায় নেমে পড়ে। 

মিছিল এসে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে সমবেত হয়। পুলিশ তখন গাড়ি থেকে মিছিল লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। গুলির আঘাতে শহীদ হয়েছিলেন সালাম, বরকত, রফিক,জব্বার, আউয়াল, আব্দুল্লাহ সহ আরও অনেক।  

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেন। তারপর থেকে বিশ্বব্যাপী ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। ২১শে ফেব্রুয়ারিতে পৃথিবীর সব মানুষই স্মরণ করে বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের। 

আরও পড়ুন :-  বিজয় দিবস - রচনা ২০০ শব্দ [ class 3, 4, 5 ]

উপসংহার

এ দিনে আমরা বাংলা ভাষাকে আরো অনেক বেশি ভালোবাসতে শিখি। আমরা কোনদিন ভাষা শহীদদের অবদান ভুলব না। 

একুশে ফেব্রুয়ারি /আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা - ২০০ শব্দ 

ভূমিকা  

একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে একটি স্মরণীয় দিন। ১৯৫২ সালের এদিন মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্যে ছাত্রজনতা প্রাণ দিয়েছিল।

মাতৃভাষার গুরুত্ব  

আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে এ ভাষার ব্যবহার চলে আসছে। এ ভাষায় আমরা সহজেই মনের ভাব প্রকাশ করি । ফলে মাতৃভাষা আমাদের কাছে অত্যন্ত মর্যাদপূর্ণ ভাষা ।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি  

১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাবটি জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কোর ৩১ তম অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। বিশ্বের ২৮টি দেশ এ সনদে স্বাক্ষর করে। বর্তমানে একুশে ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বের ১৮৮টি দেশ অত্যন্ত আনন্দের সাথে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করছে। বাঙালি জাতির জন্য একুশে ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি প্রাপ্তি এক অভাবনীয় অর্জন ।

আরও পড়ুন :-  স্বাধীনতা দিবস রচনা ১০০ শব্দ , ২০০ শব্দ এবং ৫০০ শব্দ

তাৎপর্য  

বাংলাদেশের সমস্ত আন্দোলনের মূল চেতনা একুশে ফেব্রুয়ারি। ভাষা আন্দোলনের ফলেই বাঙালি উপলব্ধি করেছিল বাঙালি জাতীয়তাবোধ। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে।

আমার করণীয়  

একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি বাঙালি জাতির দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল। এ দিবসে আমার করণীয় হলো- ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো প্রভাতফেরিতে অংশ নেওয়া, শহিদ দিবসের আলোচনায় অংশগ্রহণ করা, একুশের চেতনা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া ।

উপসংহার  

প্রতিবছর আমরা যথাযোগ্য মর্যাদায় একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন করি। সারাবিশ্ব মাতৃভাষার প্রতি এই অসামান্য ত্যাগ ও ভালোবাসা দেখে সত্যিই বিস্মিত হয়।

একুশে ফেব্রুয়ারি /আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা - ৩০০ শব্দ

ভূমিকা  

আমরা বাঙালী। বাংলা আমাদের রাষ্ট্রভাষা। পূর্ব পাকিস্তানের অধিবাসী ছিল বাঙালী এবং বাঙালীরা ছিল সমগ্র পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ। সংখ্যা গরিষ্ঠ থাকা সত্ত্বেও বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী রাজি ছিল না। তাই মাতৃভাষার দাবিতে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল এ দেশের তরুণ ছাত্র সমাজ। দিনটি ছিল ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি।

ঐতিহাসিক ঘটনা  

১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে। গঠিত হয় দুইটি দেশ-ভারত ও পাকিস্তান। বর্তমান বাংলাদেশ যুক্ত হয় পাকিস্তানের সাথে। তখন এদেশবাসী মনে করেছিল এবার তারা নিজস্ব সাহিত্য, কৃষ্টি আর সংস্কৃতির প্রসার ঘটাতে পারবে। কিন্তু বাঙালীর ওপর আঘাত আসে ১৯৪৮ সালে। পাকিস্তানের জনক কায়েদে আযম মুহম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে ঘোষণা করেন “উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।” 

এ ঘোষণার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথা ছাত্রদের মধ্য থেকে এর প্রতিবাদ ওঠে। ক্রমে সে প্রতিবাদ রূপ নেয় আন্দোলনে। পাকিস্তানী শাসকেরা ছাত্রদের দাবি না মেনে তাদের ওপর চালায় জুলুম, অত্যাচার। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি তারিখে ছাত্রদের ওপর গুলি চালায়। বুকের তাজা রক্তে লাল হয়ে যায় ঢাকার রাজপথ। 

আরও পড়ুন :-  একুশের চেতনা বা জাতীয় জীবনে একুশের চেতনা - বাংলা রচনা 

শহীদ হয় সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ নাম না জানা অনেক ছাত্র জনতা। শহীদদের স্মরণে গড়ে তোলা হয় শহীদ মিনার। পরবর্তীতে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিলেও পাকিস্তানী শাসকরা নানাভাবে বাঙালীদের হয়রানী করতে থাকে। রাষ্ট্রীয় কাজে বাংলা ভাষা ব্যবহারের পরিবর্তে উর্দু এবং ইংরেজিকেই বেশি প্রাধান্য দিতে থাকে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস  

পৃথিবীর মানুষের কাছে আজ ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক ‘মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে স্বীকৃত। ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কোর ৩০তম সাধারণ সম্মেলনে এ স্বীকৃতি দেয়া হয়। এখন থেকে ইউনেস্কোর সদস্যভুক্ত পৃথিবীর সব ভাষাভাষী মানুষ এ দিনটি পালন করবে। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয়।

উপসংহার  

বাংলা ভাষাই পৃথিবীর একমাত্র ভাষা যা এসেছে অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে। আজ এ ভাষার শ্লোগান হোক বাংলা ভাষায় লিখি, বাংলা ভাষায় পড়ি এবং কথা বলি প্রাণের ভাষা বাংলায়। আমরা আজ একথা গর্বের সাথে বলতে পারি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এ ভাষা ‘বাংলা’ ততদিন থাকবে, যতদিন পৃথিবীর মানচিত্র থাকবে।

Post a Comment

1 Comments

Bottom Post Ad