শ্রমের মর্যাদা রচনা - ১
সূচনা
পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি । শ্রম ব্যতীত সুখের আশা করা যায় না।
শ্রমের শ্রেণিবিভাগ
শ্রম দু'প্রকার। যথা- কায়িক শ্রম এবং মানসিক শ্রম। মানুষ যখন বাহ্যিক বল প্রয়োগের মাধ্যমে পরিশ্রম করে তখন তাকে কায়িক শ্রম বলে। আবার বিভিন্ন চিন্তাভাবনার মাধ্যমে যে পরিশ্রম হয় তাকে মানসিক শ্রম বলে।
শ্রমের প্রয়োজনীয়তা
মানবজীবন সংগ্রামময়। কেবল শ্রম দ্বারাই মানুষ তার জীবনের দুঃখ-কষ্ট, অভাব-দারিদ্র্যকে জয় করার ক্ষমতা অর্জন করতে পারে।
ছাত্রজীবনে শ্রম
আমাদের ছাত্রজীবনের শ্রমের গুরুত্ব কম নয়। নিয়মিত অনুশীলন ও জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে একজন ছাত্রের মানসিক উৎকর্ষ লাভ হয় ।
আরও পড়ুন পরিবেশ দূষণ - রচনা : Class 3, 4, 5
দেশে দেশে শ্রম
এ পৃথিবীতে যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী সে জাতি তত উন্নত। কায়িক পরিশ্রম দ্বারা মানুষ জীবজগতে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছে। আর মানসিক পরিশ্রম দ্বারা জ্ঞান-বিজ্ঞানে অত্যাশ্চর্য সাফল্য লাভ করতে সক্ষম হয়েছে।
শ্রমের মর্যাদা দানে দৃষ্টান্ত
অনেক বরেণ্য ব্যক্তি শ্রমের মাধ্যমে পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার শৈশবে বাদাম বিক্রি করতেন। কাজী নজরুল ইসলাম দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও বড় কবি হয়েছিলেন।
উপসংহার
জীবনের সর্বক্ষেত্রে শ্রমের গুরুত্ব অপরিসীম। পরিশ্রম না করে পরনির্ভরশীল হয়ে বেঁচে থাকায় কোনো মর্যাদা নেই। সত্যিকার অর্থে পরিশ্রমেই জীবনের প্রকৃত আনন্দ ।
শ্রমের মর্যাদা রচনা - ২
সূচনা
এই বিশ্বসংসার শ্রমজীবী মানুষের শ্রমের ওপর নির্ভর করেই বেঁচে আছে। লাখো কোটি মানুষের যুগ-যুগান্তরের শ্রমের ওপরই রচিত হয়েছে সভ্যতার বিশাল সৌধ। সুতরাং শ্রমের মর্যাদা শ্রমশীলতারই যোগ্য পুরস্কার ।
শারীরিক পরিশ্রম
পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। পরিশ্রম ছাড়া মানবসভ্যতা এক পা-ও এগিয়ে আসেনি। অথচ এ শ্রমের যথাযোগ্য মর্যাদা দিতে অনেকেই কুণ্ঠিত। অনেকেই দৈহিক শ্রমের কাজকে সম্মানহানিকর বলে মনে করে।
বিশেষ করে আমাদের এদেশে এ ভ্রান্ত মূল্যবোধটি বেশ শক্তভাবে শিকড় গেড়েছে। আসলে ছোট কাজ কিংবা বড় কাজ বলে কিছু নেই। ভিক্ষাবৃত্তি এবং নীতিহীন কাজ ব্যতীত সব কাজই মর্যাদার দাবিদার। সুতরাং কোনোপ্রকারের শ্রমকেই সম্মানের দিক থেকে খাটো করে দেখা যায় না ।
সামাজিক শ্রমবিভাগ
প্রাচীন সমাজজীবনে শ্রমবিভাজনের হয়তো প্রয়োজন ছিল, কিন্তু আজকের এ যুগে তা শুধু অচলই নয় অপমানকরও বটে। আধুনিক শিল্পসমৃদ্ধ সমাজব্যবস্থা, সনাতন সামাজিক ধারণা ও মূল্যবোধকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই উন্নত বিশ্বে শ্রমের মর্যাদা সমাজব্যবস্থায় অঙ্গীভূত হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন গরু - রচনা [ Class 1, 2, 3, 4, 5, 6 ]
শ্রমের মর্যাদা
বিশ্বের সব মহামানবই শ্রমকে উপযুক্ত মর্যাদা দিয়েছেন। তাঁরা নিজেরাও তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনে শ্রমসাধ্য কাজ করেছেন। মহানবি (স)-এর জীবনের প্রতি লক্ষ করলেও আমরা দেখব, তিনি নিজে কঠোর পরিশ্রম করেছেন এবং কোনো কাজকেই অমর্যাদাকর বলে মনে করেননি। “শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই তার প্রাপ্য পরিশোধ কর”- তাঁর এ মহান বাণী তো শ্রমের মর্যাদারই অকুণ্ঠ স্বীকৃতি ।
পরিশ্রম উন্নতির চাবিকাঠি
ব্যক্তিজীবন কিংবা জাতীয় জীবনের সব উন্নতির মূলেই রয়েছে শ্রমশক্তি। পৃথিবীতে যে জাতি যত পরিশ্রমী, সে জাতি তত উন্নত। সভ্যতা, সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের দিক থেকে পাশ্চাত্য দেশসমূহ যে এতটা উন্নতি সাধন করেছে, তার পেছনেও রয়েছে শ্রমের অতুলনীয় অবদান। মনে রাখতে হবে, মিথ্যা আভিজাত্য শেষ পর্যন্ত কোনো ফলই বয়ে আনে না। অপরদিকে শ্রমশীলতা দেরিতে হলেও মানুষকে পুরস্কৃত করে।
উপসংহার
অসংখ্য সমস্যায় জর্জরিত এদেশকে গড়ে তোলার জন্য এখন প্রয়োজন নিরলস পরিশ্রম। একটি সুষ্ঠু ও গতিশীল সমাজ সৃষ্টি করতে চাইলে শ্রমকে মূল্য দিতে হবে, শ্রমে কোনো হীনতা নেই এবং শ্রমশীল মানুষের হাতেই রয়েছে আগামী দিনের নেতৃত্ব।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা